বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান (১ম টি২০) – হাইলাইটস
বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপ ম্যাচের আগে আজ ৭ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডে শুরু হয়েছিল বাংলা ওয়াশ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। সে বাংলা ওয়াশ ত্রিদেশীয় ক্রিকেট সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ভাল একটি লক্ষ্য দাড় করায় পাকিস্তান। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় লক্ষ্যে পৌছাতে পারেন নেই বাংলাদেশ। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। পাকিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের সঙ্গে টস করতে নামেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। শুরুতেই কয়েন নিক্ষেপে জয় লাভ করেন সোহান এবং টস জিতেই ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি, এবং ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে।
বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটি দাঁড়াতে না পারলেও রিজওয়ান একাই যথেষ্ট হয়ে গেলেন পাকিস্তানের জন্য। তার ব্যাটে চড়েই বাংলাদেশের সামনে ১৬৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দেখে শুনেই ব্যাট করতে থাকেন বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। অনেক চেষ্টার পর ৮ম ওভারের প্রথম বলে এসে সাফল্যের দেখা পান অধিনায়ক সোহান। উদ্বোধনী জুটিতে ৫২ রান তোলার পর মিরাজের বলে বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি। ২৫ বলে ২২ রান করেন বাবর আজম। বাবর আজম আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি বেধে ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন শান মাসুদ। কিন্তু নাসুম আহমেদের বলে ২২ বলে ৩১ রান করে ক্যাচ আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৪টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার মারেন মাসুদ।
হায়দার আলি ব্যাট করতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৬ বলে ৬ রান করেন মাত্র। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসান মাহমুদের বলে আফিফ হোসেন ধ্রুবর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইফতিখার। ৮ বলে তিনি করেন ১৩ রান। এরপর আসিফ আউট হলেন মাত্র ৪ রান করে। মোহাম্মদ নওয়াজ অপরাজিত থাকলেন ৮ রান করে।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫০ বল মোকাবেলা করে ৭৮ রান করেছেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে কেবল তাসকিনই পেলেন ২ উইকেট। মিরাজ, হাসান মাহমুদ এবং নাসুম আজমেদ পেলেন ১টি করে উইকেট।
১৬৮ রান খুব বেশি বড় লক্ষ্য নয়। উইকেট ধরে রেখে রানের চাকা ঠিক রাখতে পারলে জয় সম্ভব। সে লক্ষ্য নিয়েই শুরুতে ব্যাট করেছিলেন দুই মেকশিফট ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাব্বির রহমান। দু’জনের জুটিতে ২৫রানও উঠে গিয়েছিল। কিন্তু ১১ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রায় একই ভুল করে আউট হলেন সাব্বির রহমানও। ১৮ বলে ১৪ রান করেন তিনি।
দুই ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাব্বির রহমান- ১২ রানের ব্যবধানে বিদায় নেয়ার পর জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন লিটন-আফিফ। দু’জনের ব্যাটে ৫০ রানের জুটিও গড়ে ওঠে। ২ উইকেটে ৩৭ রান থেকে ৮৭ রানে নিয়ে যান তারা দলীয় স্কোরকে। কিন্তু এ সময়ই ঘটে বিপর্যয়। পাকিস্তানি স্লো বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজের পরপর দুই বলে উইকেট হারান লিটন দাস (৩৫) এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (০)।
২৩ বলে ২৫ রান করে শাহনাওয়াজ ধানির বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৯ বল খেলে ৮ রান করে বিদায় নেন নুরুল হাসান সোহান। ১৯তম ওভারেও পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২ রান করে তাসকিন এবং পরের বলেই আউট হয়ে যান নাসুম আহমেদ।
শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমে যায় ২১ রান দুরে থাকতে, ১৪৬ রানে। ২১ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির আলী রাব্বি। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
পাকিস্তানের হয়ে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ২ উইকেট নেন মোহাম্মদ নওয়াজ এবং ১টি করে উইকেট নেন শাহনাওয়াজ ধানি, হারিস রউফ এবং শাদাব খান।
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান এর স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ – ১৪৬/৮ (২০.০)
পাকিস্তান – ১৬৭/৫ (২০.০)
ফলাফল – পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – মোহাম্মদ রিজওয়ান
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ম্যাচের একাদশ
বাংলাদেশ | নুরুল হাসান (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী, লিটন দাস, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান |
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), হায়দার আলী, শান মাসুদ, আসিফ আলী, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাদাব খান, হারিস রউফ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, শাহনওয়াজ দাহানি |