কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে সব আলো কেড়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ফ্রান্সের মূল অস্ত্রকে আটকে রাখতে কৌশলী হয় আর্জেন্টিনা। আগেই ধারনা করা হয়েছিলো আর্জেন্টিনার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন এমবাপ্পে।
তাই এই ফরোয়ার্ডকে রুখতে আর্জেন্টিনার দুজন ডিফেন্ডারকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ফাইনালের প্রথমার্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি এমবাপ্পে। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ঢুকতে পেয়েছেন মাত্র একবার। তবে ম্যাচ শেষে হ্যাটট্রিক গোল তার নামের পাশে। তবু বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ পোড়াচ্ছে এমবাপ্পেকে।
ফাইনালের প্রথমার্ধে এমবাপ্পেকে স্বরুপে খুজে পাওয়া না গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে দৃশ্যপট বদলাতে থাকে ধীরে ধীরে। কিন্তু ততক্ষণে ২ গোলে পিছিয়ে পড়েছে এমবাপ্পের দল। সেই চাপ সামলে নিজেকে মেলে ধরার চ্যালেঞ্জ, ম্যাচ বের করার চ্যালেঞ্জ কাঁধে তুলে নিলেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। ৭৫ মিনিটের পর জোড়া গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। এরপর থেকেই জমে ওঠে আসল ফাইনাল। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্ত সেখানেও সমতা।
অতিরিক্ত সময়ে গোল হয়েছে একটি করে। ফ্রান্সের সেই গোলটাও আসলো এমবাপ্পের পা থেকে। আর তাতেই অনন্য এক কীর্তি গড়ে ফেললেন এই ফরাসি তারকা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব দেখালেন এমবাপ্পে। এর আগে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্ট। অবশ্য সেটিও অনেক আগের কথা, ১৯৬৬ সালে।
ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে আলো কেড়েছেন ঠিকই, কিন্তু শেষ হাসিটা আর এমবাপ্পের হলো না। ট্রাইব্রেকারে ৪ – ২ গোলে হেরে যায় ফ্রান্স। সেখানে আবার নায়ক বনে গেলেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তার অতিমানবীয় দক্ষতায় দুটি শুট মিস করেন ফরাসিরা। অপরদিকে সবকটি বল প্রতিপক্ষের জালে জড়ান আলবিসেলেস্তেরা। যে কারণে ফের বিশ্বজয় করা হলো না এমবাপ্পের।
অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে উজ্জ্বল এমবাপ্পে জিতেছেন আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। এবারের বিশ্বকাপে মোট ৮টি গোল করেছেন তিনি। এই পারফরম্যান্সের সুবাদেই গোল্ডেন বুট জিতেছেন ফরাসি তারকা। কিন্তু এমবাপ্পে তো চেয়েছেন সোনার ট্রফিটাই। হয়তো এ কারণেই গোল্ডেন বুট হাতেও মুখে হাসি দেখা যায়নি তার। এত কাছে এসেও বিশ্বকাপ জিততে না পারার হতাশা পোড়াচ্ছে এমবাপ্পেকে। অবশ্য ইতোমধ্যেই একটি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছেন এই তরুণ ফুটবলার।