গোটা একটি জেনারেশনকে ফুটবলে বুঁদ করে রাখার মহা কারিগর লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিছু সময় পরে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নেইমার জুনিয়রও। জাদুকরী ফুটবলের প্রদর্শনীতে যে মানুষগুলো কত সুন্দর রাত এনে দেয় দর্শকদের , তাদেরও আছে না পাওয়ার বেদনা। তাদের ও কাঁদতে হয় বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ে। তবে এই বিশ্বকাপে এখনো টিকে আছে মেসির বিশ্বকাপ স্বপ্ন। তিনি কি পারবেন শেষ হাসিটা হাসতে? অধরো বিশ্বকাপের ট্রফিতে চুমু খেতে?
রোনালদোর স্বপ্নযাত্রাটা একেবারেই শেষ। এটিই তার শেষ বিশ্বকাপ। শেষটা রাঙাতে না পেরে, মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এই পর্তুগিজ তারকা। সময়ের অন্যতম সেরা তারকা। অথচ নিজের দেশকে একটি সোনালী ট্রফি উপহার দিতে না পারার আক্ষেপ তার থেকেই গেছে । নিজের শেষ বিশ্বকাপটা রাঙ্গাতে পারেননি। উল্টো নিজের পারফরম্যান্সটাও হয়েছে ভুলে যাওয়ার মতো। শেষ পর্যন্ত তাকে বেঞ্চেও বসালেন পর্তুগিজ কোচ।
তবে নেইমারের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার এবারের বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়েছেন। তিন ম্যাচ খেলে ২টি গোল এবং ১টি অ্যাসিস্ট করেছেন। এরমধ্যে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলটি সবার নজর কেড়েছে। চোট নিয়েও এমন পারফরম্যান্স প্রশংসা কুড়াচ্ছে। কিন্তু ভাগ্যের হেরফের, ট্রাইবেকারে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে কাঁদতে হলো তাকেও। অবশ্য নেইমার হয়তো ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে ফিরে আসতে পারেন আবার।
এদিকে বিশ্বকাপে এখনো ছুটে চলছেন মেসি। আর্জেন্টিনার শিরোপা খরা ঘুচানোর সঙ্গে নিজের স্বপ্ন পূরণের সংকল্প, ক্ষুদে জাদুকরকে যেন অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে। এবারের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বেশ কাছে চলে এসেছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশটি। আর দুটি ম্যাচে নিজেদের সেরা ফুটবলটা খেলতে পারলেই কাতারে শিরোপা উঁচিয়ে ধরার মাহেন্দ্রক্ষণ চলে আসবে আলবিসেলেস্তেদের।
বয়সের হিসাবে এটি মেসিরও শেষ বিশ্বকাপ। ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবকিছুই অর্জন করে ফেলা এই তারকার অপূর্ণতা বলতে আছে কেবল বিশ্বকাপটা। এবার যদি সেটাও পেয়ে যান, হয়তো ফুটবল বিধাতাও খুশি হবেন। নাকি শেষ মুহুর্তে এসে তিনিও হোচট খাবেন কে জানে ! যদি নেইমার – রোনালদোর মতো মেসিকেও চোখের জলে বিদায় নিতে হয় এর চেয়ে বড় ফুটবল ট্রাজেডির গল্প আর কি হতে পারে? সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ফরোয়ার্ড কি পারবেন? নিজের শেষ বিশ্বকাপ রাঙ্গিয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ জিততে? এমন প্রশ্নই এখন ফুটবল জগতে।