স্কটল্যান্ড বনাম জিম্বাবুয়ে (ম্যাচ ১২) – হাইলাইটস
শুক্রবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১২ তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্কটল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে। ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে লড়াই করার মত একটি লক্ষ্য দাড় করায় স্কটল্যান্ড। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্কটল্যান্ডের। সেই সাথে জিম্বাবুয়ের হয়ে ভাল ব্যাটিং ও বোলিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন সিকান্দার রাজা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ, আরেকটি নকআউট লড়াই। যে দল জিতবে নাম লেখাবে সুপার টুয়েলভে। হারলে বিশ্বকাপ শেষ।
এমন এক ম্যাচে পুঁজিটা বড় করতে পারলো না স্কটল্যান্ড। জর্জ মুন্সির হাফসেঞ্চুরির পরও ৬ উইকেটে ১৩২ রানেই থেমে গেছে তাদের ইনিংস। অর্থাৎ সুপার টুয়েলভে নাম লেখাতে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল মাত্র ১৩৩ রান।
হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন স্কটল্যান্ড অধিনায়ক রিচি বেরিংটন। শুরু থেকেই স্কটিশদের চাপে রাখেন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা।২৪ রান তুলতে ২ উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। মাইকেল জোনস ৪ আর ম্যাথু ক্রস ১ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। এরপর রিচি বেরিংটনকে নিয়ে ৩২ বলে ৪০ রানের জুটি গড়েন জর্জ মুন্সি।
অধিনায়ক বেরিংটন ব্যাট করছিলেন ধীরগতিতে। ১৫ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি তিনি, আউট হন ১৩ করে। মুন্সি একটা প্রান্ত ধরে খেলছিলেন। কিন্তু তার ব্যাটিংটা ঠিক টি-টোয়েন্টিসুলভ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারের প্রথম বলে এনগারাভাকে মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৫১ বলে গড়া তার ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি বাউন্ডারির মার।
রান বেশি উঠেনি তাই ঝুঁকি নিয়ে গতি বাড়াতে চেয়েছিলেন মাইকেল লিস্ক। তারপর ৯ বলে ১২ রান করা এই ব্যাটারকে বোল্ড করেন মুজারাবানি। ক্যালাম ম্যাকলিওড শেষ ওভারে আউট হন ২৬ বলে ২৫ করে। এছাড়া ৩ রানে অপরাজিত থাকেন ক্রিস গ্রিভস ও ৪ রানে অপরাজিত থাকে জোশ ডেভি। শেষে ১৬ রান এক্সট্রা সহ ১৩৩ রানের লক্ষ্য দাড় করায় তারা।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল টেন্ডাই চাতারা। ১৪ রানে এই পেসার নেন ২ উইকেট। রিচার্ড এনগারাভা ২৮ রানে নেন দুটি উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ব্লেসিং মুজারাবানি ও সিকান্দার রাজা।
আবারও সেই সিকান্দার রাজা। কী বোলিং আর কী ব্যাটিং! অসাধারণ অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে আবারও জিম্বাবুয়েকে জয় উপহার দিলেন তিনি। স্কটল্যান্ডকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে শুধু বিদায় করে দেয়াই নয়, ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে থেকেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করলো জিম্বাবুয়ে।
জবাব দিতে নেমে ৯ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুইয়ানরা। ১৩৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ৪ রান করে আউট হয়ে যান ওপেনার রেজিস চাকাভা। এরপর ওয়েসলি মাধভেরে ৫ বলে কোনো রান না করেই ফিরে যান। দলীয় ৪২ রানের মাথায় বিদায় নেন শন উইলিয়ামস। তিনি করেন ৭ রান।
এরপর জুটি বাধেন অধিনায়ক ক্রেইগ এরভিন এবং সিকান্দার রাজা। এ দু’জন মিলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন। এর মধ্যেই ঝড় তুলেছিলেন সিকান্দার রাজা। ২৩ বলে ৪০ রান করেন ৩ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায়। ১০৬ রানের মাথায় আউট হন তিনি। তখন ১৫ ওভারের খেলা শেষ হয়।
ওই সময় জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ৫ ওভারে ২৭ রান। ১১৯ রানের মাথায় এক পাশ আগলে রাখা ব্যাটার ক্রেইগ এরভিনও আউট হয়ে যান। তিনি করেন ৫৪ বলে ৫৮ রান। স্লো হলেও তার এই ধরে খেলা ব্যাটিংই জিম্বাবুয়েকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। শেষ দিকে মিল্টন সোম্বা ১১ বলে ১১ এবং রায়ান বার্ল ৫ বলে ৯ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
স্কটল্যান্ডের হয়ে জস ডেভি ২ উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন ব্র্যাড হুইল, মার্ক ওয়াট এবং মিচেল লিস্ক।
স্কটল্যান্ড বনাম জিম্বাবুয়ে এর স্কোরবোর্ড
স্কটল্যান্ড – ১৩২/৬ (২০.০)
জিম্বাবুয়ে – ১৩৩/৫ (১৮.৩)
ফলাফল – জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – সিকান্দার রাজা
স্কটল্যান্ড বনাম জিম্বাবুয়ে ম্যাচের একাদশ
স্কটল্যান্ড | রিচি বেরিংটন (অধিনায়ক), ম্যাথু ক্রস (উইকেটরক্ষক), মাইকেল জোন্স, জর্জ মুন্সি, ক্যালাম ম্যাকলিওড, মাইকেল লিস্ক, মার্ক ওয়াট, ক্রিস গ্রিভস, সাফিয়ান শরিফ, জোশ ডেভি, ব্র্যাড হুইল |
জিম্বাবুয়ে | ক্রেগ এরভিন (অধিনায়ক), রেজিস চাকাবভা (উইকেটরক্ষক), শন উইলিয়ামস, ওয়েসলি মাধভেরে, মিল্টন শুম্বা, সিকান্দার রাজা, লুক জংওয়ে, রায়ান বার্ল, টেন্ডাই চাতারা, রিচার্ড এনগারাভা, ব্লেসিং মুজারাবানি |