সেন্ট লুসিয়া কিংস বনাম গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স (ম্যাচ ১৩) – হাইলাইটস
সিপিএল ২০২২ এর ১৩তম ম্যাচে গ্রস আইলেটের ড্যারেন স্যামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হেনরিখ ক্লাসেন এর বিধ্বংসী ইনিংসের সৌজন্যে সেন্ট লুসিয়া কিংস এর বিপক্ষে ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের এক দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। ব্যাট হাতে ৪৬ বলে অপরাজিত ৬১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স হেনরিখ ক্লাসেন।
ম্যাচের শুরুতে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স এর অধিনায়ক শিমরন হেটমায়ার টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেন্ট লুসিয়া কিংসকে ব্যাটিং করতে পাঠান। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রানের লড়াকু স্কোর সংগ্রহ করে সেন্ট লুসিয়া কিংস।
ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে সেন্ট লুসিয়া কিংসের দুই ওপেনার জনসন চার্লস এবং ফাফ ডু প্লেসিস। দুজন মিলে ৪৮ বলে ৯৩ রানের উদ্বোদনী জুটি গড়ে তোলেন। তাদের দুজনের সৌজন্যে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৭৭ রান তুলে নেয় সেন্ট লুসিয়া কিংস। তবে এরপর গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের বোলারদের অসাধারণ বোলিং তোপে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে সেন্ট লুসিয়া কিংস।
৪ ছক্কায়, ২০ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফিরেন দলপতি ডু প্লেসিস। নিরোশান ডিকওয়েলা এবং মার্ক দেয়াল মাত্র এক রান করেই আউট হয়ে যান। ৯৩ রানে শূন্য উইকেট থেকে সেন্ট লুসিয়া কিংসের স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ৯৯/৩। জনসন চার্লস উকেটের এক প্রান্তে দলকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন।
এর আগে ২৭ বলে নিজের অর্ধ-শতক তুলে নেওয়া চার্লস শেষ পর্যন্ত ৮৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। তাঁর ৫৯ বলের এই ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ৫ ছক্কার মার। তাঁর বিদায়ের পর সেন্ট লুসিয়া কিংসের রানের গতি আরও মন্থর হয়ে পড়ে। কেননা এরপর টিম ডেভিড ব্যতীত অন্য আর কোন ব্যাটারই দুই অঙ্কের স্কোর স্পর্শ করতে পারেননি।
শেষ দিকে টিম ডেভিডের ১৭ বলে ২৩ রানের সৌজন্যে ১৬১ রানের স্কোর তুলতে পারে সেন্ট লুসিয়া কিংস। গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স এর হয়ে তাবরিজ শামসি এবং কিমো পল সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া ইমরান তাহির, গুদকেশ মতি এবং ওডিয়ান স্মিথ ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
১৬২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। দলীয় ৩৭ রানে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। চন্দ্রপল হেমরাজ ১৫ বলে ২৩ রান করেন। অপরদিকে দুই বলে পর শাই হোপ ১২ বলে ১১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন। ফলে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান তুলতে সমর্থ হয় গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স।
পাওয়ার প্লে’র পরই মাত্র ৬ রান করে আউট হয়ে যান কলিন ইনগ্রাম। ৪৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সকে এরপর পথ দেখান উইকেট রক্ষক ব্যাটার হেনরিখ ক্লাসেন এবং অধিনায়ক হেটমায়ার। এই দুজন ৪৫ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন। ২১ বলে ৩২ রান করে হেটমায়ার সাজঘরে ফিরে গেলেও ক্লাসেন দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
২ চার ও ৩ ছক্কায়, ৪৬ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেন ক্লাসেন। অপরদিকে কিমো পল ১০ বলে অপরাজিত ২১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। সেন্ট লুসিয়া কিংসের পক্ষে জেভার রয়্যাল সর্বাধিক ২টি এবং কেসরিক উইলিয়ামস ও রোস্টন চেজ ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
এই ম্যাচ জয়ী হয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৪র্থ স্থানে উঠে এসেছে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। অপরদিকে এই ম্যাচে পরাজিত হয়ে সেন্ট লুসিয়া কিংস এখন পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে অবস্থান করছে।
সেন্ট লুসিয়া কিংস বনাম গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স এর স্কোরবোর্ড
সেন্ট লুসিয়া কিংস – ১৬১/৭ (২০.০)
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স – ১৬২/৪ (১৮.২)
ফলাফল – গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স ৬ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – হেনরিখ ক্লাসেন
সেন্ট লুসিয়া কিংস বনাম গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স ম্যাচের একাদশ
সেন্ট লুসিয়া কিংস | ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেট রক্ষক), রোস্টন চেজ, জনসন চার্লস, মার্ক দেয়াল, ডেভিড ভিয়া, টিম ডেভিড, আলজারি জোসেফ, কেসরিক উইলিয়ামস, ম্যাথিউ ফোর্ড এবং জেভার রয়্যাল। |
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স | শিমরন হেটমায়ার (অধিনায়ক), হেনরিখ ক্লাসেন (উইকেট রক্ষক), চন্দ্রপল হেমরাজ, কলিন ইনগ্রাম, রোমারিও শেফার্ড, শাই হোপ, ওডিয়ান স্মিথ, গুদকেশ মতি, কিমো পল, ইমরান তাহির এবং তাবরিজ শামসি। |