এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংকট বর্তমানে চরমে দাঁড়িয়েছে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে গেছে, যে কারণে সরকারকে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির জন্য গোতাবায়ার সরকারকেই দায়ী করছে শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ মানুষ।
সেই চরম অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে, হাজার হাজার মানুষ গুলি ও ব্যারিকেড উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল করে নেয়। পরে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন দেয় তারা। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। এমন অবস্থায় লঙ্কা দ্বীপে সিরিজ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল।
দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিজ চোখে অবলোকন করেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। সিরিজ শেষে তাই তার কন্ঠে ছিল লঙ্কান মানুষদের প্রতি নিঃস্বার্থ সমর্থন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) প্রকাশিত এক ভিডিওতে কামিন্স বলেন, যে প্রতিবাদ হলো, সেটি এড়িয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। দেশ থেকে আমাদের কাছে অনেক মেসেজ এসেছে। যেগুলোতে লেখা– “সবকিছু কেমন চলছে? আশা করি সবকিছু ঠিকঠাকই আছে“। তবে আমরা কোনো সমস্যাই অনুভব করিনি।‘
চরম দুর্দশা আর ভোগান্তিতেই বর্তমানে কাটছে শ্রীলঙ্কার মানুষের জীবন। ক্রিকেটের থেকে বেশি তাই মানুষের দুর্ভোগই চোখে লেগেছে কামিন্সের। তিনি বলেন, ‘হোটেলের কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলেছি। কয়েকজন ড্রাইভারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারা কী কষ্টই না করছে! একদিন খেয়ে পরের দিন তারা আর খাচ্ছেন না; যাতে সন্তানদের খাওয়াতে পারেন। কী কষ্ট! মাঝে মাঝে মনে হয় কতটা সৌভাগ্যবান আমরা! বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। শুধু এখানে এসে ক্রিকেট খেলাই নয়; খেলার কী প্রভাব পড়েছে সেটা তো বোঝাই যায়। ব্যাপারগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে আমরা আলোচনাও করছি।‘
অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে লঙ্কানদের নিয়ে একটি আবেগী পোস্ট করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। সেখানে তিনি লিখেন, ‘ধন্যবাদ শ্রীলঙ্কা, অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যেও আমাদের এই আতিথেয়তা দেওয়ার জন্য। এই ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তোমরা আমাদের জন্য দু‘হাত বাড়িয়ে দিয়েছ।
ওয়ার্নার পোস্টে আরো লিখেছেন ” এই সফর কখনও ভোলা যাবে না। শ্রীলঙ্কার যে বিষয়টি আমার সবচেয়ে ভালোলাগে, সেটা হলো তোমাদের মুখের হাসি। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, মুখে সেই হাসি থেকেই যায়। সবসময় তোমরা স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকো। আবারও ধন্যবাদ। আমি পরিবার নিয়ে একদিনের জন্য হলেও শ্রীলঙ্কায় ছুটি কাটাতে আসতে চাই।‘