কেকেআর বনাম এলএসজি এর ম্যাচ হাইলাইটস
বুধবার আইপিএল ২০২২ এর ৬৬তম ম্যাচে নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই প্যাটেল স্টেডিয়ামে কুইন্টন ডি ককের টি২০ ফর্মেটে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সৌজন্যে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) বিপক্ষে ২ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)। সেই সাথে এই ম্যাচে জয়ী হয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে এলএসজি।
টসে জিতে এলএসজি এর অধিনায়ক কেএল রাহুল ব্যাটিং করার সিধান্ত নেন এবং কেকেআর’কে বোলিং করতে পাঠান। ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ২১০ রানের বড় স্কোর সংগ্রহ করে আইপিএল এর নতুন দল এলএসজি।
দু্ই ওপেনার কুইন্টন ডি কক এবং কেএল রাহুল মিলেই খেলাটা শেষ করে আসেন। সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী ছিলেন ডি কক। মাত্র ৭০ বলে ১৪০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন তিনি। বরাবর ২০০ স্ট্রাইকরেট তার। মোট ২০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ডি কক। যেখানে ছিল ১০টি চার এবং ১০টি ছক্কার মার।
৫১ বল খেলে ৬৮ রান নিয়েছেন এলএসজি’র আরেক ওপেনার রাহুল। ৩টি বাউন্ডারি এবং ৪টি ছক্কার মার মারেন তিনি। কেকেআরের হয়ে তাদের কিউই পেসার টিম সাউদি ৪ ওভারে দেন সর্বোচ্চ ৫৭ রান। ৩ ওভারে ৪৫ রান দেন আন্দ্রে রাসেল।
২১১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং অভিজিৎ টোমারের উইকেট হারায় কেকেআর। আইয়ার তো কোনো রানই করতে পারেননি। অভিজিৎ করেন ৪ রান। এরপর নীতিশ রানা এবং অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের জুটির সুবাদে ঘুরে দাঁড়ায় কেকেআর। ২২ বলে ৪২ রান করে আউট হন নীতিশ। ৯টি বাউন্ডারির মার মারেন তিনি।
অধিনায়ক শ্রেয়াস ৪ চার ও ৩ ছক্কায়, ২৯ বলে ৫০ রান করেন। স্যাম বিলিংস ২৪ বলে করেন ৩৬ রান। তাদের এই দুর্দান্ত ইনিংসগুলোর সুবাদেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলাটি চলে যায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২১ রান। উইকেটে তখন রিঙ্কু সিং এবং সুনীল নারাইন। এলএসজি’র হয়ে বোলিং করতে আসেন অল-রাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিজ।
প্রথম বলেই বাউন্ডারি, পরের দুই বলে টানা দুটি ছক্কা। তিন বলেই উঠে গেলো ১৬ রান। চতুর্থ বলে ২ রান নিলেন রিঙ্কু। চার বলে হলো ১৮ রান। শেষ দুই বলে প্রয়োজন আর মাত্র ৩ রান। কিন্তু ভাগ্যে তাদের লেখা ছিল ভিন্ন কিছু।
পঞ্চম বলে এসে উইকেট হারিয়ে বসলেন রিঙ্কু সিং। স্টয়নিজের বলে কাভারের ওপর দিয়ে খেলেন রিঙ্কু। লুইস দাঁড়ানো ছিলেন ৩০ গজের সীমানায়। নিজের বাম পাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে এত অবিশ্বাস্যভাবে ক্যাচটি ধরলেন তিনি, তা দেখে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়। ক্যাচটি না ধরলে নিশ্চিত বাউন্ডারি। কিন্তু সে জায়গায় বিধ্বংসী রিঙ্কুকে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন তিনি।
শেষ বলে ব্যাট করতে নামলেন উমেষ যাদব। ইয়র্কার ছুঁড়লেন স্টয়নিজ। বলটাকে ঠেকাতেও পারেননি যাদব। বোল্ড হয়ে গেলেন। অর্থ্যাৎ, শেষ দুই বলে টানা দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্য থেকে মাত্র ২ রান দূরে থেকে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানে থেমে যায় কেকেআর এর ইনিংস।
২ চার ও ৪ ছক্কায়, ১৫ বলে ৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রিঙ্কু সিং। সুনীল নারাইন ৭ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন। সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন মহসিন খান এবং মার্কাস স্টয়নিজ। এছাড়া কৃষ্ণাপ্পা গৌতম এবং রবি বিষ্ণয় ১টি করে উইকেট তুলে নেন। ফলে শেষ দুই বলে ম্যাচ খুইয়ে এবারের আইপিএলের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় গতবারের ফাইনালিস্ট কেকেআর।
১৪ ম্যাচে নয় জয় ও পাঁচ হারে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন পয়েন্ট টেবিলের ২য় স্থানে উঠে এসেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। অপরদিকে, ১৪ ম্যাচে ৬ জয় ও ৮ পরাজয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স স্ট্যান্ডিংয়ের ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে।
কেকেআর বনাম এলএসজি এর স্কোরবোর্ড
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস – ২১০/০ (২০.০)
কলকাতা নাইট রাইডার্স – ২০৮/৮ (২০.০)
ফলাফল – লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ২ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – কুইন্টন ডি কক
কেকেআর বনাম এলএসজি এর ম্যাচের এওয়ার্ড
এওয়ার্ড এর নাম | খেলোয়াড়ের নাম | দল |
সুপার স্ট্রাইকার অফ দ্য ম্যাচ | রিঙ্কু সিং | কেকেআর |
গেমচেঞ্জার অফ দ্য ম্যাচ | কুইন্টন ডি কক | এলএসজি |
লেট’স ক্র্যাক ইট সিক্স | কুইন্টন ডি কক | এলএসজি |
ফাস্টেস্ট ডেলিভারি অফ দ্য ম্যাচ | মহসিন খান | এলএসজি |
মোস্ট ভ্যালুয়েবল এসেট অফ দ্য ম্যাচ | কুইন্টন ডি কক | এলএসজি |
পাওয়ার প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ | মহসিন খান | এলএসজি |
অন-দ্য-গো ৪’স অফ দ্য ম্যাচ | কুইন্টন ডি কক | এলএসজি |
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ | কুইন্টন ডি কক | এলএসজি |