অতীতের ক্রিকেটের তুলনায় বর্তমানের ক্রিকেটে এখন দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি – টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট এখন বেশ দাপট দেখাচ্ছে। ক্রিকেটারদেরও ছোট ফরম্যাটের এই ক্রিকেটের দিকে বেশি ঝুঁকতে দেখা যায়। আর টি – টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের এমন বিস্তার বিশ্ব ক্রিকেটে গণতন্ত্রায়নের চিহ্ন বলে মনে করছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। তার মতে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ এখন কেউ করে না। এমনকি ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ এখন ভারতের হাতে নেই বলেও মনে করেন তিনি।
সম্প্রতি মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের ( এমসিসি ) এক বক্তৃতায় ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এমন মন্তব্য করেন। এমসিসি প্রতিবছরই ক্রিকেটের সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর বক্তৃতার আয়োজন করে। আর সেখানেই বক্তৃতা দেন তিনি। লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এমসিসির কার্যালয়ে সপ্তম ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে মূল আলোচক ছিলেন স্ট্রাউস। ভারতীয় ক্রিকেট বাজার বেশ বড় থাকায় একটা সময় মনে করা হতো ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু এখন যুগ বদলেছে। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে নেই বলে দাবি করেন স্ট্রাউস।
তিনি বলেন, ” আগে কিছু নির্দিষ্ট ব্যাপার ছিল। যেটার কারণে ধারণা করা হতো ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ নির্দিষ্ট কারো হাতে। সেটা হতে পারে লর্ডসের এই কক্ষ। সেটা হতে পারে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের বারান্দা অথবা অন্য কোনো জাতীয় দলের ক্রিকেট বোর্ড। অথবা কোনো কাউন্টি ক্রিকেটের কথাও বলা যায়। যারা অন্যদের চেয়ে অগ্রাধিকার পেত। কিন্তু এখন আর এসব ব্যাপার নেই। এখন আর নির্দিষ্ট কেউই ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ করে না। এমনকি ভারতের হাতেও ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রন নেই। “
ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, ” ক্রিকেটের এখন বিস্মায়ন চলছে, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। খেলাটার সাথে প্রচুর মানুষ যুক্ত হচ্ছে। যে কারণে প্রচুর পরিবর্তনও এসেছে এখানে। চারপাশের এত পরিবর্তনশীল বিষয় এবং হাঁকডাকের কারণে ক্রিকেট আর আগের মত নেই। ক্রিকেটে এখন গণতন্ত্রায়ন ঘটেছে। সামনে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ কিন্তু আইসিসি করবে না। দুবাইয়ের এই হলরুমের ওপর খেলাটির ভবিষ্যৎ আর নির্ভরশীল নেই। এটি নির্ভরশীল তাদের ওপর যারা খেলাটি অনুসরণ করে তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর। ”
উল্লেখ্য, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড এবং অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডকে আসলে একটা সময় প্রভাবশালী মনে করা হতো। জনপ্রিয়তার কারণে আইসিসির আয়ের সিংহভাগ আয়ও এখান থেকেই আসে বলে এখনও মনে করা হয়। যে কারণে ক্রিকেটের ওপর তাদের প্রভাবটাও বেশি বলে ধরা হয়। কিন্তু ক্রিকেটের হাওয়া বদলে যাওয়ার কারণে আগের সেই ধারনা ভুল বলে মনে করেন স্ট্রাউস।