ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ২০২২ এর পর্দা আগামীকাল (২৬ মার্চ) উঠতে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ ট্রান্সমিশন এবং খেলোয়াড়দের বায়ো-বাবলের কথা বিবেচনা করে করে টুর্নামেন্টটি একটি একক হাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। যেখানে মহারাষ্ট্র রাজ্যকে একক হাব হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
আইপিএলের ১৫তম সংস্করণে মোট ৭০টি লিগ ম্যাচ এবং ৪টি প্লে অফ ম্যাচ থাকবে, যা ৬৫ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে মুম্বাইয়ের তিনটি এবং পুনের একটি ভেন্যু সহ মোট চারটি ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম ও ডিওয়াই প্যাটেল স্টেডিয়ামে ২০টি করে ম্যাচ হোস্ট করবে এবং মুম্বাইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়াম ও পুনের এমসিএ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ১৫টি করে ম্যাচ খেলা হবে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) মুখোমুখি হবে।
আইপিএল ২০২২ এ ১০টি দল অংশ নেওয়ায়, মৌসুমটি আরও বড় এবং ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টুর্নামেন্টটি শুরু থেকেই উত্তাপ ছড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে দর্শকরা প্রথম সপ্তাহেই কিছু রোমাঞ্চকর ম্যাচের সাক্ষী হতে পারে।
আইপিএল ২০২২ এর প্রথম সপ্তাহে ৪টি ম্যাচের দিকে নজর দেওয়া যাক যেগুলোর জন্য ক্রিকেট ভক্তরা অপেক্ষা করে রয়েছে।
চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)
ম্যাচ ১, ২৬ মার্চ, ২০:০০ (জিএমটি+৬)
গত বছরের ফাইনালের পর সিএসকে এবং কেকেআর, ২৬শে মার্চ আইপিএল ২০২২ এর প্রথম ম্যাচের মধ্য দিয়ে তাদের এইবারের আসর শুরু করতে যাচ্ছে। গত বছর ফাইনালে একটি হতাশাজনক হারের পর, কেকেআর এই আসরে চারবারের চ্যাম্পিয়নদের পরাজিত করে একটি দুর্দান্ত শুরু করার চেষ্টা করবে।
সামগ্রিক হেড-টু-হেড রেকর্ডে, সিএসকে ২৬ ম্যাচে ১৭টি এবং কেকেআর ৯টি জয় পেয়েছে। দ্য ম্যান ইন ইয়েলোদের বিপক্ষে কেকেআরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়টি ২০১২ সালের ফাইনালে পেয়েছিল যখন গৌতম গম্ভীর তার দলকে তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা জিতেছিলেন।
শেষবার যখন দুই দল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল, তখন আন্দ্রে রাসেল কিছু মারকুটে ব্যাটিং প্রদর্শন করেছিল। শনিবার সন্ধ্যায় যখন এই দুই দল মাঠে নামবে তখন নিশ্চিত করুন যেন আপনার পপকর্ন প্রস্তুত আছে!
দিল্লি ক্যাপিটালস (ডিসি) বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ানস (এমআই)
ম্যাচ ২, ২৭ মার্চ, ১৬:০০ (জিএমটি+৬)
আইপিএল ২০২০ আসরের ফাইনালিস্ট, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস এবং দিল্লি ক্যাপিটালস সাম্প্রতিক সময়ের পরিচিত প্রতিপক্ষ। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস সেই ফাইনালে জয়ী হয়েছিল, যেখানে ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত স্পেল (৩/৩০) ম্যাচ জয়ের নেতৃত্বে দিয়েছিল যা দিল্লি ক্যাপিটালসের একটি বিপজ্জনক টপ-অর্ডারকে ডুবিয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। রোহিত শর্মার ৬৮ রানের ইনিংস ইন্ডিয়ানসকে তাড়া করার পথ দেখিয়েছিল এবং তার ফলে তাঁরা তাদের পঞ্চম আইপিএল শিরোপা জিতেছিল।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস থেকে দিল্লি ক্যাপিটালস-এ পুনঃব্র্যান্ডিং করেও ভারতের রাজধানী শহরের প্রতিনিধিত্বকারী দলের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি কারণ তারা এখনও একটি শিরোপা জিততে পারেনি, যদিও লিগে তাদের কিছু অসামান্য পারফরম্যান্স রয়েছে।
এই দুই দলের মধ্যে প্রচুর ক্রিকেট অ্যাকশন অবশ্যই দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন, প্রশ্ন উঠেছে: ইন্ডিয়ানস কি তাদের ধীরগতির শুরুর ধারা পরিবর্তন করবে এবং জয়ের সাথে এগিয়ে যেতে শুরু করবে? নাকি, ঋষভ পন্তের ক্যাপিটালস টুর্নামেন্টে আক্রমণাত্মক শুরু দেবে? এই ম্যাচটি রবিবার বিকেলে উপভোগ করার জন্য একটি দুর্দান্ত রোমাঞ্চ হতে চলেছে।
পাঞ্জাব কিংস (পিবিকেএস) বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)
ম্যাচ ৩, ২৭ মার্চ, ২০:০০ (জিএমটি+৬)
আইপিএল-এ এখনও পর্যন্ত আরসিবি এবং পিবিকেএস কিছুটা একই রকম ভাগ্য বহন করেছে। উভয় দলই বেশ কয়েকটি হার্টব্রেক এবং দুর্ভাগ্যের প্রাপ্তির প্রান্তে রয়েছে।
যদিও আরসিবি নতুন আইপিএল অধিনায়কের সাথে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই বছরের টুর্নামেন্টের আগে পিবিকেএস এর স্কোয়াডেও বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। হেড টু হেডের পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে, ২৮টি ম্যাচের মধ্যে কিংস ১৫টি এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ১৩টিতে জয় পেয়েছে।
উভয় দলের মধ্যে সবসময়ই অনির্দেশ্যতার অনুভূতি রয়েছে। তাদের অসঙ্গতিগুলো টুর্নামেন্টের ১৫তম সংস্করণ জুড়ে দেখা যাবে কারণ তারা তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপার জন্য অপেক্ষা করছে।
গুজরাট টাইটানস (জিটি) বনাম লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (এলএসজি)
ম্যাচ ৪, ২৮ মার্চ, ২০:০০ (জিএমটি+৬)
বিসিসিআই যখন নিশ্চিত করেছে যে আইপিএল ২০২২- এ দুটি নতুন দল থাকবে তখন থেকেই টুর্নামেন্টে উত্তেজনার গুঞ্জন বৃদ্ধি পেয়েছে। টাইটানস এর আগেও গুজরাট লায়ন্স ফ্রাঞ্চাইজি হিসেবে এই জনপ্রিয় লিগের স্বাদ পেয়েছে। তারা এবার টুর্নামেন্টেটি হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে শুরু করতে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সুপার জায়ান্টসও আইপিএলে প্রথমবারের মত মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠেছে। কেএল রাহুলের নেতৃত্বাধীন দলটি তাদের অভিষেক মৌসুমে কিছু সাফল্য নিশ্চিত করতে আশাবাদী।
এই এনকাউন্টারে রশিদ খান, কুইন্টন ডি কক এবং শুভমান গিলের মতো প্রচুর তারকা রয়েছেন। এই ম্যাচের মাধ্যমে, খেলোয়াড়রা তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে একটি নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে এবং একটি দুর্দান্ত লেভেলের উত্তেজনা থাকবে।
টুর্নামেন্টে এই দুটি নতুন দল প্রথম ম্যাচ খেলার সাথে সাথে, ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে একটি উত্তেজনার অনুভূতি হতে থাকবে, কেননা দলগুলো তাদের প্রথম আউটিংয়ে কীভাবে গঠন করে। এই ক্রিকেট যুদ্ধটি একটি মাস্ট ওয়াচ ম্যাচ হবে!