ঐতিহাসিক লুসাইল স্টেডিয়ামে ১৮ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার লড়াই। ফাইনালের এই ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে দিদিয়ের দেশমের ফ্রান্স। সেখানে আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসিকে ঘিরেই যেন ফ্রান্সের যত ভাবনা। তাকে আটকাতে পারলেই শিরোপা জেতার পথে আর কোনো বাঁধা থাকবে না তাদের। তাই ‘ ভিনগ্রহের ফুটবলার ” খ্যাত মেসিকে আটকাতে একজন মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তার সবই করবেন দিদিয়ের দেশমের দল। সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম নিজেই।
ফাইনালের আগে মেসি ইস্যুতে মুখ খোলেন ফ্রান্স কোচ।সেখানেই উঠে এসেছে মেসিকে নিয়ে দেশমের ভাবনার কথা। সংবাদ সম্মেলনে দেশমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, মেসিকে আটকানো সম্ভব কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ” মেসি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। মুহুতেই পালটে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। ওকে আটকাতে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভম, আমরা তা – ই করব। তবে ম্যাচ শেষে কেউ না কেউ জার্সিতে তৃতীয় তারকাটি পাবে। ” উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ জেতার সংখ্যা অনুযায়ী জার্সিতে সেই সংখ্যক তারকা থাকে। আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স উভয়ই এর আগে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। তাই উভয়েরই তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতার লড়াই এটা। আর যারা জিতবে তাদের জার্সিতে তিন নম্বর তারকাটি বসবে।
গত বিশ্বকাপেও মেসিদের মুখোমুখি হয়েছিলো ফ্রান্স। তবে সেটা গ্রুপ অব সিক্সটিনে। সেবার ফ্রান্স অবশ্য আর্জেন্টাইনদের হারিয়েই দিয়েছিল। কিন্তু তখনকার মেসি আর বর্তমানের মেসির মধ্যে আকাশ – পাতাল পার্থক্য। বয়সের সংখ্যাটা বাড়লেও তিনি ছড়াচ্ছেন তারুণ্যের দ্যুতি। দলকে নিয়ে গেছেন ফাইনালে। তাই তার দিকে এবার আরও বিশেষ নজর ফ্রান্সের।
দেশম বলেন, ” টুর্নামেন্ট শুরু থেকে মেসি দারুন ছন্দে। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে তার কয়েক মুহূর্ত দরকার। চার বছর আগে তার খেলার ধরন ভিন্ন ছিলো। সেই সময় সে সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেছে। কিন্তু এবার সামনের দুজনের একজন কিংবা স্ট্রাইকারের পেছনে খেলছে। সে দারুণ ফর্মে আছে এবং অবশ্যই বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। তাকে থামানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। মাঠে তার ভূমিকা রাখার জায়গাগুলো কমিয়ে আনার চেষ্টা করব আমরা। তারাও আমার দলের বিপক্ষে এটা করতে চাইবে। তবে চার বছর আগের আর্জেন্টিনা আর এই আর্জেন্টিনা এক নয়। আমরা আশাবাদী, ছেলারা মেসিকে আটকে দেবে। “
উল্লেখ্য, ফ্রান্স এখন রেকর্ড গড়ার দ্বারপ্রান্তে। ফাইনালে জিততে পারলেই তারা ব্রাজিল এবং ইতালির রেকর্ডে ভাগ বসাবে। টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতার রেকর্ডে ব্রাজিল এবং ইতালিকে ছুঁয়ে ফেলবে তারা। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাও চাইবে মেসির শেষ বিশ্বকাপটা তার হাতে তুলে দিতে। এই বিশ্বকাপের আগেই মেসি ঘোষনা দিয়েছেন এটাই হতে যাচ্ছে তার শেষ বিশ্বকাপ। ক্যারিয়ারে মোটামুটি সবেই জিতেছেন মেসি। বাকি আছে অধরা বিশ্বকাপ। সেই অপূর্ণতাই এবার ঘুচাতে মরিয়া মেসি।