নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান (২য় ওডিআই) – হাইলাইটস
স্বাগতিক নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৩১৪ রান করেও দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সফরকারী পাকিস্তান। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে তেমন কোনো দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি বাবর আজমের দলকে। নেদারল্যান্ডসকে সহজভাবে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে সফরকারীরা।
হাজেলারওয়েগের রটারডামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানি বোলারদের বোলিং তোপে ৪৪.১ ওভারে ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় ডাচদের ইনিংস। জবাবে ৭ উইকেট এবং ৯৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। সেই সাথে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজটি নিজেদের করে নিয়েছে ম্যান ইন গ্রিনরা।
প্রতিপক্ষ, কন্ডিশন, সংস্করণ, সব বদলায়, শুধু বদলান না বাবর আজম। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৭৪ রানের ইনিংস খেলার পর রটারডামে দ্বিতীয় ওডিআইতে খেললেন ৫৭ রানের ইনিংস। এ নিয়ে সর্বশেষ ১০ ওডিআইতে অষ্টমবারের মতো পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস খেলেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। এই ম্যাচে রান পেয়েছেন উইকেট রক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানও।
বাবর, রিজওয়ানরা অর্ধশতক পেলেও পাকিস্তানের জয়ের মূল ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। যার শুরুটা হয় এই সিরিজেই ওডিআইতে অভিষিক্ত হওয়া পেসার নাসিম শাহ’র হাত ধরে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দারুণ এক ডেলিভারিতে আউটসাইড এজের ফাঁদে ফেলে ডাচ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংকে (১) সাজঘরে ফেরান তিনি।
ম্যাক্স ও’ডাউড (১) এবং ওয়েসলি বারেসিও (৩) ইনিংসের শুরুতেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন। নাসিম শাহ ও হারিস রউফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৮ রানেই ৩ উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। তবে বাস ডি লিডি এবং টপ কুপার প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। এ জুটিতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন টম কুপার। যদিও নাসিমের বলে একবার আউট হলেও আম্পায়ার নো বল ডাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি।
বাস ডি লিড ও টম কুপারের ১০৯ রানের জুটি তাঁদের বড় সংগ্রহের আশা জাগালেও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। দলীয় ১১৭ রানে মোহাম্মদ নওয়াজের বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কুপার। তাঁর ৭৪ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চারের সাথে ২টি ছক্কার মার।
আর এক ব্যাটার বাস ডি লিডিও শুরু থেকেই ধৈর্য ধরে ইনিংস খেলতে থাকেন। ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি সঙ্গীর অভাবে শতক পাননি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ২ চার ও ৩ ছক্কায়, ১২০ বলে ৮৯ রানের কার্যকারী ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেন। ফলে ৪৪.১ ওভারে ১৮৬ রানে অলআউট হয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।
পাকিস্তানের হয়ে হারিস রউফ ও মোহাম্মদ নওয়াজ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। নাসিম শাহ তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র এবং শাদাব খান ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
১৮৭ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যান পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফখর জামান (৩) ও ইমাম উল হক (৬)। দুটি উইকেটই তুলে নেন ডাচ পেসার ভিভিয়ান কিংমা। পরে বাবর ও রিজওয়ানের ৮৮ রানের জুটি পাকিস্তানকে ঝুঁকিমুক্ত করে।
৭ বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৫ বলে ৫৭ রান করে আরিয়ান দত্তের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন বাবর। কিন্তু বাবর ফিরে গেলেও আগা সালমানকে নিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন রিজওয়ান। ৫ চার ও ২ ছক্কায়, ৩৫ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সালমান। ৬ চার ও ১ ছক্কায়, রিজওয়ান ৮২ বলে ৬৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানী বোলিং অল-রাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজ। আগামী ২১ আগস্ট (রবিবার) সিরিজের শেষ ও নিয়মরক্ষাকারী ম্যাচে এই দুল মুখোমুখি হবে।
নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান এর স্কোরবোর্ড
নেদারল্যান্ডস – ১৮৬/১০ (৪৪.১)
পাকিস্তান – ১৯১/৩ (৩৩.৪)
ফলাফল – পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – মোহাম্মদ নওয়াজ
নেদারল্যান্ডস বনাম পাকিস্তান ম্যাচের একাদশ
নেদারল্যান্ডস | স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), বিক্রমজিৎ সিং, ওয়েসলি বারেসি, ম্যাক্স ও’ডাউড, টম কুপার, তেজা নিদামানুরু, বাস ডি লিড, লোগান ফন বিক, আরিয়ান দত্ত, টিম প্রিঙ্গল এবং ভিভিয়ান কিংমা। |
পাকিস্তান | বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেট রক্ষক), ফখর জামান, আগা সালমান, ইমাম-উল-হক, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাদাব খান, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, নাসিম শাহ, এবং হারিস রউফ। |