আইপিএল ২০২২ – ম্যাচ ৭ (এলএসজি বনাম সিএসকে)
বৃহস্পতিবার আইপিএল এর ১৫তম সংস্করণের ৭ম ম্যাচে মুম্বাইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) বিপক্ষে ৩ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের এক দুর্দান্ত জয় পেয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)। টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানের বড় স্কোর সংগ্রহ করে সিএসকে।
সিএসকে এর পক্ষে ওপেনার রবিন উথাপ্পা ৮ চার ও ১ ছক্কায়, ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া শিবম দুবে ৩০ বলে ৪৯ এবং মঈন আলী ২২ বলে ৩৫ রান করে সাজঘরে ফিরেন। শেষ দিকে এমএস ধোনি ৬ বলে ১৬ রানের ঝড়ো ইনিং খেলে অপরাজিত থাকেন। এলএসজি এর হয়ে রবি বিষ্ণয়, আবেশ খান এবং অ্যান্ড্রু টাই ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
২১১ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এভিন লুইসের বিধ্বংসী ব্যাটিং এর সৌজন্যে ১৯.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় এলএসজি। ৬ চার ও ৩ ছক্কায়, ২৩ বলে অপরাজিত ৫৫ রান করেন লুইস। এছাড়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক (৪৫ বলে ৬১) এবং অধিনায়ক কেএল রাহুল (২৬ বলে ৪০) দুটি কার্যকারী ইনিংস খেলেন। এছড়া তরুণ ব্যাটার আয়ুশ বাদোনি ৯ বলে ১৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। সিএসকে এর হয়ে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস সর্বাধিক ২টি উইকেট তুলে নেন।
এই ম্যাচে জয়ী হয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৬ষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। অপরদিকে পরাজিত হয়ে চেন্নাই সুপার কিংস এখন পয়েন্ট টেবিলের ৮ম স্থানে অবস্থান করছে।
স্কোরবোর্ড
চেন্নাই সুপার কিংস – ২১০/৭ (২০.০)
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস – ২১১/৪ (১৯.৩)
ফলাফল – লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ৬ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – এভিন লুইস
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম বাংলাদেশ (প্রথম টেস্ট – ১ম দিন)
ডারবান টেস্টের প্রথম দিনে শেষে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৭৬.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান। টেম্বা বাভুমা ৫৩ রানে এবং কাইল ভেরেইনা ২৭ রান করে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান, খালেদ আহমেদ এবং এবাদত হোসেন ১টি করে উইকেট তুলে নেন।
কিংসমিডে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে দারুণ সূচনা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার ডিন এলগার এবং সারেল এরউয়ি। এই দুই ব্যাটার ওপেনিং জুটিতেই ১১৩ রান তুলে নেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর পরপর দুই ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখায় সফরকারীরা। ১১ বাউন্ডারিতে, ১০১ বলে ৬৭ রান করে খালেদের শিকার হন অধিনায়ক এলগার।
প্রোটিয়া অধিনায়কের বিদায়ের পর স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪ রান যোগ হতেই এরউয়িকে (৪১) বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে পাঠান মেহেদী। এরপর দলের হাল ধরেন কিগান পিটারসেন এবং বাভুমা। সেই মেহেদীর সৌজন্যেই ভাঙে তাদের প্রতিরোধ। তবে বোলার মেহেদী নন, ফিল্ডার মেহেদী দুর্দান্ত থ্রোয়ে ফেরান পিটারসেনকে (১৯)। নতুন ব্যাটার অভিষিক্ত রায়ান রিকেলটনকে ২১ রানে সাজঘরে ফেরান এবাদত।
এরপর বাভুমা এবং ভেরেইনা ৫ম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৫৩ রানের জুটি গড়ে তোলেন। কিন্তু দিনের খেলা প্রায় ১৩ ওভার বাকি থাকতে আলোর স্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে দিনের শুরুতে সাইটস্ক্রিন সমস্যার কারণে খেলা প্রায় ৩৩ মিনিট দেরি করে শুরু হয়েছিল । শেষ পর্যন্ত ৭৬.৫ ওভারেই প্রথম দিনের খেলা শেষ করে দিতে বাধ্য হন আম্পায়াররা।
স্কোরবোর্ড
দক্ষিণ আফ্রিকা (১ম ইনিংস) – ২৩৩/৪ (৭৬.৫)
পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া (২য় ওয়ানডে)
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ইমাম উল হক ও বাবর আজমের জোড়া সেঞ্চুরিতে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয় উইকেটের এক অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান। ৩৪৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এক ওভার বাকি থাকতেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বেন ম্যাকডারমটের সেঞ্চুরি এবং ট্রাভিস হেড ও মারনাস লাবুশেনদের হাফ-সেঞ্চুরিতে অসিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩৪৮ রান। দলীয় ১ রানেই শাহিন আফ্রিদির বলে ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ১৬২ রানের জুটি গড়েন হেড ও ম্যাকডরমট। হেড ৬ চার ৫ ছক্কায়, ৭০ বলে ৮৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে গেলেও সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন ম্যাকডারমট।
১০ চার ও ৪ ছক্কায়, ১০৮ বলে ১০৪ রান করেন ম্যাকডারমট। শেষ দিকে লাবুশেন ৪৯ বলে ৫৯ রান এবং মার্কাস স্টয়নিস ৩৩ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে বড় সংগ্রহ এনে দেন। পাকিস্তানের পেস তারকা শাহিন আফ্রিদি সর্বোচ্চ ৪টি এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ২টি উইকেট শিকার করেন।
৩৪৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক। উদ্বোধনী জুটিতে ১৮.৫ ওভারে দু‘জন ১১৮ রান তুলে নেন। ৬৪ বলে ৬৭ রান করে ফখর ফিরে গেলে ইমামের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক বাবর আজম। দেখে শুনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দুইজনই তুলে নেন সেঞ্চুরি।
দলীয় ২২৯ রানের মাথায় অ্যাডাম জাম্পার শিকার হয়ে ৯৭ বলে ১০৬ রান (৬ চার ও ৩ ছক্কা) করে সাজঘরে ফিরেন ইমাম। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে ৮০ রানের জুটি গড়েন বাবর। পাকিস্তানের সংগ্রহ যখন ৩০৯ তখন নাথান এলিসের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান বাবর। ১১ চার ও ১ ছক্কায়, ৮৩ বলে সর্বোচ্চ ১১৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। শেষে রিজওয়ানের ২৩ এবং খুশদিল শাহ এর অপরাজিত ২৭ রান এক ওভার বাকি থাকতেই পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করে। অসিদের পক্ষে জাম্পা সর্বাধিক ২টি উইকেট তুলে নেন।
এই ম্যাচে জয়ী হয়ে সিরিজে এখন ১-১ এ সমতায় ফিরল পাকিস্তান। আগামী ২ এপ্রিল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া – ৩৪৮/৮ (৫০.০)
পাকিস্তান – ৩৫২/৪ (৪৯.০)
ফলাফল – পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – বাবর আজম