ক্রিকেট বিশ্বে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত – পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়া মানেই দর্শকদের ব্যাপক আগ্রহ আর টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট যুদ্ধ । দুই দল মাঠের ২২ গজে মুখোমুখি হলেই ফুলেফেঁপে ওঠে আইসিসির ব্যাংক একাউন্ট। অথচ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারনে সেই দুটি দেশের মধ্যেই কি না, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ। ২০১৩ সালের পর থেকে আর কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি ভারত – পাকিস্তান। তারা আবার সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে ২০০৭ সালে। কিন্তু আবারো দুই দেশের মধ্যে টেস্ট সিরিজের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এশিয়ার দুই ক্রিকেট পরাশক্তির এই লড়াই আয়োজন করতে চায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি) কর্তৃপক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার এই মাঠে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। যেখানে জমজমাট এক লড়াই দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। স্বয়ং মাঠেই উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৯০ হাজার দর্শক। সবমিলিয়ে এক ক্রিকেটীয় উৎসবের আমেজে ভরপুর ছিল গোটা মেলবোর্ন।
দুই দেশের টেস্ট সিরিজ আয়োজন নিয়ে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট ফক্স বলেন, ” টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এমসিজিতে যেভাবে সব বয়সের মানুষেরা ভারত – পাকিস্তানের ম্যাচ উপভোগ করেছে তাতে আমি সত্যি অবাক। দুই দলের ক্রিকেট নিয়ে দর্শকদের এত আগ্রহ ভাবতেই পারিনি। পুরো স্টেডিয়াম ছিলো কানায় কানায় পূর্ন৷ এমন দৃশ্য এমসিজিতে আমি এর আগে কখনো দেখিনি৷ এখানে দুই দেশের টেস্ট সিরিজ হলে, স্টেডিয়াম দর্শকে একদম ভরে যাবে। দর্শক আগ্রহের কথা বিবেচনা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সঙ্গে এই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তবে দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারনে বিষয়টি ভীষণ জটিল হবে। “
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং আইসিসি যদি আন্তরিক হয়, তবে এই সিরিজ আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করছেন ফক্স।ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানলেও, তা সামলে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। ফক্স বলেন, ” হ্যা বর্তমানের আইসিসির যে ক্রিকেট সূচি তাতে ক্রিকেটের ভরা মৌসুম চলছে। তবে আমাদের বিশ্বাস, ক্রিকেট প্রেমিদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে বিষয়টি আইসিসির কাছে উপস্থাপন করবে সিএ। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট ব্যস্ততার মাঝে ক্রিকেট সূচি মেলানো কঠিন হবে। তবে আমার মনে হয়, দুই দেশ এক হলে, একটি সময় বের করে নেওয়া যাবে। এতে লাভ ক্রিকেটের হবে “।
তবে সাম্প্রতিক সময়েও ভারত – পাকিস্তানের সম্পর্কে যে উত্তাপ ছড়িয়ে গেছে, তাতে এই সিরিজ মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। কয়েকদিন আগেও পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপ এবং ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বাকযুদ্ধে জড়িয়েছে দুই দেশ। তবু আশা ছাড়তে চায় না এমসিজি কর্তৃপক্ষ। জমজমাট একটি লড়াই জমাতে, সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে তারা। যদি শেষ পর্যন্ত এই সিরিজ হয়, তাহলে ক্রিকেট প্রেমিরা আরেকটি জমজমাট ক্রিকেট যুদ্ধ আশা করতেই পারে।