Jason Roy and Litton Das. (Image Source: IPL/BCCI)
ওপেনার বদলালেও কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)-এর ভাগ্য পরিবর্তন হল না। ২০শে এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালস (ডিসি)-এর বিরুদ্ধে চার উইকেটে হেরে কেকেআর টানা তিন হারের সম্মুখীন হল। ডিসির বিরুদ্ধে কেকেআরের হয়ে আইপিএল ২০২৩-এ প্রথমবারের জন্য খেলতে নেমেছিলেন জেসন রয় ও লিটন দাস। ওপেনিং জুটি হিসেবে রয় ও লিটনের উপর ভরসা করা হলেও, তাঁদের মধ্যে পার্টনারশিপ হয়েছিল মাত্র ১৫ রানের।
মরসুমের শুরু থেকেই ওপেনিং সমস্যা নিয়ে ভুগতে হচ্ছে কেকেআরকে। আইপিএল ২০২৩-এর প্রথম ম্যাচে রহমানউল্লাহ্ গুরবাজ ও মনদীপ সিংকে ওপেনার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। পরের ম্যাচে গুরবাজের সঙ্গী হিসেবে এসেছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তৃতীয় ম্যাচে আবার গুরবাজের ওপেনিং সঙ্গী পরিবর্তিত হয়েছিল এবং সেই ম্যাচে ওপেনার হিসেবে দেখা গেল নারায়ণ জগদীসানকে।
জগদীসান ও গুরবাজের জুটিকে পরের দুটি ম্যাচে অপরিবর্তিত রাখার পরে ডিসির বিরুদ্ধে রয় ও লিটনের জুটিকে নামিয়ে ওপেনিং সমস্যা কাটাতে চেয়েছিল চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের নেতৃত্বাধীন দল। তবে রয় ও লিটন সমাধান খুঁজে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ছয় ইনিংসের পরে কেকেআরের সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ হয়েছে ২৬ রানের, যা এসেছিল ইডেন গার্ডেন্সে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে।
এবার কি তবে আরও একটি নতুন ওপেনিং জুটি খেলাবে কেকেআর?
ছয় ম্যাচে কেকেআরের ওপেনিং জুটির সংগ্রহে সামগ্রিকভাবে মাত্র ৮৫ রান। ওপেনিং জুটি ১৪.১৭ গড়ে রান করার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কেকেআর ম্যানেজমেন্ট উদ্বিগ্ন হবে। দশ দলের মধ্যে, এখনও অবধি, কেকেআরের ওপেনিং জুটির সংগ্রহে সবচেয়ে কম রান ও গড়। ১০৪ রান করে দিল্লি ক্যাপিটালসের ওপেনিং জুটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবদান রেখেছে।
ওপেনারদের দায়িত্ব থাকে একটি ইনিংসের ভিত গড়ে দেওয়ার, যে ভিতের উপর নির্ভর করে দলের মিডল অর্ডার ও ফিনিশাররা একটি বড় স্কোর খাড়া করে। তবে কেকেআর তাদের ওপেনারদের থেকে উল্লেখযোগ্য অবদান না পাওয়ায় দলকে ব্যর্থতার মুখে পড়তে হচ্ছে।
কেকেআর চলমান আইপিএলে চারটি ইনিংসে ১৮০+ স্কোর করেছে। কিন্তু সেই স্কোরগুলি করা সম্ভব হয়েছে একজন বা দুজন ব্যাটার বড় ইনিংস খেলায়। কখনও ভেঙ্কটেশ আইয়ার সেঞ্চুরি করেছেন, বা কখনও নীতীশ রানা ৭৫ রানের ইনিংস খেলেছেন। এ ছাড়া রিঙ্কু সিং ফিনিশার হিসেবে ঝোড়ো ইনিংস খেলে দেওয়ায় কেকেআর ১৮০ রানের গন্ডী টপকাতে পেরেছে। ব্যাটিং লাইন-আপের সামগ্রিক অবদান কোনো ম্যাচেই দেখা যায়নি।
একক কৃতিত্বে বড় ইনিংস যে ম্যাচে খেলা সম্ভব হয়নি, সেই ম্যাচে প্রত্যাশিতভাবেই মুখ থুবড়ে পড়েছে কেকেআরের ব্যাটিং, যা দেখা গেল দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে। ১২৭ রানে অল আউট হওয়ার পরে স্পিনারদের সৌজন্যে কেকেআর ম্যাচটিকে শেষ ওভার অবধি টেনে নিয়ে গেলেও জিততে পারেনি। এখানেই প্রশ্ন ওঠে যে ওপেনাররা যদি আরও বেশীক্ষণ সময় নিয়ে মজবুত পার্টনারশিপ গড়তেন, তবে কি ম্যাচ জেতার মতো একটি স্কোর খাড়া করা যেত না!
ছয় ম্যাচে ছয়জন ওপেনার এবং চারটি ভিন্ন ওপেনিং জুটি খেলানোর পরেও কেকেআর উপযুক্ত ওপেনিং জুটির সন্ধানে রয়েছে। এই সমস্যার সমাধান না করতে পারলে আইপিএল ২০২৩-এর বাকী ম্যাচগুলিতে কেকেআরের পারফর্ম্যান্স উজ্জ্বল হওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
The post আইপিএল ২০২৩-এ কেকেআরের ওপেনিং জুটি সবার পিছনে, রয়-লিটন জুটির ব্যর্থতার পরে কে দেবেন সমাধান appeared first on CricTracker Bengali.