নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা (ম্যাচ ২৭) – হাইলাইটস
শনিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২৭ তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা। ঐ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ভালই একটি পুঁজি দাড় করায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। সেই সাথে নিউজিল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন গ্লেন ফিলিপস।
নিউজিল্যান্ডকে যেভাবে চেপে ধরেছিল লঙ্কানরা, তাতে অনায়াসেই শত রানের নিচে বেধে রাখতে পারতো তাদেরকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। এক গ্লেন ফিলিপসই বড় দুঃখ হয়ে দেখা দিলো লঙ্কান পেসারদের জন্য। এবারের বিশ্বকাপে ২য় সেঞ্চুরি উপহার দিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস। নিউজিল্যান্ডের পুরো দল যেখানে করলো ১৬৭ রান, সেখানে ফিলিপস একাই করলেন ১০৪ রান। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে কিউইরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ফিন অ্যালেন ১ রানে, ডেভন কনওয়ে ১ রানে এবং কেন উইলিয়ামসন ৮ রানে ফিরে যান। তিন সেরা ব্যাটার যখন ১৫ রানের মধ্যে বিদায় নেন, তখন কিউইদের কী অবস্থা, তা সহজেই বোঝা যায়।
এরপরই ফিলিপস আর ড্যারিল মিচেল মিলে জুটি গড়েন। ৮৪ রানের জুটি গড়ার পর ২৪ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন ড্যারিল মিচেল। জেমস নিশাম ৫ রান করে আউট হন। তখনও মাঠে থাকেন গ্লেন ফিলিপস।
ক্যাচ ড্রপ তো ম্যাচ ড্রপ- ক্রিকেটে এটা যেন অমোঘ সত্য কথা। শ্রীলঙ্কা সেটা আবারও প্রমাণ করলো। ইনিংসের সপ্তম ওভারেই (৬.৫ ওভারে) ক্যাচ তুলেছিলেন গ্লেন ফিলিপস। কিন্তু লং অফে সহজ ক্যাচটা মিস করে ফেলেন পাথুম নিশাঙ্কা। গ্লেন ফিলিপস এ সময় ছিলেন ১৪ বলে ১২ রানে।
ফিলিপসের উইকেটটা এ সময় পড়ে গেলে নিউজিল্যান্ড ১০০ রানও করতে পারে না। কিন্তু সেই ফিলিপস, জীবন পেয়ে লঙ্কান বোলারদের ওপর এতটাই নির্দয় হয়ে পড়েছিলেন, যা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি লঙ্কানরা।
শেষ পর্যন্ত ৬৪ বলে ১০৪ করে আউট হন ফিলিপস। কিন্তু ততক্ষণে নিউজিল্যান্ডকে তিনি নিয়ে যান লঙ্কানদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কা দিয়ে সাজান নিজের ইনিংস। এছাড়া মিচেল স্যান্টনার অপরাজিত থাকেন ১১ রান করে। টিম সাউদি অপরাজিত থাকেন ৪ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ২টি উইকেট নেন কাসুন রাজিথা। ১টি করে উইকেট নেন মহেশ থিকসানা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং লাহিরু কুমারা।
১৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দারুণ বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ৮ রানেই সাজঘরে ফিরে যান লঙ্কানদের সেরা চার ব্যাটার। ২৫ রানে আউট হয়ে যান ৫জন সেরা ব্যাটার।
এ সময় ভানুকা রাজাপাকসে এবং দাসুন শানাকা মিলে জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩৪ রানের জুটিটি বেশিক্ষণ টিকলো না। ২২ বলে ৩৪ রান করে ফিরে যান রাজাপাকসে।
৩২ বলে ৩৫ রান করেন দাসুন শানাকা। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি। বাকি ব্যাটারদের আর কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। অর্থ্যাৎ, দুই অংকের ঘরও স্পর্শ করতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত ১০২ রান করার পর ১৯.২ ওভারে অলআউট হয়ে যায় লঙ্কানরা।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ট্রেন্ট বোল্ট নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি। ১টি করে উইকেট নেন টিম সাউদি এবং লকি ফার্গুসন।
নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা এর স্কোরবোর্ড
নিউজিল্যান্ড – ১৬৭/৭ (২০.০)
শ্রীলঙ্কা – ১০২/১০ (১৯.২)
ফলাফল – নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – গ্লেন ফিলিপস
নিউজিল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একাদশ
নিউজিল্যান্ড | কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে (উইকেটরক্ষক), গ্লেন ফিলিপস, ফিন অ্যালেন, জেমস নিশাম, ড্যারিল মিচেল, টিম সাউদি, মিচেল স্যান্টনার, লকি ফার্গুসন, ইশ সোধি, ট্রেন্ট বোল্ট |
শ্রীলঙ্কা | দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুসল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, পাথুম নিসাঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসে, চরিথ আসালাঙ্কা, চামিকা করুণারত্নে, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা, লাহিরু কুমারা, মহেশ থিকশানা, কাসুন রাজিথা |