অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড (৩য় ওডিআই) – হাইলাইটস
গতকাল সকালে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজের ৩য় টিতে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। ম্যাচটি ছিল হোয়াইট ওয়াশ থেকে বাঁচার লড়াই। কিন্তু শেষ রক্ষা পেল না নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বিশাল একটি লক্ষ্য দাড় করায় নিউজিল্যান্ডের জন্য। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এক ম্যাচ আগে থেকেই সিরিজ জিতে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং সেই সাথে শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইট ওয়াশ করল নিউজিল্যান্ডকে। অন্যদিকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি হাকিয়ে ম্যাচ সেরার খেতাব ও সিরিজ সেরার খেতাব পেয়েছেন স্টিভেন স্মিথ।
গতকাল কেয়ার্নসে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সিরিজের আগের দুই ম্যাচের মতো এদিনও ব্যর্থ অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার। ডেডিভ ওয়ার্নারের জায়গায় সুযোগ পেয়ে ১০ রানের বেশি করতে পারেননি জস ইংগলিস। ১০ রান করতে ১৬টি বল খেলেছিলেন তিনি। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে টম ল্যাথামের তালুবন্দী হন ইংগলিস। ব্যাট হাতে ওয়ানডে থেকে বিদায়টা রাঙাতে পারেননি অ্যারন ফিঞ্চ। ফিরেছেন মাত্র ৫ রান করেই। নিজের শেষ ওয়ানডেতেও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেননি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টিম সাউদির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক।
তবে অধিনায়কের বিদায়ী ওয়ানডেটা ঠিকই রাঙিয়েছেন সতীর্থরা। ১৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে উদ্ধার করেন স্টিভেন স্মিথ। মারনাস লাবুশেনের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নেন স্মিথ।
এ দুজনের ১৬৯ বলে ১১৮ রানের জুটিতে বড় স্কোরের ভিত পায় স্বাগতিকেরা। কিন্তু ৩৪ তম ওভারে এই জুটি ভাঙ্গেন লকি ফার্গুসন। লাবুশেনকে ক্যাচ আউট করে পাঠান সাজঘরে। ২ চারের সাহায্যে ৭৮ বলে ৫২ রান করেছিলেন তিনি। দলীয় ১৩৪ রানে লাবুশেন ফিরে গেলেও স্মিথ ছিলেন অবিচল। ৪৪তম ওভারে নিজের ১২তম শতকও তুলে নেন স্মিথ। এরপরের ওভারেই মিচেল স্যান্টনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন স্মিথ। ১৩১ বলে ১০৫ রান করেন স্মিথ। তার এই ১০৫ রানের ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও ১টি ছয়।
এরপর ১ ছয়ের সাহায্যে ৮ বলে ১৪ রান করে মাঠ ছাড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে অ্যালেক্স ক্যারি ও ক্যামেরুন গ্রিন অপরাজিত থেকে দলকে দলকে এনে দেন বিশাল পুঁজি। ৪৩ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন ক্যারি। গ্রিন খেলেন ১২ বলে ২৪ রানের ঝোড়ো এক ইনিংস। সাথে মেরেছিলেন ২টি চার ও ২টি ছয়। শেষে ১৪ রান এক্সট্রা সহ ৫টি উইকেট হারিয়ে ২৬৭ রান করে তারা।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন, মিচেল স্যান্টনার।
লক্ষ্য ছিল ২৬৮ রানের। ২৫ রানে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ধবলধোলাই করেই ফিঞ্চকে বিদায়ী উপহার দিয়েছেন স্মিথ-স্টার্করা। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের শুরুটা খারাপ হয়নি। তবে দলীয় ৪৯ রানে ডেভন কনওয়ের (২১) বিদায়ে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার ফিন অ্যালানও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
৩৫ রানে অ্যালান ফেরেন ক্যামেরুন গ্রিনের বলে জস হ্যাজলউডের ক্যাচ হয়ে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে টম ল্যাথাম, ড্যারিল মিচেল ও কেইন উইলিয়ামসনকে হারালে ১২২ রানেই ৫ উইকেট চলে যায় কিউইদের।
জেমস নিশামকে সঙ্গে নিয়ে এরপর ধাক্কা সামাল দেন গ্লেন ফিলিপস। ৩৬ রান করে নিশাম যখন ফেরেন, দলের রান তখন ১৭৩। সেখনা থেকে স্যান্টনারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ফিলিপস।
কিন্তু মিচেল স্টার্কের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিলিপসকে (৪৭) সাজঘরে ফেরান অ্যাবট। এরপর আসলে নিউজিল্যান্ডের হারের আনুষ্ঠানিকতাই বাকি ছিল শুধু। ২৪২ রানেই থেমে যায় অতিথিরা।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ উইকেট নেন স্টার্ক। ২টি করে উইকেট নেন ক্যামেরন গ্রিন ও শন অ্যাবট এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজেলউড।
অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড এর স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া – ২৬৭/৫ (৫০)
নিউজিল্যান্ড – ২৪২/১০ (৪৯.৫)
ফলাফল – অস্ট্রেলিয়া ২৫ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – স্টিভেন স্মিথ
প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ – স্টিভেন স্মিথ
অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচের একাদশ
অস্ট্রেলিয়া | অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যালেক্স কেরি (উইকেটরক্ষক), স্টিভেন স্মিথ, জশ ইঙ্গলিস, ক্যামেরন গ্রিন, মারনাস লাবুসচেন, শন অ্যাবট, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যাডাম জাম্পা, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড |
নিউজিল্যান্ড | কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, গ্লেন ফিলিপস, ড্যারিল মিচেল, মিচেল স্যান্টনার, জেমস নিশাম, লকি ফার্গুসন, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট |