জিম্বাবুয়ে বনাম নেদারল্যান্ডস (ম্যাচ ৩৪) – হাইলাইটস
সমীকরণটা সহজ ছিল, নেদারল্যান্ডসকে হারালে আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ এর সেমিফাইনালের আশা টিকে থাকবে জিম্বাবুয়ের জন্য। তবে সেই কাজটা ঠিক মত করতে পারেনি ক্রেগ এরভিনের দল। নেদারল্যান্ডসের কাছে ৫ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্টের সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হলো জিম্বাবুয়ের।
নেদারল্যান্ডেসের শেষ চারের স্বপ্ন শেষ হয়েছে আগেই। কাগজে–কলমে জিম্বাবুয়ের সেমিফাইনালের স্বপ্ন টিকে ছিল। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আর ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের পর আরও একবার সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখেছিল জিম্বাবুয়ে।
তবে এই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১২ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ডাচ’রা। এই হারে জিম্বাবুয়ের শেষ চারে খেলার আশা আরও ক্ষীণ হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভাগ্যক্রমে এক পয়েন্ট পেয়ে সুপার টুয়েলভের যাত্রা শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর সবাইকে চমকে দিয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় এরভিনের দল। কিন্তু এর পরের ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্লোজ ম্যাচে হেরে যায় আফ্রিকা মহাদেশের এই দেশটি। ফলে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাদের কাছে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিলনা।
তবে তা করে দেখাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। মাত্র ১১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকে ডাচরা। শুরুতে দলীয় ১৭ রানে স্টেফান মাইবার্গকে (৮) হারালেও টম কুপারকে নিয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়ে তোলেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলা ম্যাক্স ও’ডাউড। এক সময় মনে হচ্ছিল নয় উইকেটেই জয় তুলে নিবে নেদারল্যান্ডস।
তবে শেষ ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ডাচ’রা। কিন্তু লক্ষ্য সহজ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর বিপদে পরতে হয়নি স্কট এডওয়ার্ডসের দলকে। ১২ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের লক্ষে পৌঁছে যায় নেদারল্যান্ডস। দলের হয়ে ম্যাক্স ও’ডাউড ৮ চার ও ১ ছক্কায়, ৪৭ বলে ৫২ রান করেন। এছাড়া টম কুপার ২৯ বলে ৩২ এবং বাস ডি লিড অপরাজিত ১২ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে রিচার্ড এনগারাভা এবং ব্লেসিং মুজারাবানি সর্বাধিক ২টি করে উইকেট তুলে নেন। এছাড়া লুক জংওয়ে ১টি উইকেট শিকার করেন। নেদ্যারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারার দায়টা মূলত জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদেরই নিতে হবে। কেননা ডাচদের ১২০ বলের মধ্যে ৬৫টিই ডট খেলেছে জিম্বাবুয়ে দলের ব্যাটাররা। জিম্বাবুয়ে সম্ভবত ম্যাচটা সেখানেই হেরেছে।
এর আগে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত হওয়া এইবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এরভিন। যে সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে পারেনি তারা। কারণ দলের সেরা খেলোয়াড় সিকান্দার রাজা ছাড়া আর কেউ বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেনি। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ওয়েসলি মাধাভেরেকে (১) বোল্ড করে জিম্বাবুয়ের পতন শুরু করেন পল ভ্যান মিকেরেন।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পরে আফ্রিকা মহাদেশের এই দলটি। এরপর দলের হাল ধরেন সিকান্দার রাজা এবং শন উইলিয়ামস। তারা দুইজন মিলে ৪র্থ উইকেটে ৪৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন। তবে তাদের জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। দলের কঠিন অবস্থার মাঝে ২৪ বলে ৪০ রানের এক ইনিংস খেলেন রাজা। উইলিয়ামস করেন ২৩ বলে ২৮ রান।
এছাড়া দলের পক্ষে আর কোন ব্যাটার দুই অঙ্কের স্কোর তুলেতে পারেনি। দলের ১১৭ রানের মধ্যে ১৪ রানই এসেছে অতিরিক্ত। যদি এই রানগুলো না আসত, তাহলে জিম্বাবুয়ের অবস্থা আরও খারাপ হতো। এদিকে নেদারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন পেসার পল ভ্যান মিকেরেন। এছাড়া বাস ডি লিড, ব্র্যান্ডন গ্লোভার ও লোগান ফন বেক দুটি করে এবং ফ্রেড ক্ল্যাসেন ১টি উইকেট পেয়েছেন।
জিম্বাবুয়ে বনাম নেদারল্যান্ডস এর স্কোরবোর্ড
জিম্বাবুয়ে – ১১৭/১০ (১৯.২)
নেদারল্যান্ডস – ১২০/৫ (১৮.০)
ফলাফল – নেদারল্যান্ডস ৫ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – ম্যাক্স ও’ডাউড
জিম্বাবুয়ে বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচের একাদশ
জিম্বাবুয়ে | ক্রেগ এরভিন (অধিনায়ক), রেজিস চাকাভা (উইকেট রক্ষক), ওয়েসলি মাধাভেরে, শন উইলিয়ামস, মিল্টন শুম্বা, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল, টেন্ডাই চাতারা, লুক জংওয়ে, রিচার্ড এনগারাভা এবং ব্লেসিং মুজারাবানি। |
নেদারল্যান্ডস | স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), স্টিফান মাইবার্গ, টম কুপার, ম্যাক্স ও’ডাউড, কলিন অ্যাকারম্যান, লোগান ফন বেক, বাস ডি লিড, রোয়েলফ ফন ডার মারওয়ে, ফ্রেড ক্ল্যাসেন, ব্র্যান্ডন গ্লোভার এবং পল ভ্যান মিকেরেন। |