২০১৪ সালের শেষ মুহূর্তে এসে অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে হঠাৎ করেই বিরাট কোহলির ঘাড়ে চাপে ভারতীয় টেস্ট দলের নেতৃত্ব। এরপর ২০১৫ সালের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবেই ভারতীয় টেস্ট দলের দায়িত্ব নেন বিরাট কোহলি।
এরপর এক আক্রমণাত্মক অধিনায়ককে দেখলো টেস্ট ক্রিকেট বিশ্ব। ২০১৫ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত– টানা সাতটি বছর ভারতীয় টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কোহলি। অবশেষে হঠাৎ করেই ভারতীয় টেস্ট দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
গত টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ করেই ভারতীয় টি20 দলের নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন বিরাট কোহলি। তারপর বহু বিতর্কের মাঝেই ওয়ানডে অধিনায়কের পদ থেকেও সরানো হয় তাকে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ হারের ঠিক পরের দিনই আচমকা টেস্টের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিলেন কোহলি।
তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারত তার নেতৃত্বে আইসিসির কোনো শিরোপা জিততে না পারলেও টেস্ট ক্রিকেটে পরিসংখ্যানের দিক থেকে অন্তত কোহলির আশেপাশে নেই ভারতের অন্য কোনো অধিনায়ক। ৬৮টি টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে ৪০টি ম্যাচে জয় (ঘরের মাঠে ২৪টি ও বাইরের মাঠে ১৬টি) এনে দিয়েছেন কোহলি। এর মধ্যে ১১টি ড্র এবং ১৭টি ম্যাচ হেরেছে কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল।
ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট ম্যাচে জয়ের বিচারে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন যথাক্রমে মহেন্দ্র সিং ধোনি (৬০ ম্যাচে ২৭টি জয়) এবং সৌরভ গাঙ্গুলি (৪৯ টেস্টে ২১টি জয়)। কোহলির জয়ের হার ৫৮.৮২%। যা মহেন্দ্র সিং ধোনি (৪৫%) কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিদের (৪২.৮৫%) চেয়েও বেশি।
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে ম্যাচ জয়ের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন বিরাট কোহলি। প্রথমে আছেন গ্রায়েম স্মিথ (১০৯ ম্যাচে ৫৩টি), ২য় সর্বোচ্চ রিকি পন্টিং (৭৭ ম্যাচে ৪৮টি) এবং তৃতীয় স্থানে আছেন স্টিভ ওয়াহ (৫৭ ম্যাচে ৪১টি)। প্রসঙ্গতঃ কোহলিই প্রথম এশিয়ান অধিনায়ক যিনি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়েছেন।
কোহলির অধীনেই টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল ভারত। তবে, আইসিসি প্রবর্তিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে তাদের শিরোপা বঞ্চিত থাকতে হয়। অধিনায়কত্বের ফলে যে তার ব্যাটিং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, এমনটা কিন্তু নয়। গত দুই বছরে একটিও আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি না করলেও ৫৪.৮ গড়ে মোট ৫৮৬৪ টেস্ট রান করেছেন কোহলি।