BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ৩০ নভেম্বর: শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান (৩য় ওডিআই)

Cricket Highlights, 30 Nov: SL vs AFG (3rd ODI)

শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস

শেষ ৩৬ বলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ৬৮ রান। তবে আশা হয়ে ছিলেন চারিত আসালাঙ্কা। দুনিত ভেল্লালাগেকে সাথে নিয়ে বিশ্বকাপ সুপার লিগে শ্রীলঙ্কাকে গুরুত্বপূর্ণ এক জয় এনে দিলেন তিনি।

আসালাঙ্কার ৭২ বলে ৮৩ রানের অপরাজিত ইনিংসের সঙ্গে ভেল্লালাগের ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংসে আফগানিস্তানের দেওয়া ৩১৪ রানের লক্ষ্য শ্রীলঙ্কা ছুঁয়ে ফেলেছে ২ বল বাকি থাকতেই। তাতেই ম্লান হয়ে গেছে ইব্রাহিম জাদরানের রেকর্ড ১৬২ রানের ইনিংস, রশিদ খানের ৩৭ রানে ৪ উইকেটের দারুণ বোলিং। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ড্র হয়েছে ১-১-এ।

কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কার ১০১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শক্ত ভিতই পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। নিশাঙ্কা ৩৫ রান করতে খেলেন ৫৫ বল, তবে মেন্ডিস ৬৭ রান করেছেন মাত্র ৬১ বলে। অবশ্য ১৫ রানের ব্যবধানে মেন্ডিস, নিশাঙ্কার পর ডি সিলভাকেও (৫) হারিয়ে ফেলেন লঙ্কানরা। রশিদ খানের পর মোহাম্মদ নবী ম্যাচে ফেরান আফগানদের।

৪৮ বলে ৪৮ রানের জুটিতে স্বাগতিকদের পুনর্গঠনের প্রথম কাজটা দিনেশ চান্দিমালকে নিয়ে করেন আসালাঙ্কা। ৩২ বলে ৩৩ রান করা চান্দিমালকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন নবী। দাসুন শানাকাকে নিয়ে আসালাঙ্কা এরপর তোলেন ৬৮ বলে ৭৯ রান। ৪৪ বলে ৪৩ রান করা শানাকাকে বোল্ড করে আবার ব্রেকথ্রু দেন রশিদ, পরের ওভারে এসে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (২) ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেটটি নেন এই লেগ স্পিনার।

ঠিক পরের ওভারেই মুজিব উর রহমানের ওপর চড়াও হন আসালাঙ্কা, মারেন ২টি ছক্কা। রশিদকে ৪৬তম ওভার পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন আফগান অধিনায়ক হাশমাতউল্লাহ, ৪৭তম ওভারে এসে রশিদ দেন মাত্র ৩ রান। শেষ ১৮ বলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ৩৭ রান। ৪৮তম ওভারের শেষ বলে দুনিত ভেল্লালাগে মারেন একটি চার, ১২ বলে দরকার ছিল ২৯ রান।

গুলবাদিন নাইবের করা ৪৯তম ওভারে ভেল্লালাগে মারেন তিনটি চার। শেষ ওভারের প্রথম বলে ফজলহক ফারুকীকে ছক্কা হাঁকান তিনি, চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করেন ভেল্লালাগে। সেই সাথে ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটের জয় পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানের হয়ে রশিদ খান ছাড়াও মোহাম্মদ নবী ২টি উইকেট তুলে নেন।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে শুরুটা খারাপই করেছিল আফগানিস্তান। ৫৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। তৃতীয় ওভারে কাসুন রাজিথার বল স্টাম্পে ডেকে আনেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ (৫), ১২তম ওভারে গিয়ে রাজিথার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন রহমত শাহ (২২)। একটু পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডব্লু হন অধিনায়ক হাশমাতউল্লাহ শহীদি (৪)।

এরপর ইব্রাহিম জাদরান ও নাজিবুল্লাহ জাদরান মিলে গড়ে তোলেন ১৫৪ রানের জুটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যেকোনো উইকেটেই আফগানিস্তানের এটি সর্বোচ্চ, চতুর্থ উইকেটে যেকোনো দলের বিপক্ষেও সর্বোচ্চ। ৩৮তম ওভারে গিয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ফেরান নাজিবুল্লাহকে, যিনি ৭৬ বলে করেন ৭৭ রান। ইব্রাহিম অবশ্য আউট হন ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে।

ইব্রাহিম ফিফটি করেছিলেন ৬৪ বলে, সেঞ্চুরি করতে লাগে ১০০ বল। ৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তাঁর তৃতীয় সেঞ্চুরি। পরের ফিফটি করতে ইব্রাহিমের লাগে মাত্র ৩২ বল। শেষ বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে, ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কায়, ১৩৮ বলে ১৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। ওডিআইতে যে কোনো আফগান ব্যাটসম্যানের এটিই সর্বোচ্চ ইনিংস।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রানের বড় স্কোর সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার জয়ে কাসুন রাজিথা সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২টি এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও অসিথা ফার্নান্দো ১টি করে উইকেট তুলে নেন।

ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন চারিত আসালাঙ্কা এবং দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরি করে প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ নির্বাচিত হয়েছেন ইব্রাহিম জাদরান।


শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান এর স্কোরবোর্ড

আফগানিস্তান – ৩১৩/৮ (৫০.০)

শ্রীলঙ্কা – ৩১৪/৬ (৪৯.৪)

ফলাফল – শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – চারিত আসালাঙ্কা

প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – ইব্রাহিম জাদরান


শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের একাদশ

শ্রীলঙ্কা দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেট রক্ষক), পাথুম নিশাঙ্কা, দিনেশ চান্দিমাল, চারিত আসালাঙ্কা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দুনিত ভেল্লালাগে, অসিথা ফার্নান্দো, মহীশ তিকশানা, এবং কাসুন রাজিথা।
আফগানিস্তান হাশমাতউল্লাহ শহীদি (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেট রক্ষক), রহমত শাহ, নাজিবুল্লাহ জাদরান, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, গুলবাদিন নায়েব, মুজিব উর রহমান, ফজল হক ফারুকী, এবং নূর আহমদ।
Exit mobile version