সিডনি থান্ডার বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স (ম্যাচ ৫) – হাইলাইটস
ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। সেটি আরেকবার দেখা গেল অস্ট্রেলিয়ার বিগব্যাশ লিগে। শুক্রবার সিডনিতে টুর্নামেন্টের পঞ্চম ম্যাচে (১৬ ডিসেম্বর) লজ্জার এক রেকর্ড গড়েছে সিডনি থান্ডার। অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের দেয়া ১৪০ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে থান্ডার অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ১৫ রানে!
সিডনির শোগ্রাউন্ড স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তুলতে সমর্থ হয় স্ট্রাইকার্স। জবাবে স্ট্রাইকার্সের বোলারদের আগ্রাসী বোলিংয়ে মাত্র ৫.৫ ওভারে থান্ডার গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৫ রানে! স্ট্রাইকার্সের হয়ে ২৬ বছর বয়সী পেসার হেনরি থর্নটন ২.৫ ওভারে ১টি মেডেনসহ মাত্র ৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট শিকার করেন।
আরএক পেসার ওয়েস অ্যাগার ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। এছাড়া অল-রাউন্ডার ম্যাথু শর্ট ১ ওভারে ৫ রান দিয়ে ১টি উইকেট তুলে নেন। সেই সাথে অসাধারণ রেকর্ড গড়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন হেনরি থর্নটন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড এটি। এর আগে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড ছিল তুরস্কের। ২০১৯ সালে চেক রিপাবলিকের ২৭৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২১ রানে অল আউট হয়েছিল তারা। তুরস্ক খেলেছিল ৮.৩ ওভার। যা ছিল সর্বনিম্ন ওভার খেলার রেকর্ড।
১৫ রান করতে থান্ডারের ব্যাটসম্যানরা খেলেছেন মাত্র ৫.৫ ওভার। অর্থাৎ ৩৫ বলের ১০টিতেই উইকেট পড়েছে তাদের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে কম ওভারে অলআউট হওয়ার রেকর্ডও এখন এটি। আর বিগ ব্যাশে আগের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৫৭ রান। ২০১৫ সালে মেলবোর্ন রেনেগেডস এই লজ্জার রেকর্ড গড়েছিল।
ম্যাচের প্রথমে স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক পিটার সিডল টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন এবং থান্ডারকে ফিল্ডিং করতে পাঠান। ব্যাটিংয়ে নেমে থান্ডারের বোলাদের বোলিং তোপে শুরু থেকেই চাপে থাকে স্ট্রাইকার্সের ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লে ১ এর ৪ ওভারে ২উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৭ রান তুলতে পারে তারা। এরপর নিয়মিত উইকেট বিরতিতে রানের গতি আর তরান্বিত করতে পারেনি স্ট্রাইকার্সের ব্যাটাররা।
ফলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানের লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করে স্ট্রাইকার্স। দলের হয়ে ক্রিস লিন ৪ চার ও ১ ছক্কায়, ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বাধিক ২৪ বলে ৩৩ রান করেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। এছাড়া টমাস কেলি এবং হ্যারি নিলসন উভয়ই ১৩ রানের দুটি ইনিংস খেলেন।
থান্ডারের হয়ে আফগান পেসার ফজলহক ফারুকী ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে সর্বাধিক ৩টি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া ড্যানিয়েল সামস, গুরিন্দর সান্ধু এবং ব্রেন্ডন ডগেট ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
কিন্তু এই সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ধস নেমে আসে থান্ডার শিবিরে। থান্ডারের হয়ে রানের খাতা খুলতে পারেননি পাঁচ ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে আছেন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসও। দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো করেন ৩ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ রান করেন ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নামা ডগেট।
স্ট্রাইকার্সের বোলাদের বোলিং তোপে শেষ পর্যন্ত ৫.৫ ওভারে ১৫ রান তুলতেই থেমে যায় থান্ডারের ইনিংস। ফলে মাত্র ১৩৯ রানের মাঝারি সংগ্রহ তুলেও ১২৪ রানের বিশাল জয় পেয়ে যায় স্ট্রাইকার্সরা। তবে জয়ের ব্যবধানের চেয়ে থান্ডারের ১৫ রানে অলআউট হওয়া তৈরি করেছে বেশি বিস্ময়।
এই ম্যাচ সহ টানা দুই ম্যাচে জয়ী হয়ে এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স। অপরদিকে দুই ম্যাচে এক জয় ও এক হার নিয়ে সিডনি থান্ডার পয়েন্ট টেবিলের ৪র্থ স্থানে রয়েছে।
সিডনি থান্ডার বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স এর স্কোরবোর্ড
অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স – ১৩৯/৯ (২০.০)
সিডনি থান্ডার – ১৫/১০ (৫.৫)
ফলাফল – অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ১২৪ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – হেনরি থর্নটন
সিডনি থান্ডার বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ম্যাচের একাদশ
সিডনি থান্ডার | জেসন সাংঘা (অধিনায়ক), ম্যাথু গিলকেস (উইকেট রক্ষক), অ্যালেক্স হেলস, রাইলি রুশো, ড্যানিয়েল সামস, অলিভার ডেভিস, অ্যালেক্স রস, ক্রিস গ্রিন, ফজলহক ফারুকী, ব্রেন্ডন ডগেট এবং গুরিন্দর সান্ধু। |
অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স | পিটার সিডল (অধিনায়ক), হ্যারি নিলসন (উইকেট রক্ষক), জ্যাক ওয়েদারল্ড, ক্রিস লিন, ম্যাথু শর্ট, অ্যাডাম হোস, টমাস কেলি, রশিদ খান, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ওয়েস অ্যাগার এবং হেনরি থর্নটন। |