পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড (১ম টেস্ট) – হাইলাইটস
২৬ই ডিসেম্বর করাচিতে ২টি টেস্ট সিরিজের ১ম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। ঐ ম্যাচে ১ম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে রানের এক পাহাড় দাড় করিয়ে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। এরপর সেই ট্রায়েল নিয়ে ১ম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো পরিমান লিড সহ ইনিংস ঘোষণা করেন নিউজিল্যান্ড। ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে বুঝে শুনে খেলেও বিশাল টার্গেট তৈরী করতে পারেন নেই পাকিস্তান। এরপর সেই কম লক্ষ্য নিয়ে ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ম দিন শেষ হয়ে যাওয়ায় এত কষ্টের পরও ড্র হয় ১ম টেস্ট । ফলে শেষ টেস্টের উপর নির্ভর করছে সিরিজ জিতবে কারা। এছাড়া ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন কেন উইলিয়ামসন।
ইংল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। করাচীতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনই টেস্টের নিয়ন্ত্রন পাকিস্তানের হাতে ছিল। বিশেষ করে অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাটিং তাণ্ডবে বড় স্কোরের পথেই ছিল পাকিস্তান। প্রথম দিনই অপরাজিত থাকেন তিনি ১৬১ রান নিয়ে। পাকিস্তানের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৩১৭ রান। দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে আগের দিনের সঙ্গে আর কোনো রানই যোগ করতে পারেননি বাবর। সেই ১৬১ রানেই আউট হয়ে যান। পাকিস্তান বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছে আর ১২১ রান মাত্র। এর মধ্যে আগা সালমান একাই করেছেন ১০০ রান। ১৫৫ বলে ১০৩ রান করে আউট হন সালমান। এছাড়া সরফরাজ আহমেদ করেছেন ১৫৩ বলে ৮৬ রান। শেষে ১৬ রান এক্সট্রা সহ ১০ উইকেট হারিয়ে ৪৩৮ রান করেন পাকিস্তানরা।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩ উইকেট নেন টিম সাউদি। ২টি করে উইকেট নেন অ্যাজাজ প্যাটেল, মাইকেল ব্রেসওয়েল এবং ইস শোধি। ১ উইকেট নেন নেইল ওয়েগনার।
পাকিস্তানের করা ৪৩৮ রানের জবাবে কিউইরা ৯ উইকেট হারিয়ে ৬১২ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম ল্যাথাম এবং ডেভন কনওয়ে যেভাবে সূচনা করেন, তাতেই বোঝা যায় সফরকারীরাও অনেক দুর যাবে। উদ্বোধনী জুটিতেই উঠে যায় ১৮৩ রান। ৯২ রান করে ডেভন কনওয়ে আউট হয়ে যাওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন উইলিয়ামসন। ২০০ রানে অপরাজিত থেকে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়েন তিনি। ৬৫ রান করেন ইস শোধি। ৪৭ রান করেন টম ব্লান্ডেল এবং ৪২ রান করে ড্যারিল মিচেল। ১১৩ রান করে আউট হয়েছিলেন ওপেনার টম ল্যাথাম।
পাকিস্তানের হয়ে ৫ উইকেট নেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকেই দুর্দান্ত বোলিং করা লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ। ৩ উইকেট নেন নৌমান আলি। ১ উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।
১৭৪ রান পিছিয়ে থেকে ২য় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ৩১১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। ৯৬ রান করে আউট হয়ে যান ওপেনার ইমাম-উল হক। ৫৩ রান করেন সরফরাজ আহমেদ এবং ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন শাকিল।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৬টি উইকেট নেন ইস শোধি। এছাড়া ২টি উইকেট নেন মাইকেল ব্রেসওয়েল।
নিউজিল্যান্ডের জন্য মাত্র ১৩৮ রানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রীতিমত টি–টোয়েন্টি স্টাইলে খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। ৭.৩ ওভার খেলে ১ উইকেট হারিয়ে তারা তুলে ফেলেছিলো ৬১ রান। কিন্তু দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করলেও সময়ের সঙ্গে আর কুলায়নি তারা। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় নিষ্প্রাণ ড্র মেনে নেয়া ছাড়া আর উপায় ছিল না কিউইদের। ২৪ বলে ৩৫ রান করেন টম ল্যাথাম। ১৬ বলে ১৮ রান করেন ডেভন কনওয়ে। মিচেল ব্রেসওয়েল ওপেন করতে নেমে ৩ রানে আউট হন।
পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান (১ম ইনিংস) – ৪৩৮/১০ (১৩০.৫)
নিউজিল্যান্ড (১ম ইনিংস) – ৬১২/৯ ডি (১৯৪.৫)
পাকিস্তান (২য় ইনিংস) – ৩১১/৮ ডি (১০৩.৫)
নিউজিল্যান্ড (২য় ইনিংস) – ৬১/১ (৭.৩)
ফলাফল – ম্যাচ ড্র
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – কেন উইলিয়ামসন
পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), সরফরাজ আহমেদ (উইকেটরক্ষক), ইমাম-উল হক, আবদুল্লাহ শফিক, সৌদ শাকিল, শান মাসুদ, নওমান আলী, আগা সালমান, আবরার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মীর হামজা |
নিউজিল্যান্ড | টিম সাউদি (অধিনায়ক), টম ব্লান্ডেল (উইকেটরক্ষক), ডেভন কনওয়ে, টম ল্যাথাম, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, মাইকেল ব্রেসওয়েল, ড্যারিল মিচেল, নীল ওয়াগনার, ইশ সোধি, আজাজ প্যাটেল |