সংযুক্ত আরব আমিরাত বনাম বাংলাদেশ (১ম টি২০) – হাইলাইটস
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটা জয় দিয়েই হলো সফরকারী বাংলাদেশের। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ৭ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে, আফিফ হোসেনের ক্যারিয়ার সেরা ৭৭ রান ও অধিনায়ক নুরুল হাসানের ৩৫ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি স্বাগতিকরা। শেষ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ১৫১ রান করতে সমর্থ হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের কোন ব্যাটারই বড় স্কোর করতে পারেননি। সাব্বির রহমান এবং মেহেদী হাসানের ওপেনিং পার্টনারশিপ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান না করে আউট হয়ে যান সাব্বির। মেহেদী করেছিলেন ১৪ বলে ১২ রান। ভালো শুরু করেও মাত্র ১৩ রান করেই আউট হয়ে যান তিনে নামা লিটন দাস।
ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা দেখান ইনজুরি থেকে ফেরা ইয়াসির আলীও। ৭ বলে ৪ রান করে কার্তিক মিয়াপ্পনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ফলে ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। এরপর মোসাদ্দেক হোসেনও (৮ বলে ৩) সুবিধা করতে না পারলে ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আফিফ এবং নুরুলের অবিচ্ছিন্ন জুটি দলকে লড়াকু পুঁজির পথ দেখায়।
এদিন দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেন মূলত আফিফ। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া আফিফ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেন উইকেটের চারপাশে। ৭ চার ও ৩ ছয়ে, ৫৫ বলে শেষ পর্যন্ত ৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন এই পোস্টারবয়। আফিফকে যোগ্য সঙ্গ দেন অধিনায়ক সোহান। ২টি করে চার ও ছয়ে, ২৫ বলে ৩৫ রান করেন তিনি।
কার্তিক মিয়াপ্পন দলের পক্ষে সর্বাধিক ২টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া সাবির আলী, আফজাল খান এবং জাওয়ার ফরিদ ১টি করে উইকেট তুলে নেন। জবাব দিতে নেমে ভালোই শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওপেনিংয়ে ২৭ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার মোহাম্মদ ওয়াসিম (১৫)। তবে আরেক ওপেনার চিরাগ সুরি ও আরিয়ান লাকরার ব্যাটে ভালোই জবাব দিচ্ছিল স্বাগতিকরা।
অষ্টম ওভারে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মেহেদী হাসান। ২৪ বলে ৩৯ রান করে মেহেদী’র শিকারে পরিণত হন চিরাগ। তার ইনিংসে ছিল ৭টি চারের মার। নিজের পরের ওভারে এসে মেহেদী লাকরাকেও সাজঘরে ফেরান। দ্রুত দুই ব্যাটারের বিদায়ে খেই হারিয়ে ফেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এরপর উইকেট রক্ষক ব্যাটার ভৃত্য অরবিন্দ ১৬ রান করে মেহেদী’র তৃতীয় শিকারে পরিণত হন। তবে আফজাল খান ও জুনায়েদ সিদ্দিক জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল স্বাগতিকদের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। তবে শেষ ওভার করতে এসে শরিফুল টানা দুই বলে আমিরাতের শেষ দুই উইকেট তুলে নেন। ১৭ বলে ২৫ রান করেন আফজাল।
বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান ৩ ওভারে ১৭ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। মেহেদী ছাড়াও ২১ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান ২টি উইকেট নেন।
দুই ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সিরিজের ২য় ও শেষ ম্যাচে এই দুই দল একই সময় ও একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ – ১৫৮/৫ (২০.০)
সংযুক্ত আরব আমিরাত – ১৫১/১০ (১৯.৪)
ফলাফল – বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – আফিফ হোসেন
সংযুক্ত আরব আমিরাত বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
সংযুক্ত আরব আমিরাত | সিপি রিজওয়ান (অধিনায়ক), ভৃত্য অরবিন্দ (উইকেট রক্ষক), আয়ান আফজাল খান, বসিল হামিদ, আরিয়ান লাকরা, চিরাগ সুরি, কার্তিক মিয়াপ্পন, সাবির আলী, মোহাম্মদ ওয়াসিম, জুনায়েদ সিদ্দিক এবং জাওয়ার ফরিদ। |
বাংলাদেশ | নুরুল হাসান (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), সাব্বির রহমান, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, নাসুম আহমেদ, ইয়াসির আলী, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, এবং মোস্তাফিজুর রহমান। |