পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম প্রধান বোলিং অস্ত্র শাহিন আফ্রিদি। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ঘুম হারাম করার জন্য এই একটি নামই যথেষ্ট। তবে ২২ গজে তার সবচেয়ে বড় শত্রু ইনজুরি। ইনজুরির সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত পাকিস্তানি এই পেসার। হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে আছেন শাহিন আফ্রিদি। খেলতে পারেননি গত এশিয়া কাপে। এরপর মাঠে আর সেভাবে ফেরা হয়নি। একটা সময় ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন এই পাকিস্তানি পেসার।
গত বছর শ্রীলঙ্কা সিরিজে গল টেস্ট খেলার সময় ইনজুরিতে পড়েন শাহিন আফ্রিদি। এরপর তাকে ছাড়াই এশিয়া কাপ খেলেছে পাকিস্তান। মাঝে লন্ডন থেকে রিহ্যাবও করেন পাকিস্তানি এই পেসার।কিন্তু ২২ গজে ফেরার অপেক্ষাটা বাড়তেই থাকে।অবশ্য ইনজুরি কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি – টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেন তিনি। বাংলাদেশে চলমান বিপিএলেও খেলার কথা ছিল শাহিন আফ্রিদির। কিন্তু হাঁটুর ইনজুরি পুরোপুরি ঠিক না হওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসেননি আফ্রিদি ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে চিকিৎসাকালীন সময়ের করুন পরিস্থিতির বর্ননা দেন শাহিন আফ্রিদি। সেই বর্ননায় উঠে আসে তার বেদনাদায়ক সেই দিনগুলো। হাসপাতালের বিছানায় থাকতে থাকতে অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ২২ গজে আবার ফিরে আসা তার জন্য অনেকটা স্বপ্নের মতো হয়ে গিয়েছিল। মাঠে ফিরতে পারবেন বলেও ভাবতে পারেননি তিনি।
ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে করতে একটা সময় ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন পাকিস্তানি পেসার । তবে নিজের বোলিংয়ের ভিডিওগুলো তাকে প্রেরণা দিয়েছে বলে জানান তিনি। সাক্ষাৎকারে আফ্রিদি বলেন, ” একটা সময় আমি খুব বাজে ভাবে অতিবাহিত করেছি। এমন একটা সময় অতিবাহিত করেছি যে, একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমি আর পেরে উঠছিলাম না। ভেবেছিলাম অনেক তো হলো, এবার ক্রিকেট থেকেই অবসর নিয়ে নেই।কিন্তু পরে নিজের বোলিংয়ের ভিডিওগুলো দেখতাম। আর এই ভিডিওগুলো আমাকে অনেক প্রেরণা দিয়েছে। “
২২ বছর বয়সী শাহিন আফ্রিদির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব বেশি লম্বা নয়। ২০১৮ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় পাকিস্তানি এই তরুণ পেসারের। এরপর ওই বছর ডিসেম্বরে টেস্ট ক্রিকেটেও অভিষেক হয় তার। ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলেন আফ্রিদি। পাকিস্তানের জার্সিতে এখন পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ৩২ টি ওয়ানডে ও ৪৭ টি টি – টোয়েন্টি ম্যাচ। ওয়ানডেতে তার শিকার ৬২ টি উইকেট এবং টি – টোয়েন্টিতে তার শিকার ৫৮ টি উইকেট।
অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে ইনজুরি থেকে মুক্তি পেয়ে আসন্ন পিএসএলে দেখা যাবে তাকে। পাকিস্তান সুপার লিগে লাহোর কালান্দারের হয়ে মাঠে নামবেন তিনি। এই বছরেই ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগেই সম্পূর্ণ ফিট আফ্রিদিকে চায় পাকিস্তান। এবারের পিএসএল দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবার দারুনভাবে ফেরার বার্তা দিতে পারেন পাকিস্তানের পেস বোলিং বিভাগের এই প্রান ভোমরা।