পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড (৬ষ্ঠ টি২০) – হাইলাইটস
ফিল সল্টের তাণ্ডবে পাকিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজে সমতায় ফিরেছে ইংল্যান্ড। বাবর আজমের ৮৭ রানের ঝড়ো ইনিংসটা বৃথাই গেলো ইংলিশ উইকেটরক্ষকের উজ্জ্বলতায়। সল্টের ৮৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে সাত ম্যাচ সিরিজে ৩-৩ সমতায় ফিরেছে ইংলিশরা।
লাহোরে শুক্রবার রাতে ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংলিশরা তা পেরিয়ে যায় ৩৩ বল হাতে রেখেই। ফলে রোমাঞ্চকর সিরিজের শেষ ম্যাচটি এখন পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফাইনালে।
টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংলিশ দলপতি মইন আলী। আগের ম্যাচে পিঠে সমস্যা অনুভব করা উইকেট রক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও পেসার হারিস রউফকে ছাড়াই মাঠে নামে পাকিস্তান। অভিষিক্ত মোহাম্মদ হারিস ছক্কায় রানের খাতা খোলার পর আদিল রশিদের ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফিরেন মাত্র ৭ রান করে। তিন নম্বরে নেমে শূন্য রানে ফেরেন শান মাসুদ।
১৫ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নিয়ে যান বাবর ও হায়দার আলী। তৃতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ৩২ বলে ৪৭ রানের জুটি। একটি করে চার ও ছক্কায় ১৪ বলে ১৮ রান করেন হায়দার। এরপর রানের গতিকে তরান্বিত করেন ইফতিখার আহমেদ। ২টি করে চার ও ছক্কায়, ২১ বলে ৩১ রান করেন তিনি।
৪১ বলে ফিফটি করে এগিয়ে যান বাবর। রিচার্ড গ্লিসনকে ছক্কায় হাঁকিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম তিন হাজার রানের রেকর্ডে বিরাট কোহলির পাশে বসেন তিনি। রিস টপলির শেষ ওভারে পাকিস্তান তোলে ২০ রান। প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন বাবর। পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে শেষ বলে আউট হন মোহাম্মদ নওয়াজ। শেষ পর্যন্ত বাবর ৭ চার ও ৩ ছক্কায়, ৫৯ বলে ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ফলে ৬ উইকেটে ১৬৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কুরান এবং ডেভিড উইলি দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া রিস টপলি এবং রিচার্ড গ্লিসন ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
১৭০ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অ্যালেক্স হেলস ও সল্টের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে নামা সল্ট পাওয়ার প্লেতে রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছেন পাকিস্তানি বোলারদের ওপর। ১৯ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি, পাওয়ার প্লেতে ৮২ রান তোলে ইংল্যান্ড।
নওয়াজের করা ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন সল্ট, এক বল পর আরেকটি। পরের ওভারে ঝড় বয়ে যায় শাহনওয়াজ ধানীর ওপর দিয়ে। দুই ওপেনারই মারেন একটি করে চার ও ছক্কা। ওভারে আসে ২২ রান। পরের ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে টানা তিনটি চার মারেন হেলস।
তিন ওভারেই ইংল্যান্ডের রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ! পরের ওভারে হেলস বিদায় নেন ১২ বলে ২৭ রান করে। পঞ্চম ওভারে নওয়াজকে তিনটি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন সল্ট। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ইংল্যান্ডের রান ছিল ১ উইকেটে ৮২।
দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড মালানের সঙ্গে তিনি মাত্র ৩৪ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। মালান ৫ চারে ১৮ বলে ২৬ রান করে এলবিডব্লিউ হন শাদাব খানের বলে।
এরপর বেন ডাকেটের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৪২ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন সল্ট। চার বাউন্ডারিতে, ১৬ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন ডাকেট। আর ৪১ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকেন সল্ট। তাঁর এই ইনিংসে ১৩ বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটার।
পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খান ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন। বিধ্বংসী ইনিংস খেলে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন ইংল্যান্ডের ফিল সল্ট। আগামীকাল রবিবার অঘোষিত ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ১৬৯/৬ (২০.০)
ইংল্যান্ড – ১৭০/২ (১৪.৩)
ফলাফল – ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ফিলিপ সল্ট
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ হারিস (উইকেট রক্ষক), ইফতিখার আহমেদ, শান মাসুদ, হায়দার আলী, আসিফ আলী, শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, আমির জামাল, এবং শাহনওয়াজ ধানী। |
ইংল্যান্ড | মঈন আলী (অধিনায়ক), ফিলিপ সল্ট (উইকেট রক্ষক), ডেভিড মালান, অ্যালেক্স হেলস, বেন ডকেট, ডেভিড উইলি, হ্যারি ব্রুক, স্যাম কুরান, আদিল রশিদ, রিচার্ড গ্লিসন এবং রিস টপলি। |