পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড (১ম টি২০) – হাইলাইটস
১৭ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে নেমেই জয়ের দেখা পেয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ড। সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের দেয়া ১৫৮ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৪ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। ৪ ওভারে ২৪ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন অভিষিক্ত লুক উড।
করাচিতে টস জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ অধিনায়ক মঈন আলী। বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান দলকে এনে দেন দারুণ সূচনা। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৭ বলে ৮৫ রান তুলে ফেলে ম্যান ইন গ্রিনরা।
স্ট্রাইক রেট নিয়ে আলোচনায় থাকা বাবর, আদিল রশিদের গুগলিতে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ২৪ বলে ৩১ রান। তিনে সুযোগ পাওয়া হায়দার আলী ১৩ বলে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে মাঝে স্বাগতিকদের ভালোভাবেই চেপে ধরেন ইংলিশ বোলাররা। ফলে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার খেই হারিয়েছে আরও একবার।
একদিকে ইনিংস ধরে রেখেছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, তবে ১৫তম ওভারে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মঈন আলীর বলে স্টাম্পড হয়ে তিনি ৪৬ বলে ৬৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। রিজওয়ানের ইনিংসে ছিল ৬টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কার মার।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর খুব একটা জ্বলে উঠতে পারেননি পরের ব্যাটাররা। একমাত্র ইফতিখার আহমেদের ১৭ বলে ২৮ রানের ইনিংস ছাড়া বাকিদের আর কেউ দুই অঙ্কের স্কোর স্পর্শ করতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে শান মাসুদ করেন ৭ বলে ৭ রান। মঈনকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে মাত্র একটি চার হাঁকাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। পরে রশিদকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তিনি ক্যাচ আউট হন।
মিডল-অর্ডারের ব্যর্থতায় শেষ ১০ ওভারে ৭১ রানের বেশি তুলতে পারেনি পাকিস্তান। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানে থেমে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে লুক উড ছাড়াও আদিল রশিদ ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া স্যাম কুরান ও মঈন আলী ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
রান তাড়া করতে নেমে ফিল সল্ট ও অ্যালেক্স হেলসের নতুন ওপেনিং জুটিতে ওঠে ১৯ রান, ১০ বলে ১০ রান করে শাহনওয়াজ ধানী’র বলে ডিপ স্কয়ার লেগে হায়দারের হাতে ক্যাচ দেন সল্ট। তাতে অবশ্য পাওয়ারপ্লেতে রানের গতি মন্থর হয়নি ইংল্যান্ডের, ৬ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে তারা সংগ্রহ করে ৪৭ রান। এর পরপরই ১৫ বলে ২০ রান করা ডেভিড মালানকে সাজঘরে ফেরান উসমান কাদির।
ইংল্যান্ডের পরের উইকেটটিও তুলে নেন পাকিস্তান এই লেগ স্পিনার। ১৭ বলে ২১ রান করে এলবিডব্লু হন প্রায় সাড়ে তিন বছর পর এ সংস্করণে নামা বেন ডাকেটও। এর আগেই অবশ্য ব্যক্তিগত ২৮ রানে মাসুদের হাতে ওয়াইড লং অনে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান হেলস।
হ্যারি ব্রুকের সঙ্গে হেলসের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ওঠে ৩৫ বলে ৫৫ রান। হারিস রউফকে চার মেরে ৩৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন হেলস, যেখানে ছিল ৭টি চারের মার। যদিও ঠিক তার পরের বলেই তিনি প্যাভিলিয়নে ফিরেন।
তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি সফরকারীদের। সেটি হতে দেননি ব্রুকই। ২৫ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি, মঈনকে (৯) সাথে নিয়ে ৪ বল বাকি থাকতেই নিশ্চিত করেন জয়। ১৭ বছর পর পাকিস্তান সফরে যাওয়া ইংল্যান্ড প্রথম ম্যাচটিই তাই স্মরণীয় করে রাখল, যেটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে হেলস-উডের জন্যও।
পাকিস্তানের হয়ে উসমান কাদির সর্বাধিক ২টি এবং হারিস রউফ ও শাহনওয়াজ ধানী ১টি করে উইকেট তুলে নেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সিরিজের ২য় ম্যাচে এই দুই দল একই সময় ও একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে।
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ১৫৮/৭ (২০.০)
ইংল্যান্ড – ১৬০/৪ (১৯.২)
ফলাফল – ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – লুক উড
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেট রক্ষক), শান মাসুদ, হায়দার আলী, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নওয়াজ, খুশদিল শাহ, উসমান কাদির, নাসিম শাহ, হারিস রউফ, এবং শাহনওয়াজ ধানী। |
ইংল্যান্ড | মঈন আলী (অধিনায়ক), ফিলিপ সল্ট (উইকেট রক্ষক), অ্যালেক্স হেলস, ডেভিড মালান, হ্যারি ব্রুক, বেন ডকেট, স্যাম কুরান, লুক উড, ডেভিড উইলি, আদিল রশিদ এবং রিচার্ড গ্লিসন। |