পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড (ফাইনাল) – হাইলাইটস
রবিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ মহারনে বিশ্বকাপ নিজেদের করে নেওয়ার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড। ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড বোলারদের দারুন বোলিং-এর সম্মুখীন হয়ে লড়াকু একটি পুঁজি দাড় করায় পাকিস্তান। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড এবং ২য় বারের মত বিশ্বকাপ করে নেয় নিজেদের। সেই সাথে যাদের ফাইনালে উঠার-ই কথা ছিল না, সেই পাকিস্তান শেষ সব গুলো ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে শেষমেশ হার নিয়ে বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে। এছাড়া ইংল্যান্ড-এর হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ এবং সিরিজের খেতাব জিতে নেন স্যাম কুরান।
সংগ্রহটা বড় হলো না। শুরু থেকে পাকিস্তানকে চাপে রাখা ইংল্যান্ড মাঝে কিছুটা খেই হারালেও পরে উইকেট তুলে নিয়েছে ঠিকই। তাতে পাকিস্তানের পুঁজিটা প্রত্যাশামতো বাড়েনি। ৮ উইকেটে ১৩৭ রানেই থেমেছে বাবর আজমের দল। অর্থাৎ টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৩৮।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ দলপতি জস বাটলার। দেখেশুনেই শুরু করেন পাকিস্তানি দুই ওপেনার বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান।
পঞ্চম ওভারে এসে দলীয় ২৯ রানের মাথায় এই জুটিটি ভাঙে। স্যাম কুরানের বেরিয়ে বল খেলতে গিয়ে রিজওয়ান বোল্ড হন (১৪ বলে ১৫)। এতে করে টুর্নামেন্টে ১১ উইকেট নিয়ে ইংলিশদের ইতিহাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হওয়ার কীর্তি গড়েন কুরান।
মোহাম্মদ হারিস উইকেটে এসে শুরু থেকেই স্বস্তিতে ছিলেন না। মারকুটে ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করলেও বেশ কয়েকবার পরাস্ত হন তিনি। অষ্টম ওভারে আদিল রশিদকে বোলিংয়ে আনেন ইংলিশ দলপতি জস বাটলার। প্রথম বলেই ক্যাচ হয়ে যান হারিস, ১২ বলে করেন মাত্র ৮ রান।
তবে বাবর আজম খেলছিলেন দায়িত্ব নিয়ে। ওপেনিং থেকে ধরে খেলতে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক তৃতীয় উইকেটে শান মাসুদকে নিয়ে গড়েন ২৪ বলে ৩৯ রানের জুটি। এই বাবরকেও ফেরান আদিল রশিদ। ২৮ বলে ২ বাউন্ডারিতে পাকিস্তান অধিনায়ক করেন ৩২ রান। এরপর ৬ বলে ০ করে দলকে বিপদে ফেলে যান ইফতিখার আহমেদও। ৮৫ রানে ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
সেখান থেকে শান মাসুদ আরেকটি জুটি গড়েন। শাদাব খানকে নিয়ে ২৫ বলে যোগ করেন ৩৬ রান। ১৩তম ওভারে মাসুদকে ফেরান স্যাম কুরান। ২৮ বলে গড়া তার ৩৮ রানের ইনিংসে ছিল ২ চার আর ১ ছক্কার মার। ১৩ বলে ২০ করে আউট হন শাদাব খান। স্বীকৃত ব্যাটাররা কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারায় শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের পুঁজিটাও আর বড় হয়নি।
ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্যাম কুরান। ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন এই পেসার। দুটি করে উইকেট শিকার আদিল রশিদ আর ক্রিস জর্ডানের।
লক্ষ্য ছিল ১৩৮ রানের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১ ওভার হাতে রেখেই ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিলেন স্টোকস। ৫ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরে নিলো ইংল্যান্ড।
প্রথমেই ২ বলে মাত্র ১ রান করে মাঠ ছাড়েন অ্যালেক্স হেলস। ২ চারের সাহায্যে ৯ বলে ১০ রান করেন ফিলিপ সল্ট। এরপর ৩ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ১৭ বলে ২৬ রান করেন জস বাটলার। তারপর ব্রুকস আর বেন স্টোকস মিলে ৩৯ রানের একটি জুটি গড়েন বটে; কিন্তু তা ছিল খুবই স্লো। ১৩তম ওভারে শাদাব খানের বলে লং অফে ধরা পড়েন ব্রুকস। ২৩ বলে ২০ রান করেন তিনি। ৩ চারের মারে ১৩ বলে ১৯ রান করেন মঈন আলী। শেষ পর্যন্ত স্টোকস অপরাজিত থাকলেন ৪৯ বলে ৫১ রানে। যাতে ছক্কা মাত্র ১টি এবং বাউন্ডারি ৫টি।
পাকিস্তানের হয়ে ২ টি উইকেট নেন হারিস রউফ। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন শাহীন আফ্রিদি, শাদাব খান, ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র।
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ১৩৭/৮ (২০.০)
ইংল্যান্ড – ১৩৮/৫ (১৯.০)
ফলাফল – ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – স্যাম কুরান
প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – স্যাম কুরান
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), শান মাসুদ, মোহাম্মদ হারিস, শাদাব খান, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মোহাম্মদ নওয়াজ, হারিস রউফ, নাসিম শাহ, শাহীন আফ্রিদি |
ইংল্যান্ড | জস বাটলার (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), ফিলিপ সল্ট, অ্যালেক্স হেলস, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, মঈন আলী, লিয়াম লিভিংস্টোন, ক্রিস ওকস, স্যাম কুরান, আদিল রশিদ, ক্রিস জর্ডান। |