জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস
বুধবার, তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজের ৩য় টিতে, জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। অনেক দিন পর টি২০ এবং ওডিআই দুই সিরিজেই জিম্বাবুয়ের কাছে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। টি২০ সিরিজে একটুর জন্য হোয়াইট ওয়াশ হয়নি বাংলাদেশ। ওডিআইতেও নিজেদের হোয়াইট ওয়াশ থেকে বাচাতে খেলতে নেমেছিলেন তারা এবং দুর্দান্ত বোলিং এর কারনে ১০৫ রানে জিতে তা দেখিয়ে দিলেন বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে সফরের একটি ম্যাচেও টস জেতা হলো না বাংলাদেশ দলের। আগের পাঁচ ম্যাচের মতো ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও টস হেরেছে টাইগাররা।
সম্মান বাঁচানোর ম্যাচ। তাতে শুরুতেই সম্মানহানি হওয়ার জোগাড় হয়েছিল। জিম্বাবুইয়ান বোলারদের তোপে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে এনামুল হক বিজয় আর আফিফ হোসেনের ব্যাটে চড়ে ৯ উইকেটে ২৫৬ রানের পুঁজি পেয়েছে টাইগাররা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরুই করেছিলেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে খোলস ছেড়ে বের হওয়ার আভাস দেন তিনি। অধিনায়কের দেখাদেখি হাত খুলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের গতি বাড়ান আরেক ওপেনার বিজয়ও।
কিন্তু ইনিংসের অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে হয় সর্বনাশ। ৩ চারের সাহায্যে ৩০ বলে ১৯ রান করে রান আউট হয়ে যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরের ওভারেই আবার ঘটে বিপর্যয়। ওভারের প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক মারেন শান্ত। ইভান্সের বলে ক্যাচ আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার দুই বল পর আবারও ক্যাচ আউট হন মুশফিকুর রহিম। তিনিও পান গোল্ডেন ডাকের দেখা।
দুই ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারালেও সাহস হারাননি বিজয়। বরং যেখানে থেমেছিলেন তামিম, সেখান থেকেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন এ ডানহাতি ওপেনার। মনে হচ্ছিল প্রথম ম্যাচের না পাওয়া সেঞ্চুরিটি আজ হয়তো করে ফেলবেন বিজয়। কিন্তু তা আর হল না ২৫তম ওভারে আউট হয়ে যান তিনি। ৭৬ রান করেছিলেন তিনি। তার ৭১ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ছিল ৬ চারের সঙ্গে ৪টি ছয়ের মার। এরপর ৬৯ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর মেহেদি হাসান মিরাজও ২৪ বলে ১৪ রান করে সিকান্দার রাজার বলে এলবিডব্লিউ হন। তাইজুল রানআউট হন ৫ রানে।
সেখান থেকে আফিফ হোসেন ধ্রুব প্রায় একাই দলকে লড়াকু পুঁজি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে এনে দেন ২৫৬ রানের সংগ্রহ। ৮১ বলে আফিফের ৮৫ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৬ বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কার মার।
জিম্বাবুইয়ান বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ব্র্যাড ইভান্স আর লুক জঙউই। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন রাজা ও এনগারভা।
পুঁজিটা খুব বড় নয়, ২৫৬ রানের। তবে বোলিংয়ে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন পেসার হাসান মাহমুদ।ডানহাতি এই পেসারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তাকুদজানাশে কাইতানো (০)। পরের ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ বোল্ড করে দেন তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে (১)।
এরপর ইনিংসের পঞ্চম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে বুঝতে না পেরে ক্যাচ তুলে দেন ওয়েসলে মাধেভেরে (১)। এর পরের ডেলিভারিতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজা বোল্ড হয়ে ফিরেছেন শূন্য রানেই।
এরপর উইকেট পরতেই থাকে, ২২ বলে ১০ রান করে মাঠ ছাড়েন ইনোসেন্ট কাইয়া। ১৮ বলে ১৩ রান করেন টনি মুনিওঙ্গা। ২৫ বলে ১৫ রান করেন লুক জংওয়ে। ৪ চারের সাহায্যে ৪৫ বলে ২৪ রান করেন ক্লাইভ মাদান্দে। ২ রান করে আউট হন ইভান্স। শেষে রিচার্ড এনগারভার ৩৪ রান এবং ভিক্টর নিয়াউচির ২৬ রানে ১৫১ রানে পৌছায় জিম্বাবুয়ে এবং হার নিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা।
বাংলাদেশের পক্ষে ৪টি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান, ২টি করে উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন।
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
জিম্বাবুয়ে – ১৫১/১০ (৩২.২)
বাংলাদেশ – ২৫৬/৯ (৫০)
ফলাফল – বাংলাদেশ ১০৫ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – আফিফ হোসেন
প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – সিকান্দার রাজা
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
জিম্বাবুয়ে | সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্লাইভ মাদান্দে (উইকেটরক্ষক), তাকুদজওয়ানাশে কাইতানো, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েসলি মাধভেরে, ইনোসেন্ট কাইয়া, লুক জংওয়ে, টনি মুনিওঙ্গা, ভিক্টর নিয়াউচি, ব্র্যাড ইভান্স, রিচার্ড এনগারভা। |
বাংলাদেশ | তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত, এনামুল হক, আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, এবাদত হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান। |