ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ (দ্বিতীয় টেস্ট – ২য় দিন)
দ্বিতীয় দিন শেষে কাইল মায়ার্সের অসাধারণ এক সেঞ্চুরির সৌজন্যে ১০৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪০ রান তুলে নিয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই সাথে সফরকারী বাংলাদেশের সামনে ১০৬ রানের লিড দাঁড় করিয়ে ফেলেছে তারা। ১২৬ রানে অপরাজিত আছেন মায়ার্স এবং জশুয়া দা সিলভা ২৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামবেন।
সকালের সেশনে শেষ সময়ে এসে দারুণ চমক দেখিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটি তো ভেঙেছেই, এরপর ১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু প্রথম সেশনে সফরকারীদের হাসি দ্বিতীয় সেশনে মিলিয়ে দেন মায়ার্স আর জার্মেইন ব্ল্যাকউড। ক্যারিবীয় এই যুগল গড়লেন ৩৪.৪ ওভারে ১১৬ রানের জুটি। বড় জুটি গড়ার পর মেহেদী হাসানের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ব্ল্যাকউড। ১২১ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান তিনি।
তবে মায়ার্স এবং ব্ল্যাকউড জুটির ওপর ভর করেই লিড পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর মায়ার্স আর জশুয়া দা সিলভা মিলে গড়েছেন ৯২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। এর আগে বিনা উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম সেশনে ১৩২ রান তুলতেই ৪ উইকেটে হারিয়ে ফেলেছিল। প্রথম ব্রেক থ্রুটা এনে দিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম।
দ্বিতীয় ব্রেক থ্রু পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি বাংলাদেশের। ১৩১ রানের মাথায় ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটায় টাইগাররা। এবার উইকেট নেন মেহেদী হাসান।
এই ১৩১ রানের মাথায় বসিয়ে রেখে স্বাগতিকদের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন পেসার খালেদ আহমেদ। এরপর আর এক রান যোগ হতে খালেদের ঝুলিতে আরও ১ উইকেট। ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন দুই ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল। দু’জন মিলে ১০০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন।
এরপরই স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের ওপর প্রথম আঘাতটা হানেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। ২৬তম ওভারে তার শেষ বলটি ছিল শট পিচ করা। সঙ্গে এক্সট্রা বাউন্স হয়েছিল তাতে।
ক্যাম্পবেল চেষ্টা করেছিলেন পুল করতে। কিন্তু গতি আর এক্সট্রা বাউন্সের কাছে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। বল গ্লাভসে লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের গ্লাভসে। ৭৯ বল খেলে ৪৫ রান করে আউট হন ক্যারিবীয় ওপেনার।
এরপর মেহেদী হাসানের আর্ম বলটাকে ফ্রন্ট ফুটে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু বলটাকে ঠিকমত পড়তে পারেননি। বলটা হালকা বাঁক খেয়ে গিয়ে সোজা আঘাত হানে তার স্ট্যাম্পে।
আউট হওয়ার আগে অবশ্য হাফসেঞ্চুরি করেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। ১০৭ বলে ৫১ রান করে মেহেদী’র বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলেন ব্র্যাথওয়েট।
এরপর এক ওভারে জোড়া চমক খালেদ আহমেদের। ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি ছিল অফ স্ট্যাম্পের ওপর শট লেন্থের ডেলিভারির। স্টিয়ার করতে চেয়েছিলেন রেমন রেইফার। কিন্তু বল ভেতরের কানায় লেগে গিয়ে আঘাত হানে সোজা স্ট্যাম্পে। ২২ রান করে আউট হলেন রেইফার।
একই ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন এনক্রুমা বোনারও। কোনো রানই করতে পারেননি তিনি। খালেদের গতিময় বলটি পা দিয়েও ঠেকাতে পারেননি বোনার। ফলে ১৩২ রান তুলতে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। তবে শেষ পর্যন্ত মায়ার্স সেই বিপদ কাটিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) – ২৩৪/১০ (৬৪.২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) – ৩৪০/৫ (১০৬.০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জশুয়া দা সিলভা (উইকেট রক্ষক), জন ক্যাম্পবেল, এনক্রুমা বোনার, রেমন রেইফার, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, কাইল মায়ার্স, আলজারি জোসেফ, জেডেন সিলস, কেমার রোচ এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ। |
বাংলাদেশ | সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেট রক্ষক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, এনামুল হক, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। |