ডিসি বনাম কেকেআর এর ম্যাচ হাইলাইটস
বৃহস্পতিবার আইপিএল ২০২২ এর ৪১ তম ম্যাচে মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বোলারদের এক অনবদ্য খেলার সৌজন্যে কলকাতা নাইট রাইডার্স এর বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পেলেন দিল্লি ক্যাপিটালস। সেই সাথে এই ম্যাচে জয়ী হয়ে ৪র্থ জয়ের দেখা পেল ডিসি।
টসে জিতে দিল্লি ক্যাপিটালস এর অধিনায়ক রিশাভ পান্ত বোলিং এর সিধান্ত নেন এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান। টাইগার কাটার মাস্টারের দারুণ বোলিংয়ে কলকাতার পুঁজিটা তেমন বড় হলো না। ৯ উইকেটে ১৪৬ রানেই থামলো শ্রেয়াস আয়ারের দল।
প্রথম ওভারেই মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। মোস্তাফিজ পাওয়ার প্লের শুরুটা করেন দুর্দান্ত। ওই ওভারে দেন মাত্র ২ রান।
পরের ওভারে আরেক বাঁহাতি চেতন সাকারিয়াকে ডাকেন রিশাভ পান্ত। দিল্লির হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা চেতন নিজের প্রথম ওভারেই পান উইকেটের দেখা। ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড করেন ফিঞ্চকে। ২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬ রান তুলতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
শুরুর সেই ধাক্কা সামলে ওঠা কঠিন হয়ে যায় কলকাতার ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারালে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অক্ষর প্যাটেল সাজঘরে ফেরান ভেঙ্কটেশ আয়ারকে (৬)। অষ্টম ওভারে কুলদ্বীপ যাদব টানা দুই বলে তুলে নেন বাবা ইন্দ্রজিত (৬) আর সুনিল নারিনকে (০)।
ভীষণ বিপদে পড়া দলকে এরপর টেনে তোলার দায়িত্ব নেন শ্রেয়াস আয়ার আর নিতিশ রানা। পঞ্চম উইকেটে ৩৩ বলে ৪৮ রান যোগ করা এই জুটিটি ১৪তম ওভারে এসে ভাঙেন দারুণ বোলিং করা কুলদ্বীপ।
শ্রেয়াসের (৩৭ বলে ৪২) ব্যাটে হালকা করে বল ছুঁয়ে গেলে উইকেটের পেছনে দারুণ এক ক্যাচ নেন পান্ত। ওই ওভারেই দুই বল পর আন্দ্রে রাসেলও (০) ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে পড়েন স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে। ৮৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে কলকাতা।
এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে ঝড় তুলেন নিতিশ রানা। ১৮তম ওভারে শেষ স্পেল করতে এসে মোস্তাফিজ দুই বাউন্ডারিসহ দেন ১০ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে শার্দুল ঠাকুরকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৩০ বলে ফিফটি তুলে নেন রানা।
ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে রিংকু সিংকে (১৬ বলে ২৩) রভম্যান পাওয়েলের ক্যাচ বানান ফিজ। পরের বলটা পায়ে লাগিয়ে কোনোমতে এক রান নেন উমেশ যাদব।
চতুর্থ বলে মোস্তাফিজকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে সাকারিয়ার দারুণ ক্যাচ হন রানা। ৩৪ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় বাঁহাতি এই ব্যাটার করেন ৫৭ রান। পরের বলে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে টিম সাউদিকে বোল্ড করেন মোস্তাফিজ।
৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে মোস্তাফিজ নেন ৩ উইকেট। ১৪ রানে ৪ উইকেট নেন কুলদ্বীপ যাদব।
লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। তবে ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও হারের শঙ্কা পেয়ে বসেছিল দিল্লি ক্যাপিটালসকে।
রান তাড়ায় নেমে ১৭ রানের মধ্যে পৃথ্বি শ (০) আর মিচেল মার্শকে (৭ বলে ১৩) হারালেও ডেভিড ওয়ার্নার দলকে সঠিক পথেই রেখেছিলেন। কিন্তু দশম ওভারে উমেশ যাদব ওয়ার্নারকে (২৬ বলে ৮ চারে ৪২) তুলে নিলে হঠাৎ খেই হারায় দিল্লি।
দুই রানের মধ্যে খুইয়ে বসে ৩ উইকেট। এর মধ্যে ছিলেন অধিনায়ক রিশাভ পান্তও (২)। ভীষণ বিপদে পড়া দলকে এরপর কিছুটা পথ টেনে নেন অলরাউন্ডার অক্ষর প্যাটেল। ১৫তম ওভারের শেষ বলে তিনি (১৭ বলে ২৪) রানআউট হয়ে গেলে আবারও আশা ফিরেছিল কলকাতার।
কিন্তু রভম্যান পাওয়েল সেই আশা শেষ করে দিয়েছেন। ১৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলতে একটি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয় এই ব্যাটার। দলকে জিতিয়েই ছাড়েন মাঠ।
কলকাতার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন পেসার উমেশ যাদব। ২৪ রান খরচায় তিনি নেন ৩টি উইকেট।
আট ম্যাচে ৪ জয় ও ৪ হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৬ষ্ঠ স্থানে বিরাজ করছে দিল্লি ক্যাপিটালস। অপরদিকে, নয় ম্যাচে ৩ জয় ও ৬ পরাজয় নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স এখন স্ট্যান্ডিংয়ের ৮ম স্থানে অবস্থান করছে।
ডিসি বনাম কেকেআর এর স্কোরবোর্ড
দিল্লি ক্যাপিটালস – ১৫০/৬ (১৯)
কলকাতা নাইট রাইডার্স – ১৪৬/৯ (২০)
ফলাফল – দিল্লি ক্যাপিটালস ৪ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – কুলদীপ যাদব
ডিসি বনাম কেকেআর এর ম্যাচের এওয়ার্ড
এওয়ার্ড এর নাম | খেলোয়াড়ের নাম | দল |
সুপার স্ট্রাইকার অফ দ্য ম্যাচ | রোভম্যান পাওয়েল | ডিসি |
গেমচেঞ্জার অফ দ্য ম্যাচ | কুলদীপ যাদব | ডিসি |
লেট’স ক্র্যাক ইট সিক্স | নিতিশ রানা | কে্কেআর |
ফাস্টেস্ট ডেলিভারি অফ দ্য ম্যাচ | হর্ষিত রানা | কেকেআর |
মোস্ট ভ্যালুয়েবল এসেট অফ দ্য ম্যাচ | কুলদীপ যাদব | ডিসি |
পাওয়ার প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ | চেতন সাকারিয়া | ডিসি |
অন-দ্য-গো ৪’স অফ দ্য ম্যাচ | ডেভিড ওয়ার্নার | ডিসি |
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ | কুলদীপ যাদব | ডিসি |