Kolkata Knight Riders. (Photo Source: IPL/BCCI)
আগামী ৩১শে মার্চ থেকে শুরু হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)-এর ১৬তম সংস্করণ। ২০২১-এ ফাইনালে উঠেও রানার্স-আপ হয়ে শেষ করতে হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে এবং আশা করেছিল ২০২২-এ আরও এক ধাপ উন্নত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। এর জন্য স্কোয়াডে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে, নতুন অধিনায়ক হিসেবে শ্রেয়াস আইয়ারের অধীনে খেলতে নেমেছিল কেকেআর। তবে মাত্র বারো পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে লিগ শেষ করায় কেকেআর প্লে-অফেও পৌঁছতে পারেনি।
এই মরসুম এখনও শুরু হয়নি, তবে এরই মধ্যে চাপে কেকেআর। নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার চোটের কারণে অনিশিত পুরো মরসুমের জন্যই এবং নতুন অধিনায়ক হিসেবে এসেছেন নীতীশ রানা। শ্রেয়াস অনুপস্থিত থাকায় দলের অভিজ্ঞতা কমে গেছে। এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সক্রিয় বিদেশী এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে দাপটের সঙ্গে পারফর্ম করা বিদেশী খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হবে। এখানে আলোচনা করা হল এমন পাঁচ বিদেশী ক্রিকেটারকে নিয়ে যাঁরা আইপিএল ২০২৩-এ নজর কাড়তে পারেন।
আইপিএল ২০২৩-এ কেকেআরের সেরা পাঁচ বিদেশী তারকা
৫) শাকিব আল হাসান
Shakib Al Hasan. (Photo Source: IPL/BCCI)
আইপিএল ২০১১ থেকে শাকিব আল হাসান কেকেআরের সদস্য। ২০১৭ অবধি কলকাতা-ভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার পরে শাকিব সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে যাওয়ার পরে ২০২১-এ আবার কেকেআরে প্রত্যাবর্তন করেন। গত মরসুমে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি এবং এই মরসুমে কেকেআর বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারকে ১.৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে কিনেছিল।
শাকিব আল হাসান এখনও অবধি ৭১টি আইপিএল ম্যাচ খেলেছেন এবং ৬৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৭৯৩ রান করেছেন। ব্যাট হাতে শাকিব আইপিএলে কাঙ্ক্ষিত পারফর্ম্যান্স করতে পারেননি, যদিও এই মরসুমে সেই ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ পাবেন তিনি। শ্রেয়াসের অনুপস্থিতিতে কেকেআর মিডল অর্ডারে শাকিবের মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে পাঠাতে পারে এবং উপযুক্ত সময় ও সমর্থন পেলে শাকিব ব্যাট হাতে জ্বলে উঠবেন।
বোলিংয়ের ক্ষেত্রে শাকিব বরাবরই দলের কাজে এসেছেন এবং ৭.৪৩-এর কার্যকরী ইকোনমি রেট বজায় রেখেছেন। শাকিবকে পাওয়ারপ্লের ওভারগুলিতেও বোলিং দেওয়া যায় এবং মাঝের ওভারেও পারফর্ম করতে সক্ষম তিনি। ভারতের স্পিন-সহায়ক পিচে শাকিবের বাঁ-হাতি অফ স্পিন বোলিং কার্যকর হবে।
৪) লকি ফার্গুসন
Lockie Ferguson. (Photo Source: Twitter)
আইপিএলে নিউ জিল্যান্ডের পেসার লকি ফার্গুসন আইপিএলে অভিষেক করেছিলেন নাইটদের জার্সিতে। গত মরসুমের মেগা-নিলামে ফার্গুসনকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে গুজরাত টাইটান্স কিনেছিল এবং তিনি সেই মরসুমের চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে ১৩ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন।
এরপরে কেকেআর ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ফার্গুসনকে স্কোয়াডে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। বর্তমান সময়ের ক্রিকেটে কিউয়ি পেসারের মতো তীব্র পেসে বোলিং করতে পারেন, এমন পেসারের সংখ্যা নগণ্য। ফার্গুসনের অন্তর্ভুক্তির ফলে কেকেআরের পেস বিভাগ মজবুত হবে।
কেকেআরে ইতোমধ্যেই আরও একজন নিউ জিল্যান্ডের পেসার আছেন – টিম সাউদি। দুই পেসারের মধ্যে যে কোনো একজনকেই খেলানোর কথা ভাববে নাইট ম্যানেজমেন্ট, ফলে ফার্গুসন সম্ভবত কেকেআরের হয়ে সব ম্যাচে খেলবেন না।
৩) টিম সাউদি
Tim Southee. (Photo Source: Twitter)
আইপিএল ২০২২-এ কেকেআর ১.৫০ কোটি টাকার বেস প্রাইসে নিউ জিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদিকে কিনেছিল। ২০২১ মরসুমেও কেকেআরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ডান-হাতি পেসার। দুই মরসুম মিলিয়ে সাউদি ১২ ম্যাচে মোট ১৭ উইকেট নিয়েছেন আটের কম ইকোনমি রেটে।
ইনিংসের শুরুতে সুইং করানোর ক্ষমতার কারণে সাউদিকে ভারতীয় পেসার উমেশ যাদবের সঙ্গে জুটি বাঁধতে দেখা যেতে পারে। কেকেআরের প্রধান বিদেশী পেসার হিসেবে ফার্গুসনের আগে সম্ভবত সাউদিকেই খেলানো হবে। গত মরসুমের বোলিংয়ে অবদান রাখার পাশাপাশি সাউদি অনবদ্য ফিল্ডিংও করেছিলেন।
ব্যাট হাতেও কার্যকরী ইনিংস খেলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন সাউদি। টি-২০ কেরিয়ারে সাউদির স্ট্রাইক রেট ১৪১.৫৮। বর্তমানে টি-২০ আন্তর্জাতিকের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হিসেবে শীর্ষে রয়েছেন সাউদি। ১০৭ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহে ১৩৪ উইকেট।
২) সুনীল নারিন
Sunil Narine. (Image Source: IPL/BCCI)
সুনীল নারিন ও কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে। ২০১২ থেকে কেকেআরের হয়ে খেলছেন এই রহস্য স্পিনার। বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তনে বাধ্য হওয়ার পরে নারিনের রহস্যময়তা কমলেও এখনও আগের মতোই কার্যকর রয়েছেন তিনি।
আইপিএল ২০২২ মেগা নিলামের আগে নারিনকে রিটেইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেকেআর। এখনও অবধি ১৪৮ ম্যাচে ১৫২ উইকেট নিয়েছেন নারিন এবং আইপিএলের সর্বকালীন উইকেটশিকারীর তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন তিনি।
গত মরসুমে মাত্র ৯ উইকেট নিলেও নারিনের ইকোনমি রেট ছিল ঈর্ষণীয়। নারিন ৫.৫৭-এর ইকোনমি রেট বজায় রাখতে সক্ষম হওয়ায় নিঃসন্দেহে বলা যায় যে ব্যাটাররা তাঁর বিরুদ্ধে এক দশকেরও বেশী সময় খেলার পরেও ঝুঁকি নিতে চান না। ব্যাট হাতেও বেশ কিছু আগ্রাসী ইনিংস খেলেছেন নারিন এবং আসন্ন মরসুমে ব্যাটার হিসেবে অবদান রাখতে পারলে কেকেআরের জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।
১) আন্দ্রে রাসেল
Andre Russell. (Photo Source: BCCI/IPL)
আন্দ্রে রাসেল বা কেকেআর সমর্থকদের আদরের ‘দ্রে রাস’ বিশ্বের যে কোনো বোলিং আক্রমণকে তছনছ করে দিতে পারেন। বিধ্বংসী ব্যাটার তাঁর পাওয়ার-হিটিংয়ের জোরে কেকেআরকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন এবং আসন্ন মরসুমেও তাঁর কাছ থেকে এমন কিছুরই প্রত্যাশা রয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৯ আইপিএলের মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার নির্বাচিত হয়েছিলেন রাসেল।
আইপিএলে এখনও অবধি ৯৮ ম্যাচ খেলে ২০৩৫ রান করেছেন ১৭৭.৮৮ স্ট্রাইক রেটে, ন্যূনতম ২০০০ আইপিএল রানের ক্ষেত্রে যা সর্বোচ্চ। এর পাশাপাশি রাসেল ৮৯ উইকেটও নিয়েছেন। ডেথ ওভারে এসে বল হাতে প্রচুর উইকেট নিয়েছেন রাসেল এবং আইপিএল ২০২১-এ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে মাত্র দুই ওভার বোলিং করেই পাঁচ উইকেট নিতে সক্ষম হন।
রাসেলের ছক্কা হাঁকানোর সহজাত ক্ষমতার কারণে তাঁকে মূলত ফিলিশার হিসেবে ব্যবহার করবে কেকেআর। পাঁচ বা ছয় নম্বরে ব্যাটিং করতে আসতে পারেন রাসেল। এ ছাড়া বোলিংয়ের সময়ে তাঁকে পুরো ওভার না দেওয়া হলেও, ডেথ বোলিং নাইটদের অন্যতম ভরসা তিনি।
The post আইপিএল ২০২৩: কেকেআরের যে ৫ বিদেশী তারকার দিকে নজর থাকবে appeared first on CricTracker Bengali.