নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস
বল হাতে নাস্তানাবুদ করার পর ব্যাট হাতে ধীরে ধীরে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে প্রথম জয়ের দিকে এগোচ্ছিল স্বাগতিক নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ২৬ বলে যখন ৩৩ রান প্রয়োজন তখন শেষ ভরসা হিসেবে উইকেটে থাকা ব্যাটার টম কুপার প্যাভিলিয়নে ফিরে ফেলে ডাচদের সে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায়।
বাকি ব্যাটাররা ম্যাচের উত্তেজনা অবশ্য শেষ ওভার পর্যন্ত ধরে রেখেছিল। কিন্তু দিনটা ছিল পাকিস্তানের। তাই হারতে হারতেও শ্বাসরুদ্ধকর একটি ম্যাচে ৯ রানের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সফরকারীরা। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছে ম্যান ইন গ্রিনরা।
রটারডামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে রবিবার (২১ আগস্ট) পাকিস্তানের দেয়া ২০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডসের ইনিংস থেমে যায় ১৯৭ রানে।
পাকিস্তানি ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দলের মুখে হাসি ফোটান দুই বোলার নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র। নাসিম ১০ ওভার বল করে ৩৩ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট শিকার করেন। দলের জয়ে অসাধারণ অবদান রেখে তিনি প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হন। অন্যদিকে ওয়াসিম ৯.২ ওভার বল করে ৩৬ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৪ উইকেট।
নাসিম জয়ের ভিত গড়ে দিলেও, ডাচদের শেষ ভরসা টম কুপারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের জয়টা নিশ্চিত করেন ওয়াসিম। কুপার ১০৫ বল মোকাবিলায় ৬২ রানের ইনিংস খেলে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন। পুরো ম্যাচে মাত্র ৪টি বাউন্ডারি হাঁকানো কুপার এর আগের প্রত্যেকটি বলই খেলেছিলেন সতর্কভাবে।
দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ রান বিক্রমাজিত সিংয়ের। ওয়াসিমের শিকার হওয়ার আগে ৮৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চারের মার। এছাড়া তেজা নিদামানুরু ৩২ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তান শিবিরে ভয় ধরিয়ে দেন।
নিদামানুরু যখন আউট হন তখন ৩১ বলে নেদারল্যান্ডসের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে কুপারের সঙ্গে তিনি ৫৬ রানের জুটি গড়ে তোলেন। এছাড়া ২১ বল মোকাবিলায় ১১ রান করেন মুসা আহমেদ। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের স্কোর স্পর্শ করতে পারেননি।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক বাবর আজম ছাড়া পাকিস্তানের বাকি ব্যাটারা হতাশ করেন সমর্থকদের । পাক শিবিরে প্রথমদিকে আঘাত হানেন ডাচ বোলার ভিভিয়ান কিংমা, লোগান ফন বিক ও শরিজ আহমেদ।
৫ বলে ২ রান করেন আব্দুল্লাহ শফিক, ৪৩ বলে ২৬ রান করেন ফখর জামান এবং ৪২ বলে ২৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন আগা সালমান। এরপর ক্রিজে এসে ৮ বলে ২ রান করে রান আউট হয়ে খুশদিল শাহ ফেরেন প্যাভিলিয়নে। ক্রিজের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের যাওয়া আসা তখন দেখছিলেন বাবর।
এরপর আক্রমণে এসে বাস ডি লিড একে একে একে শিকার করেন মোহাম্মদ হ্যারিস (৪), মোহাম্মদ নওয়াজ (২৭) ও মোহাম্মদ ওয়াসিমকে (১১)। অন্যদিকে বাবর ১২৫ বলে ৯১ রানের ইনিংস খেলে আরিয়ান দত্তের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাজঘরে । শেষ পর্যন্ত ৪৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৬ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। লিড ৩টি এবং কিংমা ২টি উইকেট শিকার করেন।
এ নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ষষ্ঠবারের মতো ৫০ ওভারের ম্যাচ হারল নেদারল্যান্ডস। তবে এবারের হারটা কিছুটা আক্ষেপের। কেননা আগের পাঁচ বারের তুলনায় সবচেয়ে কম ব্যবধানে হার ছিল এটি।
নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান এর স্কোরবোর্ড
পাকিস্তান – ২০৬/১০ (৪৯.৪)
নেদারল্যান্ডস – ১৯৭/১০ (৪৯.২)
ফলাফল – পাকিস্তান ৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – নাসিম শাহ
নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান ম্যাচের একাদশ
নেদারল্যান্ডস | স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), বিক্রমজিৎ সিং, বাস ডি লিড, ম্যাক্স ও’ডাউড, টম কুপার, তেজা নিদামানুরু, মুসা আহমেদ, লোগান ফন বিক, শরিজ আহমেদ, ভিভিয়ান কিংমা এবং আরিয়ান দত্ত। |
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ হারিস (উইকেট রক্ষক), ফখর জামান, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, আব্দুল্লাহ শফিক, আগা সালমান, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাহনওয়াজ দাহানি, নাসিম শাহ এবং জাহিদ মাহমুদ। |