গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম বার্বাডোজ রয়্যালস (কোয়ালিফায়ার ১) – হাইলাইটস
সিপিএল ২০২২ এ প্লে-অফের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে গায়ানা’র প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে রাকিম কর্নওয়ালের অল-রাউন্ডার নৈপুণ্যে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স এর বিপক্ষে ৮৭ রানের বিশাল জয় পেয়েছে বার্বাডোজ রয়্যালস। সেই সাথে টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তাঁরা।
সাকিব আল হাসানের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স টানা চার ম্যাচে জয়ী হয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। দলও পায়নি জয়ের দেখা।
সাকিব যখন দলে যোগ দেন তখন দল প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায়। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যোগ দেওয়ার পর তারা টানা চার ম্যাচে জয় পায়। এর মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচে বল হাতে সফল হলেও ব্যাট হাতে কোনো রানই করতে পারেননি সাকিব। টানা দুই গোল্ডেন ডাক মেরে আসর শুরু করা সাকিব বলের পাশাপাশি ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন শেষ দুই ম্যাচে। ব্যাটে বলে দারুণ পারফর্ম করে টানা দুই ম্যাচে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
প্লে-অফে প্রথম কোয়ালিফায়ারে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক শিমরন হেটমায়ার টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দ্রুতই তাঁর এই সিদ্ধান্ত ভুল বলে প্রমাণিত হয়। বিশালদেহী রাকিম কর্নওয়ালের তাণ্ডবে ২০ ওভারে ১৯৫ রানের বিশাল সংগ্রহ স্কোরবোর্ডে জমা করে বার্বাডোজ রয়্যালস।
জবাব দিতে নেমে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স হেরেছে ৮৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। বল হাতে ৩ ওভারে ২২ রান দিয়ে কর্নওয়ালের উইকেটটি নিলেও ব্যাট হাসেনি সাকিবের। আউট হয়েছেন ২ বলে মাত্র ১ রান করে।
প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে কর্নওয়াল খেলেছেন ৫৪ বলে ৯১ রানের ঝড়ো ইনিংস। সে ইনিংসে ছিল ২টি চার এবং ১১টি ছক্কার মার। সিপিএলের ইতিহাসেই এটা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। কর্নওয়াল ঝড় অবশ্য থামিয়েছেন সাকিবই। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে সাকিবের বলেই আউট হন তিনি।
কর্নওয়াল ছাড়াও বার্বাডোজের হয়ে ব্যাট হেসেছে আজম খানের। কর্নওয়ালের সঙ্গে মিলে মাত্র ৮.৩ ওভারে ৯০ রানের জুটি গড়েছেন আজম খান। এ পাকিস্তানি তারকা আউট হওয়ার আগে তিনটি চার ও চারটি ছয়ের মারে ৩৫ বলে খেলেছেন ৫২ রানের ইনিংস।
১৯৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স শুরুতেই হারিয়েছে রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তাঁরা। ফলে ম্যাচে আর ফিরতে পারেনি গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে উইকেটে গিয়ে মোটে তিন বল থাকতে পেরেছেন সাকিব। চারে নামা সাকিব ১ রান করেই ফিরেছেন রেমন সিমন্ডসের বলে এলবিডব্লু হয়ে।
গায়ানার পক্ষে যা একটু বলার মতো রান করেছেন তা অধিনায়ক শিমরন হেটমায়ার। ২৯ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। বার্বাডোজ রয়্যালসের বিপক্ষে ১৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন সিমন্ডস। ২১ রানে ২ উইকেট তুলে নেন মুজিব উর রহমান।
তবে সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন ম্যাচের নায়ক রাকিম কর্নওয়াল। মাত্র ১০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন বার্বাডোজ রয়্যালসের এই অল-রাউন্ডার। ব্যাটে এবং বলে দুর্দান্ত এই পারফর্ম করে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
হেরে গেলেও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা একদম শেষ হয়ে যায়নি। বুধবার ভোরে এলিমিনেটরে জয় পাওয়া জ্যামাইকা তালাওয়াসের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জয় পেলেই ফাইনালে উঠে যাবে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে অনুষ্ঠিত হবে সেই ম্যাচটি।
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম বার্বাডোজ রয়্যালস এর স্কোরবোর্ড
বার্বাডোজ রয়্যালস – ১৯৫/৫ (২০.০)
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স – ১০৮/১০ (১৭.৪)
ফলাফল – বার্বাডোজ রয়্যালস ৮৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – রাকিম কর্নওয়াল
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম বার্বাডোজ রয়্যালস ম্যাচের একাদশ
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স | শিমরন হেটমায়ার (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেট রক্ষক), শাই হোপ, চন্দ্রপল হেমরাজ, সাকিব আল হাসান, রোমারিও শেফার্ড, কিমো পল, ওডিয়ান স্মিথ, গুদকেশ মতি, ইমরান তাহির এবং জুনিয়র সিনক্লেয়ার। |
বার্বাডোজ রয়্যালস | কাইল মায়ার্স (অধিনায়ক), ডেভন থমাস (উইকেট রক্ষক), হ্যারি টেক্টর, রাকিম কর্নওয়াল, আজম খান, জেসন হোল্ডার, মুজিব উর রহমান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, ওবেদ ম্যাককয়, রেমন সিমন্ডস এবং হেইডেন ওয়ালশ। |