ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান (ম্যাচ ১৪) – হাইলাইটস
শনিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৪ তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তান। ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ডের বোলারদের তোপে পড়ে কোনোমতে একটি লক্ষ্য দাড় করায় আফগানিস্তান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় আফগানিস্তানের। সেই সাথে ইংল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের খেতাব জিতে নেন স্যাম কুরান।
টি-টোয়েন্টিতে তাদের প্রতিভার কোনো অভাব নেই; কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের সামনে স্রেফ আত্মসমর্পন করতে হয়েছে আফগানিস্তানকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১১২ রানে অলআউট হয়ে গেছে আফগানরা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিধ্বংসী ব্যাটার হযরতউল্লাহ জাজাইকে হারায় আফগানিস্তান। ১৭ বলে ৭ রান করে বিদায় নেন তিনি। আফগানদের আরেক মারকুটে ব্যাটার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৯ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন।
ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামা ইব্রাহিম জাদরান এবং উসমান ঘানি চেষ্টা করে ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে। ইব্রাহিম জাদরান ৩২ বলে ৩২ রান এবং উসমান গনি ৩০ বলে ৩০ রান করে আউট। এরপরের ব্যাটাররা ছিলেন শুধু আসা-যাওয়ার মিছিলে।
নাজিবুল্লাহ জাদরান (১৩), মোহাম্মদ নবি (৩), আজমতউল্লাহ ওমরজাই (৮), রশিদ খান (০), মুজিব-উর রহমান (০) এবং ফজল হক ফারুকি (০) ব্যর্থতার পরিচয় দিলে ১১২ রানেই অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের পক্ষে রীতিমত বিধ্বংসী বোলিং করলেন তরুণ পেসার স্যাম কুরান। ৩.৪ ওভার (২২ বল) বোলিং করে মাত্র ১০ রান দিয়ে একাই ৫ উইকেট নেন কুরান। তার এই বিধ্বংসী বোলিংয়েই মূলত শেষ হয়ে যায় আফগানদের ইনিংস।
শুধু কুরানই নয়, বোলিংয়ে যেন কৃপণ হওয়ার প্রতিযোগিতা লেগেছিল ইংলিশ বোলারদের মধ্যে। কে কত কম রান দিতে পারেন, সে বিষয়ে। বেন স্টোকস ৪ ওভারে দিলেন কেবল ১৯ রান। উইকেট নিয়েছেন ২টি। মার্ক উড ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৩ রান। উইকেট নিয়েছেন ২টি। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন ক্রিস ওকস। আদিল রশিদ তুলনামূলক খরুচে ছিলেন। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩২ রান।
লক্ষ্য মাত্র ১১৩ রানের। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ঘাম ঝরাতে হলো টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দল ইংল্যান্ডকে। ১১৩ রান করতে জস বাটলারের দলকে খেলতে হয়েছে ১৮.১ ওভার। উইকেট হারাতে হয়েছে ৫টি। তবুও, পার্থ স্টেডিয়ামে ১১ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের ব্যবধানে আফগানিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে ইংল্যান্ড।
এবারের বিশ্বকাপে যে দলগুলোকে বিধ্বংসী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ইংল্যান্ড একটি। অথচ, আফগানিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে মাত্র ১১৩ রান তুলতে গিয়ে ইংলিশ কোনো ব্যাটারকেই বড় ইনিংস খেলতে দেখা যায়নি। সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন লিয়াম লিভিংস্টোন।
২১ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৯ রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি। ১০ বলে ৮ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মইন আলি।
দুই ওপেনার জস বাটলার এবং অ্যালেক্স হেলস সূচনাটা মোটামুটি ভালোই করেছিলেন। ৫ ওভারে ৩৬ রানের জুটি গড়েন তারা। এ সময় ফজল হক ফারুকির বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। অ্যালেক্স হেলস ২০ বলে করেন ১৯ রান। এছাড়া ডেভিড মালান করেন ১৮ রান।
আফগান বোলারদের মধ্যে ফজল হক ফারুকি, মুজিব-উর রহমান, রশিদ খান, ফরিদ আহমেদ এবং মোহাম্মদ নবি নেন ১ টি করে উইকেট।
ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান এর স্কোরবোর্ড
ইংল্যান্ড – ১১৩/৫ (১৮.১)
আফগানিস্তান – ১১২/১০ (১৯.৪)
ফলাফল – ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – স্যাম কুরান
ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের একাদশ
ইংল্যান্ড | জস বাটলার (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), ডেভিড মালান, অ্যালেক্স হেলস, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলী, ক্রিস ওকস, স্যাম কুরান, মার্ক উড, আদিল রশিদ |
আফগানিস্তান | মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), ইব্রাহিম জাদরান, হযরতুল্লাহ জাজাই, নাজিবুল্লাহ জাদরান, উসমান গনি, রশিদ খান, আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকী, ফরিদ আহমদ মালিক |