শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া (দ্বিতীয় টেস্ট – ২য় দিন) – হাইলাইটস
গল টেস্টে অভিষিক্ত বাঁ-হাতি স্লো অর্থোডক্স স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার ঘূর্ণি যাদুতে ৩৬৪ রানেই অলআউট হয়ে গেছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। পরে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেটে ১৮৪ রান তুলে নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। অর্থাৎ ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১৮০ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
প্রথম দিন ৫ উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রান করেছিল প্যাট কামিন্সের দল। দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে শেষ পাঁচ উইকেটে ২০ ওভার মাত্র ৬৬ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিল অসিরা। জয়সুরিয়ার ঘূর্ণির জালে আটকা পড়ে একের পর এক উইকেট হারাতে হয়েছে সফরকারীদের।
দাপটের সঙ্গেই ২য় দিনের খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। তবে পরিস্থিতি বদলাতে খুব বেশি সময় লাগেনি। স্টিভ স্মিথ শেষ পর্যন্ত ১৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।
২৮ রান করা অ্যালেক্স ক্যারিকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কাকে দিনের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন জয়সুরিয়া। এর আগে স্মিথের সঙ্গে ক্যারি ৭৭ রানের জুটি গড়ে তোলেন। তবে এরপর স্মিথকে সেভাবে আর কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। বাকিরা ছিলেন কেবল আশা-যাওয়ার মিছিলে। মিচেল স্টার্ক ১ রানে, প্যাট কামিন্স ৫, নাথান লায়ন ৫ এবং মিচেল সোয়েপসন আউট হন ৩ রান করে।
ক্যারিকে ফেরানোর পরের ওভারেই মিচেল স্টার্ককেও ফেরান জয়সুরিয়া, স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন কুশল মেন্ডিস। ওই উইকেট দিয়েই অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়া মাত্র ষষ্ঠ শ্রীলঙ্কান বোলার হয়ে যান তিনি। অস্ট্রেলিয়ার শেষ তিন ব্যাটসম্যানই হন এলবিডব্লু। কাসুন রাজিথার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, মিচেল সোয়েপসন আরেক অভিষিক্ত মহীশ তিকশানার শিকার হন।
এর আগেই নাথান লায়নকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার হয়ে অভিষেকে দ্বিতীয় সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড নিজের করে নেন জয়সুরিয়া। তিনি ১১৮ রানে সর্বোচ্চ ৬টি উইকেট শিকার করেন। গত বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯২ রানে ৬ উইকেট নেওয়া প্রবীণ জয়াবিক্রমা তালিকার শীর্ষে আছেন। এছাড়া দুইটি উইকেট তুলে নেন কাসুন রাজিথা, এবং একটি করে উইকেট নেন রমেশ মেন্ডিস ও মহীশ তিকশানা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। নবম ওভারে মিচেল স্টার্কের শিকার হয়ে দলীয় ১২ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এ তরুণ ডানহাতি ব্যাটার ২৫ বল খেলে করেন ৬ রান। শ্রীলঙ্কাকে এরপর বেশ খানিকটা সময় আটকে রাখে অস্ট্রেলিয়া।
যার ফলশ্রুত ১৫তম ওভারে এসে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পায় স্বাগতিকরা, কামিন্সকে সেটি মারেন কুশল মেন্ডিস। নিশাঙ্কা’র বিদায়ের পর, সেভাবে রান না উঠলেও দিমুথ করুনারত্নে ও মেন্ডিস অস্ট্রেলিয়াকে উইকেট দেননি। দ্বিতীয় উইকেট এই দুই ব্যাটর মিলে ১৫২ রানের জুটি গড়ে তোলেন। এ জুটিতেই ফলোঅন এড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
৩০ ওভারে ১ উইকেটে ৬৫ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা। পরের সেশনে অবশ্য স্বাগতিকরা প্রায় ৩.৬১ হারে ১১৯ রান সংগ্রহ করেন। ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশতক পেরিয়ে ১৫তম শতকের দিকে এগোচ্ছিলেন করুণারত্নে। তবে সোয়েপসনের স্কিড করে যাওয়া বলটা ফ্লিক করতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লু হন তিনি। ব্যক্তিগত ৮৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন লঙ্কান অধিনায়ক।
দিন শেষে ৮৪ রানে অপরাজিত আছেন কুশল। আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৩৬ বল খেলে ৬ রানে অপরাজিত আছেন।
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া এর স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া (১ম ইনিংস) – ৩৬৪/১০ (১১০.০)
শ্রীলঙ্কা (১ম ইনিংস) – ১৮৪/২ (৬৩.০)
শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের একাদশ
শ্রীলঙ্কা | দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকভেলা (উইকেট রক্ষক), কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, কামিন্দু মেন্ডিস, রমেশ মেন্ডিস, দিনেশ চান্ডিমাল, মহীশ তিকশানা, কাসুন রাজিথা, এবং প্রবাথ জয়সুরিয়া। |
অস্ট্রেলিয়া | প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেট রক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার, মারনাস লাবুশেন, উসমান খাজা, স্টিভেন স্মিথ, ক্যামেরন গ্রিন, মিচেল স্টার্ক, ট্র্যাভিস হেড, নাথান লায়ন এবং মিচেল সোয়েপসন। |