ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০২০ সালে হঠাৎ করেই ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। যা স্তম্ভিত করেছিল গোটা বিশ্বের ক্রিকেট সমর্থকদের। অবাক করার আরও একটি বিষয় ছিলো, ধোনি অবসর নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে অবসর নেন ভারতের আরও এক তারকা ক্রিকেটার সুরেশ রায়না। কিন্তু ধোনির সঙ্গেই কেন তিনি অবসর নিয়েছিলেন? এ প্রশ্ন অনেকের মনে। এবার সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে স্বয়ং সুরেশ রায়না নিজের মুখে ফাঁস করলেন দুই জনের একেই সাথে অবসর নেওয়ার রহস্য।
২০০৫ সালে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলে অভিষেক হয় রায়নার। দীর্ঘদিন তিনি ধোনির নেতৃত্বে ভারতের হয়ে খেলেছেন। ২২ গজ এবং তার বাইরে ধোনি – রায়নার বন্ধুত্বের কথা কারও অজানা নয়। ভারতের সাবেক এই অধিনায়কের সঙ্গে রায়নার সম্পর্ক ছিল অনেক গভীর। দুজনেই ছিলেন ম্যাচ উইনার। ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট করে বর্ণাঢ্য ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ধোনি। আর তার প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যেই অবসরের ঘোষণা দেন রায়নাও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ধোনির সঙ্গে অবসর ঘোষণা করার সেই কারণ বলেন রায়না।
রায়না বলেন, ” ২২ গজে ধোনির সঙ্গে আমার সম্পর্ক অন্যরকম। আমরা একসঙ্গে এত ম্যাচ খেলেছি যে তার ইয়ত্তা নেই। ধোনির সঙ্গে জাতীয় দলে তো খেলেছিই, সিএসকে দলেও ওর সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। মাঠ এবং মাঠের বাইরে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি আমি। ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে এটা আমার অনেক বড় পাওয়া। তিনি যখন অবসর নিলেন, মনে হলো অনেক তো হলো, আমার নিজের ক্যারিয়ার নিয়েও ভাবার সময় হলো। এর পরেই অবসর নেই। ”
ধোনির জন্ম ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে। অন্যদিকে রায়না উত্তর প্রদেশের ছেলে। রায়না আরো বলেন, ” আমি গজিয়াবাদ থেকে এসেছিলাম। আমার বেড়ে ওঠা সেখানেই। ধোনি এসেছিল রাঁচি থেকে। আর আমি প্রথমে তার হয়েই খেলেছিলাম। আর পরবর্তীতে আমি দেশের হয়ে খেলি। আর এটাই আমাদের মধ্যে সম্পর্ক। আমাদের একসঙ্গে অনেক ফাইনাল খেলার নজির আছে। একসঙ্গে বিশ্বকাপেও খেলেছি। ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক ধোনি। তিনি একজন মহান অধিনায়কও। সবথেকে বড় কথা হলো তিনি অনেক বড় মনের মানুষ। মাঠ এবং মাঠের বাইরে তার মনুষ্যত্বের তুলনা হয় না। সব পরিস্থিতিই ঠান্ডা মাথায় সামলে নিতেন তিনি। ”
১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় রায়নার। ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেট দিয়ে ভারতীয় দলে অভিষিক্ত হন তিনি। এর পাঁচ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটেও অভিষিক্ত হন তিনি। আর নিজের অভিষেক টেস্ট ম্যাচেই সেঞ্চুরি করে নজরে আসেন । আন্তর্জাতিক একদিনের ক্রিকেটে ২২৬ টি ম্যাচ খেলে তিনি করেন ৫৬১৫ রান। টেস্ট ক্রিকেটে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮ টেস্ট ম্যাচে ৭৬৮ রান। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি করেছেন ১৬৫০ রান। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন সুরেশ রায়না।