সম্প্রতি ঘরের মাঠে দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ ২ – ০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার নজর এবার আগামী মাসে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে অজিরা। এমনকি পূর্ণ শক্তি নিয়ে ভারত সফরে আসতে চলেছে তারা। বিরাট, রোহিতদের আগে থেকেই হুশিয়ারি দিলেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুশিয়ারি দেন তিনি।
ভারতের বিপক্ষে পাঁচ জন স্পিনার নিয়ে খেলতে নামার কথা বলেছেন কামিন্স। ভারতীয়দের বিপক্ষে সব বিকল্প নিয়েই মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে অজিরা। দুইজন নিয়মিত স্পিনার ছাড়াও তিন জন পার্ট টাইম স্পিনারকেও রাখা হবে অস্ট্রেলিয়া দলে, এমন আভাসই দিয়েছেন কামিন্স। সংবাদ সম্মেলনে কামিন্স বলেন, ” ভারত শক্ত প্রতিপক্ষ। আমরা ভারতের মাটিতে জিততে চাই। তাই আমাদের দলে সব রকম বিকল্প থাকবে। আমাদের মাথায় আছে, বড় সিরিজ খেলতে নামছি। তাই হাতের সামনে সব বিকল্প খোলা রাখতে চাই, যেন জিততে সমস্যা না হয়। ”
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় এবং শেষ টেস্টে আশটন ২২ ওভারে ৫৮ রান দিলেও উইকেট পাননি। তবে ভারতের পিচে এই বাঁহাতি স্পিনার সুবিধা করতে পারে বলে ধারণা কামিন্সের। কামিন্স বলেন, ” এশিয়ার পিচ মূলত স্পিন নির্ভর। স্পিনাররা সেখানে বড় ফ্যাক্টর, অ্যাশ অবশ্যই ভারত সফরে দলে থাকছে। তৃতীয় টেস্ট সবার কাছে একটা প্রস্তুতি হিসেবে ছিল। ভারতের পিচের সাথে সিডনির উইকেটের পার্থক্য আছে, ভারতের থেকে এই উইকেট একটু আলাদা। ভারতের পিচে ঘূর্ণি পাওয়া যায়, সিডনির পিচে খুব বেশি ঘূর্ণি পাওয়া যাচ্ছিল না। ভারতীয় উইকেট মাঝেমাঝেই পিচের মাঝখান থেকে ভেঙে যায়। তাই ডানহাতি ব্যাটারদের ক্ষেত্রে বাঁহাতি অফস্পিনারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই ব্যাপারগুলো মাঠে নামার আগে অবশ্যই ভাবতে হবে “।
আগার ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার হাতে অন্য বিকল্পও আছে। কামিন্স বলেন, ” ভারতের মাটিতে ট্রেড ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। লায়নের থেকে ট্রেড একটু অন্য ধরনের স্পিন বোলার। ভারতীয়রা যে পিচে খেলতে অভ্যস্ত সেখানে ট্রেড সাহায্য পেতে পারে। ঘরের মাঠে ট্রেড যেভাবে পারফর্ম করেছে, তাতে আমি খুশি। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারনে ম্যাচে ওকে বেশি বল করাতে পারিনি। তবে আমি আশাবাদী ভারতের মাটিতে সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হতে যাচ্ছে “।
এই দুই স্পিনার ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার আরও তিন স্পিনার রয়েছে। ভারতের পিচের কথা মাথায় রেখেই এই বিকল্প অস্ট্রেলিয়ার। কামিন্স আরো বলেন, ” ভারতের মাটিতে আমরা ভালো করতে চাই৷ পিচের কথা মাথায় রেখে দু’জন স্পিনার নিতেই পারে নির্বাচকরা। এছাড়া ট্রেভিস, মার্নাস, স্মিথ বল করতে পারে। সাধারণত দুই স্পিনার নিলে পাঁচ দিন পর্যন্ত খেলা গড়ায় না। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই রাখছি, আমাদের কাছে আরও বিকল্প রয়েছে। আশা করি ভারতের মাটিতে আমরা ভালো করব “।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পয়েন্ট টেবিলে তারা আছে শীর্ষে। দুই নম্বরে আছে ভারত। দক্ষিন আফ্রিকা সিরিজ হারায় ভারতের জন্য সুবিধাই হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলেই এবার ভারতেরও ফাইনাল নিশ্চিত।
তবে জিততে না পারলে নানা সমীকরণের হিসাব নিকাশ করে ফাইনালের কথা ভাবতে হবে টিম ইন্ডিয়ার । ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারলে চেয়ে থাকতে হবে নিউজিল্যান্ড – শ্রীলঙ্কার সিরিজের দিকে। এখানে শ্রীলঙ্কা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারলে তবে ভারত ফাইনালে যেতে পারবে। আর যদি শ্রীলঙ্কা জিতে যায় তাহলে ফাইনালে উঠবে শ্রীলঙ্কা। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের এই সিরিজ ভীষন গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাক হাই ভোল্টেজ এই সিরিজে কারা জেতে?