ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে ৩ ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ৫ ম্যাচের সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি গতকাল এবং আজ যথাক্রমে মাঠে গড়িয়েছে। ম্যাচের উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্তগুলো সম্পর্কে জানতে আসুন নিবন্ধটি এক ঝলক দেখে নিই।
ইংল্যান্ড বনাম শ্রীলঙ্কা (২য় – ওয়ানডে)
চমৎকার বোলিংয়ে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ২৪২ রানের লক্ষ্যে ৪২ বল বাকি থাকতে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। সেই সাথে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শিরোপা নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ইংলিশ পেসার স্যাম কুরানের তোপে পড়ে সফরকারীরা। ২১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় তারা। যার মধ্যে তিনটি উইকেটই নেন কুরান। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে ওয়ানিদু হাসারাঙ্গার সঙ্গে ৬৫ এবং দাসুন শানাকার সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৮ রানের দুটি জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরান ধনঞ্জয়া। হাসারাঙ্গা ২৬ রানে সাজঘরে ফেরেন।
দলীয় ১৬৪ রানের মাথায়, ১৩ বাউন্ডারিতে, ৯১ বলে ৯১ রান করে ধনঞ্জয়া প্যাভিলিয়নে ফেরার পর, হাল ধরে দলকে দুইশ পার করে দেন শানাকা। ২ চার ও ১ ছক্কায় ৬৭ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তারপর চামিকা করুণারত্নের ২১, বিনুরা ফার্নান্দোর ১৭ আর দুষ্মন্ত চামিরার অপরাজিত ১৪ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ২৪১ রান তুলতে পারে শ্রীলঙ্কা।
ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্যাম কুরান। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪৮ রানে ৫টি উইকেট নেন এই পেসার। আরেক পেসার ডেভিড উইলি ৬৪ রান খরচ করে তুলে নেন ৪ উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে স্বাগতিকদের ঝড়ো সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং জেসন রয়। ২৯ রান করে সাজঘরে ফিরেন বেয়ারস্টো। তবে ৫২ বলে ৬০ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলে চামিকা করুনারাত্নের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রয়। এরপর তৃতীয় উইকেটে দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান জো রুট ও এইউন মরগান অবিচ্ছিন্ন ১৪০ রানের জুটি গড়ে তোলেন। রুট ৮৭ বলে ৬৮ ও মরগান ৮৩ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
স্কোরবোর্ড
শ্রীলঙ্কা – ২৪১/৯ (৫০.০)
ইংল্যান্ড – ২৪৪/২ (৪৩.০)
ফলাফল – ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দি ম্যাচ – স্যাম কুরান
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (৪র্থ – টি২০)
গ্রেনাডার সেইন্ট জর্জেসের ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে দুই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার কাইরন পোলার্ড ও ডোয়াইন ব্রাভোর নৈপুণ্যে ২১ রানের জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ে সিরিজে (২-২) সমতায় ফিরেছে ক্যারিবীয়রা।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো যায়নি প্রোটিয়াদের। স্পিনার এইডেন মার্করামের প্রথম ওভারেই ২০ রান নেন ক্যারিবীয় ওপেনার লেন্ডস সিমনস। অপর প্রান্তে এভিন লুইস (৭) এবং ক্রিস গেইল (৫) সাজঘরে ফিরে গেলেও লেন্ডল সিমন্সের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫৭ রান তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা।
কিন্তু সিমন্স ৪৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ক্যারিবীয়দের রানের চাকা থেমে যায়। পরের চার ওভারে আসে মাত্র ১০ রান। প্রোটিয়াদের স্পিন ঘূর্ণিতে শিমরন হেটমায়ার (৭), নিকোলাস পুরান (১৬) ও আন্দ্রে রাসেল (৯) একে একে সাজঘরে ফিরেন। ফলে ১৬ ওভার শেষে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১০১ রান।
এর পর ব্যাট হাতে নেমে ঝড় তোলেন অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। ৫ ছক্কা ও ২ চারে, ২৫ বলে ৫১ করে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টি–টোয়েন্টি ফিফটি তুলে নেন তিনি। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৬৭ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দেন পোলার্ড। প্রোটিয়াদের পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট শিকার করেন জর্জ লিন্ডে ও তাবরিজ শামসি। দুজন মিলে ৮ ওভারে খরচ করেন মাত্র ২৯ রান।
রান তাড়া করতে নেমে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক ব্যতীত আর কেউই তেমন আশা দেখাতে পারেননি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। এরপর নিয়মিত বিরতেই উইকেট হারাতে থাকে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের ১৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৬০ রান করে ক্যারিয়ারের অষ্টম টি–টোয়েন্টি ফিফটি তুলে নেন ডি কক। এছাড়া এইডেন মার্করামের ২০ রান ও কাগিসো রাবাদার ১৬ রানের সুবাদে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান পর্যন্ত যায় তাদের ইনিংস।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করে মাত্র ১৯ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো। এছাড়া আন্দ্রে রাসেলের শিকার ২টি উইকেট। শনিবার রাতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
স্কোরবোর্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ – ১৬৭/৬ (২০.০)
দক্ষিণ আফ্রিকা – ১৪৬/৯ (২০.০)
ফলাফল – ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২১ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দি ম্যাচ – কাইরন পোলার্ড
ব্যাট ও বলের কিছু লোভনীয় লড়াই নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চলছে। ক্রিকেটের আরও সর্বশেষ আপডেটের জন্য Baji -র সাথেই থাকুন!