বাংলাদেশ বনাম ভারত (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস
গতকাল চট্টগ্রামে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বিশাল এক লক্ষ্য দাড় করায় ভারত। পড়ে সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে সিরিজ জিতে শেষ ম্যাচে হারেন তারা। অন্য দিকে শেষ ম্যাচে জয় নিয়ে হোয়াইটওয়াশ থেকে বেচে যায় ভারত। এছাড়া ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে ভারতের হয়ে ইশান কিষাণ জিতেন ম্যাচ সেরার খেতাব ও বাংলাদেশের হয়ে সিরিজ সেরার খেতাব জিতে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পান মেহেদি হাসান মিরাজ। নিজের প্রথম বলে এলবিডব্লিউয়ে ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ শিখর ধাওয়ানকে (৩)।
এরপর বড় জুটি গড়ে তোলেন কিশান আর কোহলি। ইনিংসের ১৯ আর ২০তম ওভারে দুজনেরই আউটের সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একটি উইকেট ও পাননি বাংলাদেশ। ১৫ রানে ভারত প্রথম উইকেট হারানোর পর কিশান-কোহলি মিলে গড়েন ১৯০ বলে ২৯০ রানের বিধ্বংসী জুটি। এর মধ্যে বেশি ভয়ংকর ছিলেন কিশান।
৮৫ বলে ঝোড়ো সেঞ্চুরি করা এই বাঁহাতি ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটিকে রূপ দিয়েছেন ডাবলে, ১২৬ বলেই। যেটি কিনা ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড। শেষতক এই ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন আহমেদ। ১৩১ বলে ইশানের ২১০ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে ছিল ২৪টি চারের সঙ্গে ১০টি ছক্কার মার।
এরপর টানা দুই ওভারে আইয়ার আর রাহুলকে আউট করেন এবাদত। ৩ রান করে আইয়ার হন লিটন দাসের ক্যাচ, লোকেশ রাহুলকে (৮) বোল্ড করেন টাইগার পেসার।
কোহলি তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি, চতুর্থ বাংলাদেশের বিপক্ষে। ভারতীয় ব্যাটিং স্তম্ভকে শেষতক মিরাজের ক্যাচ বানান সাকিব। ৯১ বলে কোহলির ১১৩ রানের ইনিংসে ছিল ১১ চার আর ২ ছক্কা।শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ১৭ বলে ২০ আর ওয়াশিংটন সুন্দর ২৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে ৪০৯ রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত।
বাংলাদেশের এবাদত হোসেন, সাকিব আল হাসান আর তাসকিন আহমেদ নেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান আর মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার একটি করে উইকেট।
৪১০ রানের লক্ষ্য। ব্যাট করতে নামার আগে এমনিতেই হেরে বসেছিলো যেন বাংলাদেশ। তবুও বড় রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটারদের কাছ থেকে যে দায়িত্বশীল ব্যাটিং আশা করেছিলো সবাই, তার ছিটেফোটাও দেখা গেলো না।
বরং, একের পর এক উইকেট হারিয়ে ৩৪ ওভারে ১৮২ রান তুলতেই অলআউট হয়ে গেলো বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যার ফলে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় বরণ করে নিতে হলো টাইগারদের। ভারতের ওপেনার ইশান কিশান একা যে রান (২১০) তুললো, তার চেয়েও ২৮ রান কম করেছে পুরো বাংলাদেশ দল।
সাকিব আল হাসান সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন। ২৯ রান করেন লিটন দাস। ইয়াসির আলী রাব্বি ২৫ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হন ২০ রান করে। শেষ দিকে তাসকিন আর মোস্তাফিজের দৃঢ়তা পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমিয়েছিলো শুধু। তাসকিন অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে। ২টি ছক্কা মারেন তিনি। ১৩ রান করে আউট হন মোস্তাফিজ। এছাড়া এনামুল হক করেন ৮ রান, মুশফিকুর রহিম করেন ৭ রান, আফিফ হোসেন করেন ৮ রান, মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ৩ রান, ও এবাদত হোসেন মারেন গোল্ডেন ডাক।
ভারতের হয়ে ৩ উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর, ২টি করে উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল এবং উমরান মালিক। ১টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদিপ যাদব এবং ওয়াশিংটন সুন্দর।
বাংলাদেশ বনাম ভারত এর স্কোরবোর্ড
ভারত – ৪০৯/৮ (৫০.০)
বাংলাদেশ – ১৮২/১০ (৩৪.০)
ফলাফল – ভারত ২২৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ইশান কিষাণ
প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – মেহেদী হাসান মিরাজ
বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচের একাদশ
বাংলাদেশ | লিটন দাস (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, এনামুল হক, মাহমুদউল্লাহ, ইয়াসির আলী, মেহেদি হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদ। |
ভারত | কেএল রাহুল (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), ইশান কিশান, শিখর ধাওয়ান, শ্রেয়াস আইয়ার, বিরাট কোহলি, অক্ষর প্যাটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব, শার্দুল ঠাকুর, ওমরান মালিক, মোহম্মদ সিরাজ |