জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ (২য় ওডিআই) – হাইলাইটস
রবিবার, তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজের ২য় টিতে, জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। টি২০ সিরিজ জিম্বাবুয়ের কাছে হারার পর, ওডিআই সিরিজেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ। ১ম ওডিআই-এর মতই একটি বড় লক্ষ্য দাড় করিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা ও রেগিস চাকাবভা খুব সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয় জিম্বাবুয়েকে। সেই সাথে এই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় তারা। সিকান্দার রাজার ঝড়ো ব্যাটিং যেমন থামছেই না, ১ম ম্যাচের মত এই ম্যাচেও নিজের করে নেয় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ পুরষ্কার।
জিম্বাবুয়ে সফরে টানা পঞ্চম ম্যাচে টস হারলো বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেও টস হেরে আগে ব্যাটিং করেছিল বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টিতেও ভালো শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চোটের কারণে খেলতে পারেন নেই লিটন দাস। তার বদলে এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ইনিংস সূচনা করেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এ দুজনের জুটিতে প্রথম পাওয়ার প্লে’তে ৬২ রান করে ফেলেছিল বাংলাদেশ।
ফিফটি হাঁকিয়ে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেও, বেশিক্ষণ উইকেটে থাকা হয়নি তামিমের। শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৫০ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। যেখানে রয়েছে ১০টি চারের সঙ্গে একটি ছয়ের মার। এর ১ ওভার পর দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হতে হয় বিজয়কে। তিন ওভারের মধ্যে দুই ওপেনার বিদায়ে হঠাৎ করেই চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। এনামুল বিজয়ের ব্যাট থেকে এসেছিল ২৫ বলে ২০ রান।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রায় একইভাবে আউট হলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই নিজেদের অনসাইডে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় ধরা পড়ে গেছেন মিড উইকেট অঞ্চলে। মুশফিক আউট হয়েছেন ৩১ বলে ২৫ রান করে।
ক্যারিয়ারের প্রথম ১১ ওয়ানডেতে একবারও পঞ্চাশ করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। আজ ১২তম ম্যাচে সেই সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন এ বাঁহাতি টপঅর্ডার ব্যাটার। কিন্তু পঞ্চাশের আগেই সাজঘরে ফিরে গেলেন তিনি। তবে খেলেছেন ক্যারিয়ারসেরা ৩৮ রানের ইনিংস।
এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জুটি বাধেন। ৮১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। সেই জুটি ভাঙ্গেন সিকান্দার রাজা। ৪ চার সহ ৪১ বলে ৪১ রান করে বিদায় নেন আফিফ। মেহেদী হাসান মিরাজ এসেও কিছু করতে পারেননি। ১২ বলে ১৫ রান তোলেন তিনি।
তাসকিন আউট হন ১ রান করে। তাইজুল ইসলাম ৪ বলে ৬ রান করে বিদায় নেন। শেষ বলে রানআউট হন শরিফুল।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ প্রতিরোধ করে না দাঁড়ালে ২৯০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর হতো কি না সন্দেহ। ৮৪ বলে ৩ ছক্কা এবং ৩ বাউন্ডারিতে ৮০ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজা। ২টি উইকেট নিয়েছেন মাধেভেরে। ১টি করে উইকেট নিয়েছন ভিক্টর ও তানাকা চিভাঙ্গা।
ব্যাটিং করতে নেমে বোলারের তোপের মুখে ২৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল স্বাগতিকরা। টি কাইতানো (০), ইনোসেন্ট কাইয়া(৮ বলে ৭ রান) ও ওয়েসলি মাধেভেরে(১৬ বলে ২ রান)। টানা তিন উইকেট পড়লেও অন্যপ্রান্তে অপর ওপেনার তাদিওয়ানাশে মুরুমানি উইকেট আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু ৪২ বলে ২৫ রান করার পর তিনিও ফেরেন সাজঘরে।
এরপর শুরু হয় দুর্দান্ত ইনিংস সিকান্দার রাজার সাথে ২০১ রানের জুটি গড়েন চাকাবভা। কিন্তু তারপর আউট হয়ে যান অধিনায়ক রেগিস চাকাবভা। ৭৫ বলে ১০২ রান করে তামিমের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মারও মারেন তিনি। ১৬ বলে ৩০ রান করে সিকান্দার রাজার কাজটা সহজ করে দেন টনি মুনিয়ঙ্গা। এরপর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন তারা। ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরে ১২৭ বলে ১১৭ রান করেন সিকান্দার রাজা।
বাংলাদেশের পক্ষে ২ টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও হাসান মাহমুদ। এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
জিম্বাবুয়ে – ২৯১/৫ (৪৭.৩)
বাংলাদেশ – ২৯০/৯ (৫০)
ফলাফল – জিম্বাবুয়ে ৫ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – সিকান্দার রাজা
জিম্বাবুয়ে বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
জিম্বাবুয়ে | রেগিস চাকাবভা (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), তাদিওয়ানাশে মারুমানি, তাকুদজওয়ানাশে কাইতানো, ওয়েসলি মাধভেরে, ইনোসেন্ট কাইয়া, টনি মুনিওঙ্গা, সিকান্দার রাজা, ব্র্যাড ইভান্স, লুক জংওয়ে, তানাকা চিভাঙ্গা, ভিক্টর নিয়াউচি |
বাংলাদেশ | তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত, আনামুল হক, আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ। |