অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান (ম্যাচ ৩৮) – হাইলাইটস
ম্যাচের শেষদিকে রশিদ খানের ব্যাটিং তাণ্ডবে প্রায় হারতেই বসেছিল অস্ট্রেলিয়া। রুদ্ধশ্বাস এ ম্যাচে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ৪ রানের জয় তুলে পেয়েছে অসিরা। এতে ৭ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসলেও সেমির পথে তাদের সামনে এখন বড় বাধা ইংল্যান্ড।
অ্যাডিলেডে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) অসিদের দেয়া ১৬৯ রান তাড়া করতে নেমে আফগানদের ইনিংস থামে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানে। রশিদ খান ২৩ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসটি ৩ চার ও ৪ ছক্কার মারে সাজানো ছিল। অসিদের পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পা। এছাড়া কেন রিচার্ডসন ১টি উইকেট তুলে নেন।
চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে উসমান গণির উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভালোই জবাব দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। গুরবাজ ২ চার ও ২ ছক্কার মারে ১৭ বলে ৩০ রান করে আউট হন।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে ৫৯ রান এনে দেন ইব্রাহিম ও গুলবাদিন নাইব। গুলবাদিন রান আউটের শিকার না হলে, অসিরা বেশ বিপদেই পড়তো। ৩ চার ও ২ ছক্কায়, ২৩ বলে ৩৯ রান করেন এ ব্যাটার। ইনিংসের ১৪তম ওভারে এসে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের দখলে নিয়ে নেন অ্যাডাম জাম্পা। সাজঘরে ফেরান সেট ব্যাটার ইব্রাহিমকে। তিনি ২৬ বলে ৩৩ রান করেন।
এক বল বিরতি দিয়ে ক্রিজে নামা নাজিবউল্লাহ জাদরানকেও ক্যাচে পরিণত করেন জাম্পা। পরের ওভারে এসে মোহাম্মদ নবীকে (১) সাজঘরে ফেরান জশ হ্যাজলউড। মাত্র ৯ বলের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় আফগানরা। শেষদিকে অবশ্য বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে অসি শিবিরে আতঙ্ক ছড়ান রশিদ। ১৮তম ওভারে বল করতে আসা রিচার্ডসনকে পরপর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে আফগানদের জয়ের সম্ভাবনা জাগান এ অলরাউন্ডার। পরবর্তী ওভারেও হ্যাজেলউডের বলেও একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি।
শেষ ওভারে মার্কাস স্টয়নিসকে ২ বাউন্ডারির পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকালেও দলকে জেতাতে পারেননি রশিদ। ফলে জয় থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতে আফগানদের ইনিংস থেমে যায়। তাকে সঙ্গ দেয়ার মতো একজন ভালো ব্যাটার থাকলে স্বাগতিকদের হারাতে পারত আফগানরা।
এর আগে অ্যাডিলেডে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করে অস্ট্রেলিয়া। দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে ঝড় তুলে ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি হাঁকান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৬ চার ও ২ ছক্কায়, ৩২ বলে ৫৪ রান করে তিনি অপরাজিত থাকেন। এছাড়া ৩০ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন মিচেল মার্শ।
আফগান বোলারদের মধ্যে নবীন-উল-হক ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন। আরেক পেসার ফজলহক ফারুকী ২৯ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেন মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান।
এ দিকে এ জয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠে আসলেও সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। সমান পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থাকায় শেষ চার নিশ্চিত নিউজিল্যান্ডের। আর ইংল্যান্ড শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলে সমান ৭ পয়েন্ট নিয়ে অজিদের তুলনায় রান রেটে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ-১ থেকে পৌঁছে যাবে সেমি ফাইনালে। এ মুহূর্তে লঙ্কানদের জয় ছাড়া আর কোনো কিছু প্রার্থনা করার নেই স্বাগতিকদের।
অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান এর স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া – ১৬৮/৮ (২০.০)
আফগানিস্তান – ১৬৪/৭ (২০.০)
ফলাফল – অস্ট্রেলিয়া ৪ রানে জয়ী
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ – গ্লেন ম্যাক্সওয়েল
অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের একাদশ
অস্ট্রেলিয়া | ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক ও উইকেট রক্ষক), ডেভিড ওয়ার্নার, ক্যামেরন গ্রিন, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, প্যাট কামিন্স, অ্যাডাম জাম্পা, কেন রিচার্ডসন এবং জশ হ্যাজলউড। |
আফগানিস্তান | মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেট রক্ষক), ইব্রাহিম জাদরান, উসমান গনি, গুলবাদিন নায়েব, নাজিবউল্লাহ জাদরান, রশিদ খান, দারবিশ রাসুলি, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকী, এবং নবীন-উল-হক। |