ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ (দ্বিতীয় টেস্ট – ১ম দিন)
লিটন দাসের হাফ সেঞ্চুরি আর টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম ইনিংসে সফরকারী বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ২৩৪ রান। ৬৪.২ ওভার খেলে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। পরে নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ১৬ ওভারে কোন উইকেটে না হারিয়ে ৬৭ রান তুলে নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে তাদের রানরেট ৪.১৮।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে মাহমুদুল হাসান জয়ের (১০) উইকেট হারালেও হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। কিন্তু মাত্র ৪ রানের জন্য ক্যারিয়ারে ৩২তম ফিফটিটি মিস করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
ইনিংসের ২৩তম ওভারে আলজারি জোসেফের বলে টাইমিং গড়বড় করে কভার পয়েন্টে ক্যাচ হয়েছেন তামিম। ৬৭ বলে গড়া তার ৪৬ রানের ইনিংসে ছিল ৯টি বাউন্ডারির মার। ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে প্রথম দিনের লাঞ্চ বিরতিতে যায় সফরকারীরা।
বিরতি থেকে ফিরে এসে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং এনামুল হক। কিন্তু ৭ বছরেরও বেশি সময় পর দলে ফিরে এসে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন না এনামুল। দলীয় ১০৫ রানে পরপর আউট হয়ে যান এনামুল এবং শান্ত।
অভিষিক্ত বোলার অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে প্রথমে এনামুল এলবিডব্লিউর শিকার হন। তার পরের ওভারে কাইল মায়ার্সের বলে এলবিডব্লিউ হন শান্ত। এনামুল ৩৩ বল খেলে করেছেন ২৩ রান এবং শান্ত ৭৩ বলে ২৬ রান করেন।
শান্ত ও এনামুলের পর জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান এবং লিটন দাস। কিন্তু এই জুটিও বেশিদুর এগুতে পারেননি। মাত্র ২০ রানের জুটি গড়ার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেন জেডেন সিলস। মাত্র ৮ রান করে সিলসের বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
৬ নম্বর ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন উইকেট রক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান। আলজারি জোসেফের লেগ স্ট্যাম্পের ওপর উঠে আসা একটি বাউন্সারকে ঠিকমত সামলাতে পারেননি তিনি। ঘাড়ের ওপর থাকা বলটাকে শেষ মুহূর্তে গ্লাভসে লাগিয়ে তিনি উইকেট রক্ষক জশুয়া দা সিলভা’র ক্যাচে পরিণত হন। ৭ রান করে ফিরে যান নুরুল।
মেহেদী হাসান স্বচ্ছন্দেই খেলছিলেন লিটনের সঙ্গে। কিন্তু তার দুর্ভাগ্য। কাইল মায়ার্সের বলে বদলি ফিল্ডার থমাসের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তিনি। পয়েন্ট দাঁড়িয়ে তিনি ঝাঁপ দেন লং থার্ডম্যানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচটি ধরেন। মাত্র ৯ রান করে আউট হন মেহেদী।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও লিটন এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেছেন তিনি। সেই সাথে ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। নবম উইকেটে এবাদত হোসেন এবং শরিফুল ইসলাম মিলে দারুণ জুটি গড়েন। মাত্র ১৭ বল খেলে ২৬ রান করে আউট হন শরিফুল। অপরদিকে ২১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন এবাদত হোসেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডন সিলস এবং আলজারি জোসেফ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া অ্যান্ডারসন ফিলিপ এবং কাইল মায়ার্স দুটি করে উইকেট তুলে নেন।
২৩৪ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো অবস্থানে আছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের পাঁচ বোলার বল করে তাদের একটি উইকেটেরও পতন ঘটাতে পারেননি। ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৫৫ বলে ৩৩ এবং জন ক্যাম্পবেল ৪১ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত আছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ এর স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) – ২৩৪/১০ (৬৪.২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১ম ইনিংস) – ৬৭/০ (১৬.০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জশুয়া দা সিলভা (উইকেট রক্ষক), জন ক্যাম্পবেল, এনক্রুমা বোনার, রেমন রেইফার, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, কাইল মায়ার্স, আলজারি জোসেফ, জেডেন সিলস, কেমার রোচ এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ। |
বাংলাদেশ | সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান (উইকেট রক্ষক), তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, এনামুল হক, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। |