ভারত বনাম আফগানিস্তান (সুপার ৪, ম্যাচ ৫) – হাইলাইটস
আগেরদিনের ম্যাচেই ফাইনালে খেলার সব আশা শেষ করে ফেলেছে আফগানিস্তান। ভারতকে সঙ্গে নিয়েই বিদায় নিশ্চিত করেছে তারা। সুপার ফোরের বাকি যে দুই ম্যাচ আছে, এ দুটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতার।
তবুও, আফগানিস্তান এবং ভারত- সুপার ফোরে কোনো ম্যাচই জেতেনি তারা। যার ফলে শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে মর্যাদার। অন্তত একটি জয় নিয়ে হলেও দেশে ফিরতে চাইবে আফগান এবং ভারতীয়রা।
সে লক্ষ্যেই গতকাল দুবাইতে মুখোমুখি হয়েছে এ দুই দল এবং শুরুতে কয়েন নিক্ষেপে জিতলেন আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। টস জিতেই স্বাভাবিকভাবেই ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি এবং ব্যাট করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন লোকেশ রাহুল এবং বিরাট কোহলি। আফগানদের পেয়ে দারুণভাবে জ্বলে উঠলেন বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুল। তাদের ব্যাটে বড় স্কোরের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল ভারত।
উদ্বোধনী জুটিতে ১১৯ রান তুলেছেন কোহলি এবং লোকেশ রাহুল। কিন্তু ৪১ বলে ৬২ রান করার পর আউট হয়ে যান লোকেশ রাহুল। ৬টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। এরপর সূর্যকুমার যাদব মাঠে নেমে একটিমাত্র ছক্কা মেরেই বোল্ড হয়ে যান ফরিদ আহমেদের বলে। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের।
কারন আর কোনো উইকেট পড়লো না। রিশাভ পান্তকে নিয়ে ৮৭ রানের জুটি গড়েন কোহলি। এর মধ্যে ২০ রান কেবল পান্তের। বাকিগুলো সব কোহলির।
১০২১ দিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন কোহলি। শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই প্রথম কোনো সেঞ্চুরি করলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬১ বলে ১২২ রানে অপরাজিত থাকলেন কোহলি। ১২টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৬টি ছক্কার মারও মেরেছেন তিনি।
যে কোনো ফরম্যাটে তিন বছরেরও বেশি সময় পর তিন অংকের ঘরে প্রবেশ করলেন কোহলি। এই সেঞ্চুরির সঙ্গে রিকি পন্টিংকেও ছুঁয়ে ফেললেন কোহলি। সব ফরম্যাট মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক পন্টিংয়ের সেঞ্চুরি ৭১টি। কোহলিরও হলো ৭১টি সেঞ্চুরি। এবার তার সামনে রয়েছেন কেবল শচিন টেন্ডুলকার। যার সেঞ্চুরির সংখ্যা ১০০টি। বিরাট কোহলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে আফগানিস্তানকে ২১৩ রানের বিশাল লক্ষ্য বেধে দিয়েছে ভারত।
বিরাট কোহলিদের করা ২১২ রানের বিশাল স্কোর তাড়া করতে নেমে ১১১ রানে থেমে গেছে আফগানিস্তানের ইনিংস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১১ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানরা।
২১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপদে পড়ে আফগানিস্তান। টপ অর্ডার ইব্রাহিম জাদরান একাই লড়াই করলেন ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে। একাই ৫৯ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভারতীয় বোলাররা তাকে আউটও করতে পারেনি।
রশিদ খান ১৫ এবং মুজিব-উর রহমান করেন ১৮ রান। এছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি করিম জানাত(২), মোহাম্মদ নবী(৭), আজমতুল্লাহ ওমরজাই(১), এবং ফরিদ আহমদ মালিক(১)। শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৩জন হযরতুল্লাহ জাজাই, নাজিবুল্লাহ জাদরান, রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ভুবনেশ্বর কুমার একাই নেন ৫ উইকেট। ৪ ওভারে ১ মেডেন এবং মাত্র ৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেয়ার দুর্লভ কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। ক্যারিয়ারে এটাই তার সেরা বোলিং। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আর্শদিপ সিং, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং দিপক হুদা।
ভারত বনাম আফগানিস্তান এর স্কোরবোর্ড
ভারত – ২১২/২ (২০.০)
আফগানিস্তান – ১১১/৮ (২০.০)
ফলাফল – ভারত ১০১ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – বিরাট কোহলি
ভারত বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের একাদশ
ভারত | কেএল রাহুল (অধিনায়ক), ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, বিরাট কোহলি, দিনেশ কার্তিক, দীপক হুডা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল, দীপক চাহার, আরশদীপ সিং, ভুবনেশ্বর কুমার |
আফগানিস্তান | মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), হযরতুল্লাহ জাজাই, নাজিবুল্লাহ জাদরান, ইব্রাহিম জাদরান, রশিদ খান, করিম জানাত, মুজিব উর রহমান, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, ফজলহক ফারুকী, ফরিদ আহমদ মালিক |