চলতি বছরেই ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একদিনের বিশ্বকাপ। এখন থেকেই তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিচ্ছে দলগুলো। বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে আলোচনা, কে এগিয়ে আছে শিরোপা জেতার লড়াইয়ে। অনেকেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বলে ভারতকে এগিয়ে রাখছেন। তবে আসন্ন এই বিশ্বকাপে উপমহাদেশের কোনো দেশকে ফেভারিট মানছেন না শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা।
উপমহাদেশে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা এসেছে গত ২০১১ সালে ভারতের হাত ধরে। এরপর আর কোনো ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা আনতে পারেনি উপমহাদেশের কোনো দেশ। এরপর হয়ে গেছে দু – দুটি বিশ্বকাপ। কিন্তু সেখানে ফাইনালেও উঠতে পারেনি এশিয়ার কোনো দেশ। তাই আসন্ন বিশ্বকাপেও ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশকেও ফেভারিট মানছেন না সাঙ্গাকারা। ঘরের মাঠে খেলা হবে বলে ভারত ই বিশ্বকাপ জিতবে এমনটাও মনে করেননা তিনি। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে সাঙ্গাকারা বলেন, ” আমার মনে হয়, ২০১১ সালের আগে উপমহাদেশের
পিচ কন্ডিশন একটা বড় ফ্যাক্টর ছিলো। কিন্তু এরপর ক্রিকেট অনেকটাই বদলে গেছে। আগে এশিয়ার কন্ডিশন উপমহাদেশের জন্য সহায়ক ছিল। আগে এত ক্রিকেট হতোনা কিন্ত বর্তমানে যে পরিমান ক্রিকেট খেলা হচ্ছে তাতে এশিয়ার বাইরের দেশগুলোও আমাদের পিচ সম্পর্কে ভালো ধারনা পেয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা অনেক ভালোভাবে স্পিন বোলিং খেলতে শিখেছেন। এমনকি উপমহাদেশের দলের বিপক্ষেও তারা ভালো করছেন। “
আগের তুলনায় ক্রিকেটে এখন অনেক বৈচিত্র্যময় বলেও মনে করেন সাঙ্গাকারা। আর এর জন্য আইপিএল বড় ভূমিকা পালন করছে বলেও মনে করেন তিনি। সাঙ্গাকারা আরো বলেন, ” আপনি এখন অনেক রিভার্স সুইপ, প্যাডেল শট এবং সুইপ দেখতে পাচ্ছেন। আগে কিন্ত এত শট খেলতনা ক্রিকেটাররা। এসব শট খেলতে দারুণভাবে পায়ের ব্যবহার করা হচ্ছে। খেলোয়াড়রা এখন আগের তুলনায় আক্রমনাত্মক ক্রিকেট বেশি খেলছে। আমার মনে হয়, উপমহাদেশে আমরা ক্রিকেটকে যেভাবে দেখতাম, সেখানে অনেক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এশিয়ার বাইরের খেলোয়াড়রা আমাদের পিচ সম্পর্কে ধারনা পেয়ে যাচ্ছে, কারন তারা নিয়মিত আইপিএল খেলছে। আইপিএলও পিচ বুঝতে অনেক সহায়তা করেছে। “
উল্লেখ্য, গত দুই বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড। ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৯ সালে আবার নিউজিল্যান্ডকেই হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতে ইংলিশরা। এরপর সর্বশেষ টি – টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাও জিতে নেয় ইংল্যান্ড। আর ইংল্যান্ডই প্রথম দল যারা একসঙ্গে দুই বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে। এছাড়া বর্তমানে টেস্ট ক্রিকেটেও বেশ এগিয়ে আছে ইংলিশরা। দেখা যাক এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ এশিয়ার ঘরেই আসে নাকি সাঙ্গাকারার ভবিষ্যৎ বানী মেনে এশিয়ার বাইরের কোনও দেশের হাতেই ফের বিশ্বকাপের মুকুট ওঠে।