BJ Sports – Cricket Prediction, Live Score

ক্রিকেট হাইলাইটস, ০৩ নভেম্বর: আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ – ম্যাচ ৩৬ (পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা)

Cricket Highlights, 03 Nov: ICC T20 World Cup 2022 – Match 36 (PAK vs SA)

পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (ম্যাচ ৩৬) – হাইলাইটস

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেরদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়ে সেমি-ফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার সিডনিতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৩৩ রানের জয় পেয়েছে বাবর আজম’রা।

ব্যাটে বলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন শাদাব খান। ব্যাট হাতে ২২ বলে ৫২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলার পর বল হাতে ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন তিনি। এই জয়ে সহ ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান এখন পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ভারত।

প্রথম ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওয়েন পার্নেলকে চার মারার পরেই বোল্ড হয়ে যান ইনফর্ম মোহাম্মদ রিজওয়ান (৪)। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক বাবর আজমও। ধরে খেলে ইনিংস এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু লুঙ্গি এনগিদিকে মারতে গিয়ে কাগিসো রাবাদার ক্যাচে পরিণত হন বাবর (১৫ বলে ৬)।

প্রাথমিক ধস সামলে অবশ্য পাকিস্তানকে বেশ কিছুটা এগিয়ে দেন মোহাম্মদ হারিস। চোট পাওয়া ফখর জামানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত মাঠে নামেন তিনি। শুরু থেকেই প্রোটিয়া পেসারদের ওপর আক্রমণ শুরু করেন তিনি। তবে বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি এই মারকুটে ব্যাটার। নর্কিয়া’র বলে আড়াআড়ি ভাবে ব্যাট চালাতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন হারিস (১১ বলে ২৮)।

৯৫ রানে পাঁচ উইকেট হারানো পাকিস্তান যে তবুও চ্যালেঞ্জিং স্কোরে পৌঁছাল, তার পিছনে রয়েছেন দুই ব্যাটার- ইফতিখার আহমেদ এবং শাদাব খান। এর মধ্যে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন শাদাব। তিনটি চার এবং চারটি ছয়ের সাহায্যে ২২ বলে ৫২ রান করেন তিনি।

আর ইফতিখার করেন ৩৫ বলে ৫১ রান। তিনটি চার এবং দু’টি ছয় হাঁকান তিনি। এই দুজনের ব্যাটেই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের জন্য ১৮৬ রানের বড় লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আনরিখ নর্কিয়া সর্বাধিক ৪টি উইকেট তুলে নেন।

যে রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ছন্দে থাকা কুইন্টন ডি’কক এবং রাইলি রুশো ফিরে যান শুরুতেই। ১৬ রানে ২ উইকেট পড়ে যায় প্রোটিয়াদের।

চলতি টুর্নামেন্টে খারাপ খেলার পর এই ম্যাচে ছন্দে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন টেম্বা বাভুমা। তবে তিনিও শাদাবের শিকার হয়ে ১৯ বলে ৩৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। একই ওভারে এইডেন মার্করামকেও (২০) সাজঘরে পাঠান এই পাক লেগ স্পিনার। আর ওই দু’টি উইকেটই মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর যখন ৯ ওভারে ৬৯, তখনই নামে বেরসিক বৃষ্টি। ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়ারদ্বয়। স্থানীয় সময় সাড়ে ৯টা পেরিয়ে যাওয়ায় ওভার যে কমবে, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে যে কঠিন লক্ষ্যমাত্রা থাকবে, সেটাও স্পষ্ট ছিল। এছাড়া ম্যাচ আর শুরু না হলে ১৫ রানে হারত তারা।

তবে খেলা পরে শুরু হওয়ায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বেশি উইকেট হারানোর কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রাটাও বেড়ে যায়। ম্যাচ কমে দাঁড়ায় ১৪ ওভারে। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ১৪২ রান। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে তাদের তুলতে হত ৭৩ রান।

হেনরিখ ক্লাসেন এবং ট্রিস্টান স্টাবস শুরুটা ভালোই করেছিলেন। প্রথম দু’ওভার থেকে প্রায় ৩০-এর কাছাকাছি রান তুলে নেয় তারা। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি প্রোটিয়ারা। পরের তিন ওভারে সবাই মারতে গিয়েই আউট হয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস থেমে যায় ১০৮ রানে।

ফলে ৩৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাবর আজমের দল। সেইসঙ্গে টিকে থাকল তাদের সেমিফাইনালে যাওয়ার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনাও। পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খান ছাড়াও শাহিন আফ্রিদি ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন নাসিম শাহ, হারিস রউফ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম।


পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা এর স্কোরবোর্ড

পাকিস্তান – ১৮৫/৯ (২০.০)

দক্ষিণ আফ্রিকা – ১০৮/৯ (১৪.০)

ফলাফল – পাকিস্তান ৩৩ রানে জয়ী – দ্বিতীয় ইনিংস কমিয়ে ১৪ ওভারে নিয়ে আসা হয়েছিল (ডি/এল পদ্ধতিতে) – লক্ষ্য ১৪২ রান

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – শাদাব খান



পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের একাদশ

পাকিস্তান বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেট রক্ষক), মোহাম্মদ হারিস, ইফতিখার আহমেদ, শান মাসুদ, শাদাব খান, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, এবং হারিস রউফ।
দক্ষিণ আফ্রিকা টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক (উইকেট রক্ষক), রাইলি রুশো, হেনরিখ ক্লাসেন, এইডেন মার্করাম, ট্রিস্টান স্টাবস, কাগিসো রাবাদা, ওয়েন পার্নেল, লুঙ্গি এনগিডি, তাবরিজ শামসি এবং আনরিখ নর্কিয়া।
Exit mobile version