পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ (৬ষ্ঠ টি২০) – হাইলাইটস
ত্রিদেশীয় সিরিজের ৬ষ্ঠ ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বেশ বড়সড় এক লক্ষ্য দাড় করায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের এর মাত্র ১ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌছায় পাকিস্তান। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশের। সেই সাথে পাকিস্তানের হয়ে ভাল ব্যাটিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। অন্যদিকে আগামিকাল ফাইনাল খেলবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।
ফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে আগের ম্যাচেই। অবশেষে জ্বলে উঠলো বাংলাদেশের ব্যাটিং। বার্থডে বয় লিটন দাস আর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের জোড়া ফিফটিতে ভর করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে টাইগাররা।
ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান তুলতে পারে টাইগারা। ৯ বল খেলে রানের খাতা খোলেন শান্ত। এর মধ্যে উইকেট বিলিয়ে দেন সৌম্য সরকার (৪ বলে ৪)। তাকে ওপেনিংয়ে তুলে আনার সিদ্ধান্ত কাজে লাগেনি।
নাজমুল হোসেন শান্তর প্রতিভায় পাহাড়সমান আস্থা টিম ম্যানেজমেন্টের। তবে সেই আস্থার প্রতিদান তিনি দিতে পারছেন খুব কমই। এবার ১৫ বল খেলে করলেন ১২ রান। এরপর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান আর লিটন দাস। তৃতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৮৮ রানের এক ঝোড়ো জুটি গড়েন তারা। অবশেষে এই জুটিটি ভাঙে লিটনের আউটে।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে মোহাম্মদ নওয়াজকে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ উঠে যায় লিটনের। ৪২ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারসেরা ৬৯ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন লিটন। ৩১ বলে ফিফটি পূরণ করেছিলেন তিনি।
এরপর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিফটি করেছিলেন ৩৩ বলে, এবারও সমান বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন টাইগার দলপতি। ইনিংসের ১০ বল বাকি থাকতে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন সাকিব। ৪২ বলে গড়া তার ৬৮ রানের ইনিংসে ৭টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছক্কার মার।
এরপর ইয়াসির আলি আউট হন মাত্র ১ করে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা শেষ ওভারে ১০ বলে ১১ রানে রানআউট হন আফিফ হোসেন ধ্রুব।
পাকিস্তানের পক্ষে নাসিম শাহ আর মোহাম্মদ ওয়াসিম নেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ নওয়াজ নেন ১টি উইকেট।
সহজ ক্যাচ ড্রপ, ফিল্ডিং মিস এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের লাগামহীন বোলিং। সবমিলিয়ে হাতে থাকা এক ম্যাচ পাকিস্তানকে দিয়ে দিলো বাংলাদেশ। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর শেষ ওভারে এসে হেরে গেছে সাকিব আল হাসানের দল। পাকিস্তান জিতেছে ৭ উইকেট আর ১ বল হাতে রেখে।
পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ১৭৪ রান। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৪৬ রান তোলে তারা। বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে এরপরও হাত খুলে খেলতে দেননি সাকিব-শরিফুলরা। ১০ ওভারে মাত্র ৭৩ তুলতে পারে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের রান তাড়ায় চাপ বাড়ছিল ক্রমশ। শেষ ১০ ওভারে ১০১ রান দরকার পড়ে তাদের। সেই চাপ কমাতেই ঝুঁকি নিয়ে ছক্কা হাঁকাতে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু ফাইন লেগে একদম সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সাইফউদ্দিন। পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে ‘নো‘সহ তিনি দেন ১৯ রান। তাতেই পাকিস্তানের চাপ কমে যায় অনেকটা।
তবে পরের ওভারে হাসান মাহমুদ জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে ফের বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান। ৪০ বলে বাউন্ডারিতে ৫৫ করে ডিপ কভারে ক্যাচ হন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর। এর এক বল পর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে হায়দার আলিকে বোল্ড করেন হাসান।
৩৩ রানে জীবন পাওয়া রিজওয়ান ৪২ বলে পূরণ করেন ফিফটি। তিনিই ম্যাচ অনেকটা হাতে নিয়ে আসেন পাকিস্তানের। শেষ দুই ওভারে ১৪ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের। ১৯তম ওভারে সৌম্য সরকার আউট করেন রিজওয়ানকে (৫৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৬৯)। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচ বলতে গেলে শেষ। এছাড়া ৫ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ২০ বলে ৪৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নওয়াজ।
পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ১৭৭/৩ (১৯.৫)
বাংলাদেশ – ১৭৩/৬ (২০.০)
ফলাফল – পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – মোহাম্মদ রিজওয়ান
পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), শাদাব খান, শান মাসুদ, হায়দার আলী, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নওয়াজ, আসিফ আলী, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মোহাম্মদ হাসনাইন |
বাংলাদেশ | সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, ইয়াসির আলী, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ। |