গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম জ্যামাইকা তালাওয়াস (ম্যাচ ২৫) – হাইলাইটস
সিপিএল ২০২২ এর ২৫তম ম্যাচে গায়ানা’র প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ওডিয়ান স্মিথের অসাধারণ অল-রাউন্ডার পারফর্মেন্সের সৌজন্যে জ্যামাইকা তালাওয়াস এর বিপক্ষে ১২ রানের এক দুর্দান্ত জয় পেয়েছে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। ব্যাট হাতে প্রথমে খেলেন ১৬ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস এবং পরে বল হাতে ১.৫ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন ওডিয়ান স্মিথ।
জ্যামাইকা তালাওয়াস এর অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন এবং গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সকে ব্যাটিং করতে পাঠান। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রানের লড়াকু স্কোর সংগ্রহ করে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্র্যান্ডন কিং সেঞ্চুরি করলেও বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইনিংসের এক বল বাকি থাকতেই ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় জ্যামাইকা তালাওয়াস।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেননি গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের দুই ওপেনার চন্দ্রপল হেমরাজ এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজ। গোল্ডেন ডাক মারেন গুরবাজ এবং হেমরাজ ১৩ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন। হেমরাজের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন এই মৌসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বিশ্ব সেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে তিনিও গোল্ডেন ডাক মারেন।
৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলের হাল ধরেন শাই হোপ। তিনি যোগ্য সঙ্গী না পেলেও উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ৪ চার ও ৩ ছক্কায়, ৪৫ বলে ৬০ রান করে তিনি যখন মোহাম্মদ নবী’র বলে বোল্ড হোন তখন দলের স্কোর ৯৭/৬। দলীয় আর এক রান হতেই সাজঘরে ফিরে যান আর এক ব্যাটার গুদকেশ মতি (২)।
তখন মনে হচ্ছিল গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের দলীয় স্কোর হয়ত ১৪০ রানই পার হবে না। কিন্তু ৮ম উইকেটে ২৬ বলে ৭৪ রানের এক অবিশ্বাস্য জুটি গড়ে তোলেন ওডিয়ান স্মিথ এবং কিমো পল। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে ১৬ বলে ৪২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন স্মিথ। তাঁর এই ৪২ রানের ইনিংসে কোন বাউন্ডারি না থাকলেও ছিল ৬টি ওভার-বাউন্ডারি!
অপরদিকে সমান সংখ্যক ২টি করে চার ও ছক্কায়, ১২ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কিমো পল। শেষ বলে উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকিয়ে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন জুনিয়র সিনক্লেয়ার। জ্যামাইকা তালাওয়াসের হয়ে মোহাম্মদ নবী সর্বাধিক ৩টি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া ক্রিস গ্রিন ২টি এবং ইমাদ ওয়াসিম, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ও রোভম্যান পাওয়েল ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
১৭৯ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত এক শতক তুলে নেন জ্যামাইকা তালাওয়াসের ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং। তবে তিনি উইকেটের এক প্রান্তে অনবদ্য সব শট খেলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকলেও তাঁকে কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। কিং ছাড়া কেবল মাত্র কেনার লুইস (১৩) এবং কার্ক ম্যাকেঞ্জি (১৫) দুই অঙ্কের স্কোর স্পর্শ করতে পারেন। ফলে সেঞ্চুরি করেও দলকে আর জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন ব্র্যান্ডন কিং।
জ্যামাইকা তালাওয়াসের শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিল ৬১ রান। হাতে ছিল ৬ উইকেট। এমন সময়ে সাকিব তার শেষ ওভার করতে এসে দেন মাত্র ২ রান। তুলে নেন ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের (১) উইকেট। কিন্তু ব্রেন্ডন কিং জমিয়ে তুলেছিলেন লড়াই। শেষ ওভারে জ্যামাইকা তালাওয়াসের যখন ২০ রান দরকার, ওডিয়ান স্মিথকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান কিং।
৬৪ বলে তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরি। কিন্তু নিজের লক্ষ্য পূরণ হলেও দলের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেননি কিং। পরের বলে দেন ডট। তৃতীয় বলে রানআউটের ফাঁদে পড়ে ফিরেন প্যাভিলিয়নে (৮ চার ও ৭ ছক্কায়, ৬৬ বলে ১০৪)। এরপর টানা দুই বলে আরও ২ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানেই গুটিয়ে যায় জ্যামাইকা তালাওয়াস।
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের হয়ে ইমরান তাহির, গুদকেশ, এবং স্মিথ ২টি করে এবং সাকিব ১টি উইকেট তুলে নেন। এই ম্যাচে জয়ী হয়ে মৌসুমে নিজেদের ২য় জয় তুলে নিলেও এখনও পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে অবস্থান করছে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স। অপরদিকে এই ম্যাচে পরাজিত হয়ে জ্যামাইকা তালাওয়াস এখনও পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম জ্যামাইকা তালাওয়াস এর স্কোরবোর্ড
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স – ১৭৮/৮ (২০.০)
জ্যামাইকা তালাওয়াস – ১৬৬/১০ (১৯.৫)
ফলাফল – গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স ১২ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ওডিয়ান স্মিথ
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স বনাম জ্যামাইকা তালাওয়াস ম্যাচের একাদশ
গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স | শিমরন হেটমায়ার (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেট রক্ষক), শাই হোপ, চন্দ্রপল হেমরাজ, সাকিব আল হাসান, ওডিয়ান স্মিথ, রোমারিও শেফার্ড, কিমো পল, ইমরান তাহির, জুনিয়র সিনক্লেয়ার এবং গুদকেশ মতি। |
জ্যামাইকা তালাওয়াস | রোভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), কেনার লুইস (উইকেট রক্ষক), কার্ক ম্যাকেঞ্জি, মোহাম্মদ নবী, ব্র্যান্ডন কিং, রেমন রেইফার, ইমাদ ওয়াসিম, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, ক্রিস গ্রিন, মোহাম্মদ আমির, এবং মিগেল প্রিটোরিয়াস। |