পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি বদল হয়েছে বেশকিছু দিন আগেই। কেবলমাত্র এই একটি জায়গাতেই বদল নয়, পাকিস্তানের ক্রিকেটে এখন যেন পালা বদলের জোয়ার চলছে। রমিজ রাজা বরখাস্ত হওয়ার পরে যখন নাজাম শেঠি সভাপতির চেয়ারে বসলেন, তখন থেকেই যেন বদলে যেতে শুরু করেছে সবকিছু। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পিসিবি কর্তৃক সিদ্ধান্ত এসেছে, পাকিস্তান জুনিয়র লিগ (পিজেএল) বন্ধ করে দেওয়ার।
নাজাম শেঠি দায়িত্ব নেওয়ার পর বোর্ডের দ্বিতীয় সভায় এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়। পিসিবি জানিয়েছে, পিসিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পিজেএল আর চলবে না। তার বদলে ক্রিকেটারদের বেড়ে ওঠার মঞ্চ হিসেবে তৈরি করে দেওয়া হবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের জন্য বিদেশ সফর নিশ্চিত করা হবে। বেশি বেশি সিরিজ খেলার ব্যবস্থা করা হবে।
অবশ্য উদীয়মান ক্রিকেটারদের গড়ে তুলতে আরো একটি সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পাকিস্তান। সেটা হবে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) জুনিয়রদের খেলা নিশ্চিত করা। পিসিবি বলছে, পিএসএলের প্রতিটি ম্যাচের একাদশে কমপক্ষে একজন করে অনুর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার রাখতে হবে। এ বিষয়ে আমরা ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে পিজেএল বন্ধ করে দিয়ে লাভ হবে নাকি ক্ষতি হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে পাকিস্তানের ক্রিকেটে। তবে আপাতদৃষ্টিতে বিচার করলে দেখা যায়, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের এই লিগের প্রথম আসর দারুণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলেছেন বিদেশি তরুণরাও। একইসাথে উঠতি বয়সেই বিশ্বের বড় বড় কোচের সান্নিধ্য পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। যা বরাবরি ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
রমিজের উদ্ভাবনী বুদ্ধি থেকেই সৃষ্ট পিজেএল বেশ প্রশংসাও কুড়িয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বে এমন ফ্রাঞ্চাইজি লিগ, এর আগে কোনো দেশ চালু করতে পারেনি। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন পিজিএল কয়েকটি মৌসুম পার করে যদি সফলতার মুখ দেখত, তাহলে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হতে পারতো পাকিস্তান। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ শেঠির পিসিবি। তাই তো ভিন্ন পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। অনেকেই মনে করছেন রমিজ রাজার কোন সিদ্ধান্ত যেন দেশের ক্রিকেটে প্রভাব ফেলতে না পারে সেই জন্যই পিজেএল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাজাম শেঠির নেতৃত্বাধীন বোর্ড।