ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (১ম ওডিআই) – হাইলাইটস
বৃষ্টির কারণে ম্যাচটা নেমে এসেছিল ৪০ ওভারে। সে ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ২৪৯ রানের বিশাল পুঁজি পায় সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে শ্রেয়াস আইয়ারের অর্ধশতক এবং সঞ্জু স্যামসনের অপরাজিত ৮৬ রানের ইনিংসও শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে পারেনি স্বাগতিক ভারত। ফলে ৯ রানের দুর্দান্ত এক জয় নিশ্চিত করে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
সফরকারীদের বিপক্ষে প্রথম ওডিআইতে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল ভারতের। এক ছক্কা ও তিন চার মিলিয়ে স্যামসন একাই তুলেছেন ১৯ রান, আর একটি ওয়াইড। শেষ ওভারে ২০ রান তুলে ভারত শেষ পর্যন্ত ৯ রানে হারলেও পাল্টা লড়াইয়ের জন্য প্রশংসা পাবেন স্যামসন। এই জয়ে বিশ্বকাপ সুপার লিগের স্কোর বোর্ডে আরও ১০ পয়েন্ট যোগ হল দক্ষিণ আফ্রিকার।
শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের কারণে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ওয়ানডে সিরিজেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখল সফরকারী প্রোটিয়ারা। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত।
ব্যাট করতে নেমে হেনরিক্স ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার এই দুজনের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ৪০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান। ৫ চার ও ৩ ছক্কায়, ৬৩ বলে ৭৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ডেভিড মিলার। এছাড়া হেনরিখ ক্লাসেন ৬৫ বলে অপরাজিত ৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খলেন। যেখানে তাঁর ইনিংসটি ৬টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে সজ্জিত ছিল।
এ ছাড়া ৪৮ রান করেন উইকেট রক্ষক ব্যাটার কুইন্টন ডি কক এবং ২২ রান করেন ওপেনার ইয়ানেম্যান মালান। ভারতের হয়ে সর্বাধিক ২টি উইকেট শিকার করেন পেসার শার্দুল ঠাকুর। এছাড়া একটি করে উইকেট তুলে নেন রবি বিষ্ণুয় এবং কুলদীপ যাদব।
২৫০ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি ম্যান ইন ব্লুরা। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের ছাড়াই এই সিরিজে মাঠে নামা ভারতের টপ অর্ডারে প্রথম চার ব্যাটসম্যান ৫১ রান তুলতেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। শিখর ধাওয়ান (১৬ বলে ৪), শুবমান গিল (৭ বলে ৩), ঋতুরাজ গায়কোয়ার’রা (৪২ বলে ১৯) বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি।
চারে নামা ইশান কিশানও ৩৭ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরেন। তবে ছয়ে নামা স্যামসনের দুটি জুটিতে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে টিকে ছিলে ভারত। পঞ্চম উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৫৪ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন স্যামসন। ৩৭ বলে ৫০ রান করা আইয়ার ২৭তম ওভারে আউট হওয়ার পর শার্দূল ঠাকুরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্যামসন। তাঁদের ৬৬ বলে ৯৩ রানের জুটিতে স্যামসনের অবদান ৩৫ বলে ৫২।
৩১ বলে ৩৩ রান করা শার্দূল স্রেফ এক প্রান্ত ধরে রেখেছেন, মূল লড়াইটা চালান স্যামসন। জয়ের জন্য শেষ তিন ওভারে ৪৬ রানের দূরত্বে থাকতেও জয়ের আশা ছিল ভারতের। কিন্তু ৩৮তম ওভারে প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিদি টানা দুই বলে শার্দূল ও কুলদীপকে তুলে নেওয়ার পর ম্যাচে হারের চোখ রাঙানি পাচ্ছিল ভারত।
শেষ উইকেটে রবি বিষ্ণুয়কে সঙ্গে নিয়ে ৮ বলে ২৫ রানের জুটি গড়েও ভারতকে জয় এনে দিতে পারেননি স্যামসন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করতে সক্ষম হয় ভারত। ৩ ছক্কা ও ৯ চারে, ৬৩ বলে ৮৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন স্যামসন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট তুলে নেন লুঙ্গি এনগিদি, এবং ২টি উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। এছাড়া কেশব মহারাজ, ওয়েন পার্নেল এবং তাবরিজ শামসি ১টি করে উইকেট শিকার করেন। দু:সাহসিক ইনিংস খেলে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন হেনরিখ ক্লাসেন।
আগামী রবিবার (৯ অক্টোবর) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রাঁচি’র জেএসসিএ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে এই দুই দল মুখোমুখি হবে।
ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা এর স্কোরবোর্ড
দক্ষিণ আফ্রিকা – ২৪৯/৪ (৪০.০)
ভারত – ২৪০/৮ (৪০.০)
ফলাফল – দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – হেনরিখ ক্লাসেন
ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের একাদশ
ভারত | শিখর ধাওয়ান (অধিনায়ক), সঞ্জু স্যামসন (উইকেট রক্ষক), শুবমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, ইশান কিশান, শার্দুল ঠাকুর, রবি বিষ্ণুয়, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ এবং আবেশ খান। |
দক্ষিণ আফ্রিকা | টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক (উইকেট রক্ষক), এইডেন মার্করাম, ইয়ানেম্যান মালান, হেনরিখ ক্লাসেন, ওয়েন পার্নেল, ডেভিড মিলার, কেশব মহারাজ, লুঙ্গি এনগিডি, কাগিসো রাবাদা এবং তাবরিজ শামসি। |