BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

২০১১ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে জেনে নিন

#image_title

Team India. (Photo Source: Twitter)

ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ মিলে ওডিআই বিশ্বকাপ ২০১১ আয়োজন করেছিল। এই বিশ্বকাপে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ভারত ট্রফি জিতেছিল। এটি ছিল ভারতের দ্বিতীয় ওডিআই বিশ্বকাপ ট্রফি।

২০০৭ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ২০১১ সালের বিশ্বকাপে দারুণভাবে কামব্যাক করেছিল ভারত। এই বিশ্বকাপে ভারত মাত্র একটি ম্যাচে হারের মুখোমুখি হয়েছিল। ফাইনালে ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিল। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর এই বিশ্বকাপেও রানার্স-আপ হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

১. ভারত বনাম বাংলাদেশ (ম্যাচ ১)

IND vs BAN. (Photo Source: Twitter)

ওডিআই বিশ্বকাপ ২০১১-এর উদ্বোধনী ম্যাচে একটি দুর্দান্ত জয় পেয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৭০ রান তুলেছিল ভারত। বীরেন্দ্র সেহওয়াগ ১৪০ বলে ১৭৫ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন। বিরাট কোহলিও এই ম্যাচে শতরান পেয়েছিলেন। তিনি ৮৩ বলে ১০০ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

বাংলাদেশ রান তাড়া করতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৩ রানে পৌঁছতে পেরেছিল। তামিম ইকবাল দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন। তিনি ৮৬ বলে ৭০ রানের একটি সুন্দর ইনিংস খেলেছিলেন। মুনাফ প্যাটেল ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৪টি উইকেট শিকার করেছিলেন। এই ম্যাচটিতে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন বীরেন্দ্র সেহওয়াগ।

২. ভারত বনাম ইংল্যান্ড (ম্যাচ ১১)

IND vs ENG. (Photo Source: Twitter)

এই ম্যাচটি টাই হয়েছিল। ভারত ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। সচিন তেন্ডুলকার ১১৫ বলে ১২০ রানের একটি দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন। গৌতম গম্ভীর এবং যুবরাজ সিং যথাক্রমে ৬১ বলে ৫১ রান এবং ৫০ বলে ৫৮ রান করেছিলেন। টিম ব্রেসনান খুব ভালো বোলিং পারফরম্যান্সের প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নিয়েছিলেন।

ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানে পৌঁছেছিল। অ্যান্ড্রু স্ট্রস ১৪৫ বলে ১৫৮ রানের একটি দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেছিলেন এবং ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন। এই ম্যাচে ভারতের সবথেকে সফল বোলার ছিলেন জাহির খান। তিনি ১০ ওভারে ৬৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছিলেন।

৩. ভারত বনাম আয়ারল্যান্ড (ম্যাচ ২২)

IND vs IRE. (Photo Source: Twitter)

এই ম্যাচটিতে ভারতীয় দল ৫ উইকেটে জয় পেয়েছিল। আয়ারল্যান্ড প্ৰথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৭.৫ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। উইলিয়াম পর্টারফিল্ড ১০৪ বলে ৭৫ রান করেছিলেন। যুবরাজ সিং এই ম্যাচে দারুণ অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন। তিনি বল হাতে ১০ ওভারে মাত্র ৩১ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নিয়েছিলেন এবং ব্যাট হাতে ৭৫ বলে অপরাজিত ৫০ রান করেছিলেন।

ভারত ২৪ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ২১০ রানে পৌঁছে ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল। ট্রেন্ট জনস্টন এবং জর্জ ডকরেল ২টি করে উইকেট নিয়েছিলেন। এই ম্যাচটিতে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন যুবরাজ সিং।

৪. ভারত বনাম নেদারল্যান্ডস (ম্যাচ ২৫)

IND vs NED. (Photo Source: Twitter)

এই ম্যাচটিতে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন দল খুব সহজেই জয় পেয়েছিল। নেদারল্যান্ডসের ইনিংস মাত্র ১৮৯ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল। জাহির খান ৬.৪ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট শিকার করেছিলেন। পীযূষ চাওলা এবং যুবরাজ সিং ২টি করে উইকেট পেয়েছিলেন।

ভারত ৩৬.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯১ রান করেছিল এবং ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল। যুবরাজ সিং ৭৩ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এই ম্যাচটিতেও তিনি ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। এই ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের সবথেকে সফল বোলার ছিলেন পিটার সেলার। তিনি ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছিলেন।

৫. ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (ম্যাচ ২৯)

IND vs SA. (Photo Source: Twitter)

এই ম্যাচটিতে এসে ভারতীয় দল আর নিজেদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারেনি। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন দল প্ৰথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ২৯৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। সচিন তেন্ডুলকার দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন। তিনি ১০১ বলে ১১১ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন। ডেল স্টেইন দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি ৯.৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ৫টি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।

২ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ৩০০ রানে পৌঁছে ম্যাচটি নিজেদের নামে করে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জ্যাক ক্যালিস ৮৮ বলে ৬৯ রানের একটি সুন্দর ইনিংস খেলেছিলেন। এবি ডি ভিলিয়ার্স ৩৯ বলে ৫২ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন। হরভজন সিং ৩টি উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই ম্যাচটিতে ডেল স্টেইনকে ম্যাচসেরার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

৬. ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ম্যাচ ৪২)

IND vs WI. (Photo Source: Twitter)

এই ম্যাচটি খুব সহজেই জিতে নিয়েছিল ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন দল ৪৯.১ ওভারে ২৬৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। যুবরাজ সিং ১২৩ বলে ১১৩ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন। রবি রামপল ১০ ওভারে ৫১ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট নিয়েছিলেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ১৮৮ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং ভারত ৮০ রানে ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল। ডেভন স্মিথ ৯৭ বলে ৮১ রানের একটি সুন্দর ইনিংস খেলেছিলেন, তবে দলের জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। জাহির খান ৩টি উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং যুবরাজ সিং ২টি করে উইকেট পেয়েছিলেন। যুবরাজ এই ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন।

৭. ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া (দ্বিতীয় কোয়ার্টার-ফাইনাল)

IND vs AUS. (Photo Source: Twitter)

টানা ৩টি বিশ্বকাপ জেতার পর ভারতের কাছে পরাজিত হয়ে এই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। প্ৰথমে ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। রিকি পন্টিং ১১৮ বলে ১০৪ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাহির খান এবং যুবরাজ সিং ২টি করে উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

ভারত ৪৭.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২৬১ রানে পৌঁছে ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল। সচিন তেন্ডুলকার, গৌতম গম্ভীর এবং যুবরাজ সিং যথাক্রমে ৬৮ বলে ৫৩ রান, ৬৪ বলে ৫০ রান এবং ৬৫ বলে অপরাজিত ৫৭ রান করেছিলেন। এই ম্যাচটিতেও যুবরাজকে ম্যাচসেরার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

৮. ভারত বনাম পাকিস্তান (দ্বিতীয় সেমিফাইনাল)

IND vs PAK. (Photo Source: Twitter)

সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ২৯ রানে পরাজিত করেছিল ভারত। প্ৰথমে ব্যাটিং করতে নেমে স্কোরবোর্ডে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬০ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিল ভারতীয় দল। সচিন তেন্ডুলকার ১১৫ বলে ৮৫ রানের একটি সুন্দর ইনিংস খেলেছিলেন। ওয়াহাব রিয়াজ খুব ভালো বোলিং পারফরম্যান্সের প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি ১০ ওভারে ৪৬ রানের বিনিময়ে ৫টি উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

পাকিস্তান ৪৯.৫ ওভারে ১০ উইকেটে ২৩১ রান করতে পেরেছিল। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন মিসবাহ-উল-হক। তিনি ৭৬ বলে ৫৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন। জাহির খান, মুনাফ প্যাটেল, আশিস নেহেরা, হরভজন সিং এবং যুবরাজ সিং প্রত্যেকেই ২টি করে উইকেট পেয়েছিলেন। এই ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন সচিন তেন্ডুলকার।

৯. ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা (ফাইনাল)

IND vs SL. (Photo Source: Twitter)

ফাইনালে মহেন্দ্র সিং ধোনি ছয় মেরে ভারতকে জিতিয়েছিলেন। সেই ছয়টি ভারতীয় দলের সমর্থকদের কাছে সবসময় বিশেষ হয়ে থাকবে। শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭৪ রান করেছিল। মাহেলা জয়বর্ধনে ৮৮ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের একটি দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেছিলেন। জাহির খান এবং যুবরাজ সিং ২টি করে উইকেট শিকার করেছিলেন।

ভারত বীরেন্দ্র সেহওয়াগ এবং সচিন তেন্ডুলকারের উইকেট ৩১ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলেছিল। এরপর গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহলি মিলে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। কোহলি আউট হওয়ার পর গম্ভীর এবং এমএস ধোনি মিলে ১০৯ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ করেছিলেন। গম্ভীর ১২২ বলে ৯৭ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। ধোনি ৭৯ বলে ৯১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ভারত ১০ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে ২৭৭ রানে পৌঁছে ম্যাচটি জিতে নিয়েছিল। এই ম্যাচে এমএস ধোনিকে ম্যাচসেরার পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

The post ২০১১ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে জেনে নিন appeared first on CricTracker Bengali.

Exit mobile version